কৃষক আন্দোলন মাঝেই দেশজুড়ে বন্‌ধের প্রভাব

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ কেন্দ্রের আনা কৃষক আইনের বিরোধিতায় দিল্লি সীমান্তে আন্দোলনে শামিল হয়েছেন কয়েক লক্ষ কৃষক। কেন্দ্রের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকে কোনও সমাধান সুত্র বের না হওয়ায় মঙ্গলবার দেশব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দেয় কৃষক সংগঠনগুলি। বেলা ১১ টা থেকে দুপুর ৩ টে অবধি চলবে চাক্কা জাম।

এই মুহুর্তে দিল্লি এবং হরিয়ানা সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশবাহিনী। কোনওরকম সমস্যা এড়িয়ে যেতে ঘুরপথে যাওয়ার নির্দেশ পুলিশের। বনধ চলাকালীন কোনো রাজনৈতিক দলকে মঞ্চে ওঠা যাবে না বলে জানিয়েছে কৃষকরা।

প্রথমে কৃষকদের তরফে হাইওয়ে এবং টোল প্লাজাগুলিতে বিক্ষোভের কথা ঘোষণা করা হলেও পরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পথে হাঁটেন তাঁরা। তবে ধর্মঘট চলাকালীন অ্যাম্বুলেন্স এবং অন্যান্য জরুরীকালীন পরিষেবা চালু থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

 

এদিন কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন ব্যাংক ইউনিয়নগুলি। তবে তাঁরা বন্‌ধের পথে হাঁটবেন না। এদিন কালো ব্যাচ পড়ে কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানাবেন তাঁরা। তবে ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করেছে একাধিক ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়নগুলি।

দিল্লি প্রবেশ এবং বাহিরের ক্ষেত্রে আলাদা করে নির্দেশ জারি করেছে দিল্লি এবং হরিয়ানা পুলিশ। হরিয়ানা থেকে উত্তরপ্রদেশ অবধি বিরাট দিল্লি সীমান্তে এই মুহুর্তে কৃষকদের আন্দোলন চলছে।

আরও পড়ুনঃ কৃষক আন্দোলন সমর্থনকারী রাজনৈতিক দলগুলিকে কটাক্ষ গেরুয়া শিবিরের

কৃষকদের বৃহৎ আন্দোলনের প্রভাব দিল্লির মধ্যে দুধ, ফল এবং সবজি বিক্রেতাদের ওপর প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রভাব পড়তে পারে একাধিক মান্ডিগুলিতে। কৃষকদের ডাকা বনধে নিত্যযাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়বে।

এদিন কৃষকদের সমর্থনে সম্পূর্ণ বন্‌ধের ডাক দিয়েছে পাঞ্জাবের কংগ্রেস সরকার। সমর্থন জানিয়েছে বিরোধী আপ এবং আকালি দলের সমর্থকরাও। সমর্থনে এগিয়ে এসেছে পাঞ্জাবের ট্রেড ইউনিয়নগুলি। চন্ডিগড়ের বেশ কিছু বাজার এদিন বন্ধ রয়েছে বলে সূত্রের খবর।

মুম্বইয়ের একাধিক সবজি এবং ফলের বাজারগুলিতে প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বন্ধ রয়েছে ক্যাব, অটো এবং বাস পরিষেবা। খুচরা বাজারগুলি বন্‌ধের সমর্থন না করলেও বন্ধ রয়েছে একাধিক দোকান। খোলা রয়েছে হোটেল এবং রেস্টুরেন্টগুলি। কোনরকম অশান্তি এড়াতে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ বাহিনী।

কৃষকদের ডাকা বন্‌ধে শামিল হয়নি তামিলনাড়ুর বিজেপি সমর্থিত এআইডিএমকে। তবে বিরোধীদের ডাকা বন্‌ধে এদিন সবজি এবং বাজারগুলিতে প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে তেলেঙ্গানাতে কৃষকদের ডাকা বন্‌ধকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন জানিয়েছে টিআরএস সরকার। সমস্ত পরিবহন ইউনিয়নগুলিকে বন্ধ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন কে চন্দ্রশেখর রাও।

 

দেশের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বন্‌ধের প্রভাব কম পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু সম্পুর্ণ সমর্থন মিলেছে হরিয়ানার তরফে। যদিও মধ্যপ্রদেশ, হিমাচলপ্রদেশে এর আংশিক প্রভাব পড়বে। উত্তরপূর্বে অসম এবং ত্রিপুরাতে বন্‌ধের প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। কর্ণাটকে কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে বিধানসদার বাইরে কংগ্রেসের অবস্থান বিক্ষোভ। কলিবুর্গিতে রাস্তা অবরোধ করেন বাম সমর্থকরা।

 

কৃষকদের পাশে থেকে মঙ্গলবার থেকে আন্দোলন কর্মসূচী চালিয়ে যাবে তৃণমূল। তৃণমূল বিধায়ক বেচারাম মান্না এবং মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসুর নেতৃত্বে চলবে আন্দোলন কর্মসূচী। এদিন সকাল থেকেই ধর্মঘটের সমর্থনে রাস্তায় নামেন বাম সমর্থকরা। জেলায় জেলায় চলে বন্‌ধ সমর্থন কর্মসূচী।

প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বরে পাশ হওয়া তিনি কৃষি আইনের বিরোধিতায় মাস তিনেক ধরে চলছে কৃষকদের আন্দোলন। এর মধ্যে দিল্লি চলো অভিযানের ডাক দেয় পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার কৃষকরা। তাঁদের সমর্থন জানিয়েছে দেশের ১৬ টি রাজনৈতিক দলগুলি। ৯ তারিখ ফের একবার কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চাইছে কেন্দ্রও। আইনে বদল এনে আন্দোলনের উত্তাপ কমাতে চাইছে কেন্দ্র সরকার। কিন্তু আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় রয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি।

সম্পর্কিত পোস্ট