বেহাল রাস্তা, হাসপাতালে যাওয়ার পথে মৃ্ত রোগী
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ খানাখন্দে ভরা বেহাল রাস্তা। সেই রাস্তা দিয়েই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা গেলেন রোগী। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষীপুর গ্রামে। রাস্তা সংস্কারের দাবিতে শুক্রবার সকাল থেকে এলাকার বাসিন্দারা রাস্তা অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তায় ধানের চারা রোপণ করে বিক্ষোভে সামিল হন। তাদের বক্তব্য, অনেক হয়েছে নেতাদের প্রতিশ্রুতি।আর নয়।
জানা গেছে, দীর্ঘ দশ বছর ধরে লক্ষীপুর গ্রামে প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা কঙ্কালসার অবস্থায় হয়ে পড়ে আছে। ২০১৭ সালের বন্যার পর আরও রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। স্থানীয় নেতাদের বারবার বলেও হচ্ছে না কোনো কাজ। প্রতিদিনই ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে এই রাস্তায়।
রাস্তা বেহাল হওয়ায় বর্ষার শুরুতেই যাতায়াত ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে। এক হাঁটু কাদা ভেঙে পারাপার করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। এরই প্রতিবাদে এদিন বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা।
ধুুপগুড়িতে শুরু দুয়ারে ভ্যাকসিন, সরকারের দরাজ প্রশংসায় আমজনতা
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাস্তাটি তৈরি হওয়ার পর ১০ বছর ধরে কোনো সংস্কারই হয়নি। মূলত ১০ টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে নিত্যদিন ওই বেহাল রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। নসরপুর, ভেলাবাড়ি, চন্ডিপাড়া ও গাররা-ভাটল প্রভৃতি গ্রাম সহ বিহার রাজ্যের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ রয়েছে এই রাস্তার।
স্থানীয় বাসিন্দা টিটুন ঠোগদার জানান, তার বাবা সনাতন ঠোগদার প্রায় পনেরো দিন ধরে অসুখে ভুগছিলেন। বুধবার মালদায় এক বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ভাড়ার করতে গেলে রাস্তা খারাপের জন্য তা অস্বীকার করে। এক প্রকার বাধ্য হয়েই অটোতে করে নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তাতেই মারা যান সনাতন ঠোগদার।
স্থানীয় বাসিন্দা নকুল চন্দ্র ঠোগদার জানান, ২০১৭ সালের বন্যার পর রাস্তাটি আরও খারাপ হয়ে গেছে। রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে প্রশাসন কর্তাদের বহুবার জানানো হয়েছে। ভোটের আগে জনপ্রতিনিধিরা এই রাস্তা মেরামতের আশ্বাস দিলেও তাতে কোনও রকম কাজ হয়নি। বর্তমানে রাস্তার হাল এতটাই খারাপ যে,কোথাও হাঁটু সমান জল, কোথাও আবার বৃষ্টির জমা জল বইছে রাস্তার উপর দিয়ে।
স্থানীয় বাসিন্দারা এভাবেই বছরের পর বছর খানাখন্দে ভরা কর্দমাক্ত এই পথ দিয়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন। আট থেকে আশি সকলেই সামিল এই নরক যন্ত্রনায়। ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পান অভিভাবকরা বলে জানান।মাঝরাতে চিকিৎসা করাতে কিংবা গর্ভবতী মায়েদের এই পথ দিয়ে হাসপাতলে পৌঁছতে কার্যত নাভিশ্বাস ওঠে। রাস্তা খারাপের কারণে ছোট চার চাকার গাড়িও এই পথে আসতে চায় না।
জেলা পরিষদের সদস্য সন্তোষ চৌধুরী জানান রাস্তাটি সংস্কারের জন্য জেলা পরিষদকে জানানো হয়েছে। বর্ষার পর রাস্তাটি সংস্কার করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত আশ্বাস পেয়ে অবরোধ তুলে নেন স্থানীয়রা। তবে রাস্তা সংস্কার নাহলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারী দিয়েছেন তারা।