বিহারে কোভিডে মৃত্যু বাড়ল ৭২ শতাংশ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকেই দায়ী করলেন দীপঙ্কর ভট্টাচার্য

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বুধবার বিহারের সরকারি রিপোর্টে একলাফে ৭২ শতাংশ বাড়ল মৃত্যুর সংখ্যা। নীতিশ সরকারের গাফিলতিকে দোষারোপ করলেন সিপিআই(এমএল) এর সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য।
কোভিডে সংক্রমণ এবং মৃত্যু নিয়ে কারচুপি চলছে। বিহার সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতেই অডিট চেয়ে বসে পাটনা হাইকোর্ট। বুধবার নীতিশ সরকারের তরফে বলা হয় এখনও অবধি রাজ্যে কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ৯,৪২৯ জনের৷
বিহার সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২০ এর মার্চ মাস থেকে ২০২১ এর মার্চ মাস অবধি রাজ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১৬০০ জনের। দ্বিতীয় ঢেউ অর্থাৎ এপ্রিল থেকে ৭ জুন অবধি করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৭,৭৭৫ জনের।
এর আগের হিসেব অনুযায়ী বিহারে করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছিল সাড়ে পাঁচ হাজারের কাছাকাছি মানুষের। ৩৮ টি জেলায় নতুন করে স্ক্রুটিনি করার পরেই তা প্রায় ৭২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
নতুন তথ্য অনুসারে পাটনায় কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ২,৩০৩ জনের৷ অথচ শ্মশান এবং কবরস্থানের হিসেব অনুযায়ী কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ৩২৪৩ জনের।
মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের জেলা নালন্দাতেই মৃতের সংখ্যা ২২২ জন বৃদ্ধি পেয়েছে। কোভিড পরিসংখ্যানের কারচুপিকে হাতিয়ার করেই সুর চড়িয়েছে বিরোধী দলগুলি।
এবিষয়ে সিপিআই(এমএল) এর সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, এটা তো আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি৷ সমস্ত রাজ্য সরকারের দেওয়া হিসেব এবং মানুষের চোখে মৃত্যুর বহর একেবারেই মিলছে না। আমরা আলাদা করে সমীক্ষা চালাচ্ছি। প্রতিটি বড় বড় গ্রামে দেখা যাচ্ছে ৪০ জন ৪৫ জনের কোভিডে মৃত্যু হচ্ছে।
তিনি বলেন, আসলে হাসপাতালে যারা ভর্তি হচ্ছেন শুধুমাত্র সরকারি হিসাবে তাঁদেরকেই কোভিড আক্রান্ত হিসাবে ধরা হচ্ছে। আর সব থেকে বড় কথা পর্যাপ্ত পরিমাণে টেস্ট হচ্ছে না। টেস্ট না হওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যাও মিলছে না।
চিকিতসা ব্যবস্থাকে দায়ী করে তিনি বলেন, শুধুমাত্র কোভিড নয়, এছাড়াও অন্যান্য রোগে যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁরা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। যার ফলেও মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটা বাড়ছে। আন্তর্জাতিক একাধিক সংস্থার তরফে বলা হচ্ছে দেশে এই মুহুর্তে দেশে মৃত্যুর সংখ্যা ৪০ থেকে ৪৫ লক্ষ, যা সরকারি হিসাবের ১০ গুণ বেশী।
তাঁর মতে এর প্রধান কারণ হল, প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো নিয়ে সরকার যদি ভাবতো তাহলে এমনটা হত না। কিন্তু যেভাবে মৃত্যুর সংখ্যা একলাফে এতটা বাড়ল তা অত্যন্ত দুঃখের। কোভিডে মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি রবিবার “কাউন্ট এভ্রি ডেথ”/ “আমরা ভুলব” না শুরু করেছি আমরা।
গত ভাষণে আমরা টিকাকরণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুনেছি। যেখানে তিনি টিকা সাপ্লাইয়ের কথা বলছেন। কত দ্রুত টিকা দেশের সমস্ত মানুষ পেতে পারে সেই প্রশ্ন আমরা তুলছি। ডিজিটাল পদ্ধতিতে না গিয়ে ঠিক যেভাবে ভোট আদায় করতে বাড়ি বাড়ি যাওয়া হয় একেবারে সেই পদ্ধতিতে টিকা দেওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। আমরা চাই ভোট দেওয়ার মতোই দেওয়া হোক টিকা।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪,০৫২ জন। এখনও অবধি মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২,৯১,৮৩,১২১ জন। একদিনে মৃত্যু হয়েছে ৬১৪৮ জনের। এখনও অবধি দেশে কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ৩,৫৯,৬৭৬ জনের। দেশে ভ্যাকসিন পেয়েছেন ২৫,০৬,৪১,৪৪০ জন৷