আরএসএসকে ওয়াকওভার নয়, দেবস্থান পরিচালন কমিটিতে ধর্মনিরপেক্ষ প্রতিনিধি নিশ্চিত করবে সিপিএম
আরএসএসকে আর ওয়াকওভার দেবে না সিপিএম। তাই মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদোয়ারা সহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ধর্মনিরপেক্ষ প্রতিনিধি নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই দল। এতকাল ধর্মীয় উৎসবে বিপুলসংখ্যক মার্ক্সীয় বই-পত্রপত্রিকার স্টল দিয়েছে সিপিএম। কিন্তু সেই উৎসবে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ এই দলে এক
দ্য কোয়ারি ডেস্ক : ছুৎমার্গিতা ছেড়ে বের হল সিপিএম।হিন্দুত্ববাদী শক্তির দেশ জুড়ে উত্থানে কোনঠাসা এই বামশক্তি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও ঢুকতে চায় এখন।
আরএসএসকে আর ওয়াকওভার দেবে না সিপিএম। তাই মন্দির, মসজিদ, গির্জা, গুরুদোয়ারা সহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ধর্মনিরপেক্ষ প্রতিনিধি নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই দল। এতকাল ধর্মীয় উৎসবে বিপুলসংখ্যক মার্ক্সীয় বই-পত্রপত্রিকার স্টল দিয়েছে সিপিএম।
কিন্তু সেই উৎসবে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ এই দলে একপ্রকার নিষিদ্ধই ছিল। বাংলা, কেরল ও ত্রিপুরায় দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকলেও হিন্দু, মুসলিম, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান সহ কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কোনও উৎসবেই সিপিএমের কোনও স্তরের নেতাকেই প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
সাধারণ ভাবে নিজেদের নাস্তিক প্রমাণেই এতকাল ব্যস্ত ছিলেন সিপিএম নেতারা। শুধু তাই নয়, এই ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে কোনও নেতা ধর্মীয় কার্যকলাপ করলে দলে প্রবল সমালোচিত হয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ Namaste Trump : মেগা ইভেন্টের দায়িত্ব অপরিচিত সংস্থাকে কেন, প্রশ্ন কংগ্রেসের
বাম সরকারের আমলে বাংলার প্রাক্তন মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী তারাপীঠে পুজো দিয়েছিলেন, হজ করতে গিয়েছিলেন আর এক মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা, এনিয়ে দলের অন্দরে ব্যাপক তোলপাড় হয়েছিল।
এখন পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়েছে। সারা দেশে বিভাজনের রাজনীতিকে হাতিয়ার করে কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি।এই দলের প্রধান শত্রু হল ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি। ফলে কেন্দ্রে এই সরকার আসার পর বারবার মুক্তচিন্তার উপর আঘাত এসেছে। দেশকে এক অস্থির পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে বিজেপি সরকার।
এমন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সিপিএম বলেছে, মন্দির এবং অন্যান্য ধর্মীয়স্থান আরএসএস ও তার সহযোগীদের জন্য ছেড়ে দেওয়া যাবে না। দলের পক্ষ থেকে অবশ্যই ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী ভক্তদের মন্দির পরিচালন কমিটির অন্তর্ভূক্ত করতে হবে। ধর্মান্ধতা এবং বিদ্বেষমূলক রাজনীতির মোকাবিলায় ধর্মীয়স্থানে দলীয় সদস্যদের উপস্থিতি জরুরি বলেই মূল্যায়ণ করেছে সিপিএম।
দলের পলিটব্যুরো এমন সিদ্ধান্তই নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এখন কমিউনিস্ট পার্টি মার্ক্সিস্টের (সিপিএম) শীর্ষনেতারা মনে করছেন, ‘ঈশ্বরের কাছে’ যেতে হবে। যেতে হবে আরও প্রগতিশীল ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য। কখনই আদর্শের বিরুদ্ধে যাওয়া চলবে না।
এনিয়ে সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেছেন, জনসংযোগ বাড়াতে আমরা সবসময় প্রকাশ্য বা সামাজিক সমাবেশকে ব্যবহার করি। কখনই কোনও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রত্যক্ষ ভাবে আমরা যুক্ত হই না। কিন্তু এখন বিভেদকামী ও ফ্যাসিবাদী শক্তি মাথা তুলছে।
ধর্মীয়স্থানকে ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক ইস্যুকে শক্তিশালী করছে।এটা আমরা দীর্ঘদিন করতে দেব না।আগে দল কোনও সদস্যকে পুজো কমিটি বা মন্দির কমিটিতে থাকার অনুমতি দিত না। কিন্তু এখন এই ধরনের কমিটিতে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
মহম্মদ সেলিম আরও বলেন, আরএসএসকে আমরা ওয়াকওভার দিতে পারি না। এটা একপক্ষের খেলা নয়।