নবমীতে শৃঙ্খলা উধাও, রাজপথের দখল নিল পুজো পাগল আমজনতা
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ অনেক কষ্ট করে নিজেকে সামলে রেখেছিল বাঙালি। তবে নবমীর দিন সেই ধৈর্যের বাধ ভাঙলো। ঝুঁকি নিয়েই মন্ডপের পথে পা বাড়ালো মানুষ। এবছর হাইকোর্টের নির্দেশে পুজো মণ্ডপে প্রবেশ বন্ধ ছিল মানুষের।
বিশেষ করে পুজোর মধ্যে বৃষ্টি তাদের বাইরে বেরোনোয় কিছুটা বাদ সেধেছে। অনেকেই মনে করেছিল নিজেদের সুরক্ষার কথা ভেবে অনেক শৃংখলাবদ্ধ হয়েছে বাঙালি। কিন্তু রবিবার সে শৃঙ্খলা উধাও। উদ্বেগ সরিয়ে রেখেই পুজোর আনন্দ নিতে পথে নামল সাধারণ মানুষ।
আকাশ পরিস্কার। রোদ ঝলমলে দিন। তারওপর পুজোর শেষ দিন। রাত পোহালেই বেজে উঠবে বিসর্জন্বর বাদ্যি। তাই আর সময় নষ্ট না করে নবমীর সকাল থেকেই রাজপথের দখল নিল পুজোপাগল জনতা।
এই পুজো পাগল মানুষগুলির জন্যই আজ বাংলার দুর্গাপুজো বিশেষ করে কলকাতার দুর্গাপুজো পরিণত হয়েছে উৎসবে। যদিও এবারে সেই পুজো সব মিলিয়ে বাঙালির জন্য ঘরবন্দি হয়েই কেটেছে সিংহভাগ সময়। তবুও উৎসবের শেষ লগ্নে এসে সেই বাঙালি আর পারল না ঘরে বসে থাকতে।
কার্যত নবমীর সকাল থেকেই তাই কলকাতার রাস্তায় রাস্তায়, মণ্ডপে মণ্ডপে উপচা পড়া জনতার ভিড়। আর সেই ভিড়কে সামাল দিতে কার্যত কালঘাম ছুটে যাচ্ছে পুলিশকর্মী থেকে সিভিল ভলেন্টিয়ারদের।
কলকাতায় ইদানিংকালে তৃতীয়া-চতুর্থী থেকেই মণ্ডপে মণ্ডপে পুজোপাগল মানুষদের ভিড় শুরু হয়ে যায়। এবারে এই কোভিডকালের মধ্যেও রাজ্য সরকারের তরফে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন সব রকম সাবধানী বজায় রেখে তৃতীয়া থেকেই মানুষ পারবেন মণ্ডপে মণ্ডপে ঠাকুর দেখতে।
এমনকি তৃতীয়া থেকেই যাতে সবাই রাত জেগে ঠাকুর দেখতে পারে তার জন্যও যথাযথ পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিলেন তিনি।
তারপরেও কলকাতা হাইকোর্ট একটি জনস্বার্থ মামলায় রাজ্য সরকারের বন্দোবস্ত দেখে প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে মনে হয়। তাই আদালত নির্দেশ দেয় সব মণ্ডপ হবে দর্শকশূণ্য। কোনও মণ্ডপেই প্রবেশ করতে পারবেন না দর্শক। তার জেরেই কার্যত তৃতীয়া থেকে কলকাতার একের পর এক মণ্ডপ হয়ে যায় জনশূন্য।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/corona-in-india-the-recovery-rate-has-increased-to-90-percent/
এর সঙ্গে আবার দোসর হয় নিম্নচাপজনিত আবহাওয়া। সপ্তমী পর্যন্ত কলকাতায় বৃষ্টি যেমন হয়েছে তেমনি আকাশও ছিল মেঘে ঢাকা। যদিও সেদিন থেকেই কাটতে শুরু করে মেঘের ঘোর।
নিম্নচাপ সরে যায় বাংলাদেশে। এরপর অষ্টমির বিকাল থেকেই কলকাতার একাধিক পুজোমণ্ডপে ভিড় জমাতে থাকেন পুজোপ্রেমিরা।
নবমীর সকাল থেকেই এই ভিড় কার্যত জনস্রোতে পরিণত হয়। কিবা উত্তর, কিবা দক্ষিন। বেহালা হোক কী দমদম পার্ক। হাতিবাগান হোক কী রাসবিহারী, সর্বত্রই শুধু মানুষের ভিড়। তাতে না আছে মাস্কের কড়াকড়ি, না আছে স্যানিটাইজারের ব্যবহার। আর শারীরিক দূরত্ব সেতো কার্যত হাস্যকৌতুকের পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে।
তবে সব থেকে বড় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে হাইকোর্টের রায় নিয়ে। আদালত শুধুমাত্র মণ্ডপকে দর্শকশূণ্য রাখতে বলেছেন। সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে সর্বত্রই পালন করা হয়েছে। যে দূরত্ব মানতে বলা হয়েছে তাও মানা হয়েছে।
কিন্তু তারপরেও পুজোপাগল মানুষের কাছে কিন্তু হেরে গিয়েছে আদালতের রায়। কার্যত সেই রায়কে বাতিলের খাতায় ঠেলে দিয়ে মানুষ নিজেই পুজোর রায় দিতে নেমে পড়েছে রাস্তায়।