শিয়রে নির্বাচন, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দলকে ঝাপিয়ে পড়ার নির্দেশ মমতার

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ নজরে একুশের নির্বাচন তার আগে রণকৌশল স্থির করতে শুক্রবার কালীঘাটে দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বসেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে আগামী পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকেই দলীয় কর্মীদের ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিলেন তিনি।

মন্ত্রী বা সাংসদ দেখলে চলবে না প্রত্যেক নেতাকেই সংগঠনের জন্য সময় দিতে হবে। লোকসভা নির্বাচনের সময় যেভাবে দায়িত্ব নিয়ে দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বিধায়করা। একইভাবে সাংসদদের সক্রিয় হওয়ার বার্তা দিলেন তিনি।

সেখানে মুখ্যমন্ত্রী সাংসদ, বিধায়কদের বিশেষ বার্তা দিয়েছেন,তৃণমূল নেত্রী বলেছেন যারা দল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন তাঁদের নিয়ে ভাবার দরকার নেই। বরঞ্চ নিজেদের কাজের প্রতি মনোনিবেশ করতে হবে। প্রত্যেক সাংসদকে নিজের এলাকায় গিয়ে কৃষকদের পাশে থাকবেন। তৃণমূল তাদের পাশে আছে এই বার্তা দিতে হবে।

১ ফেব্রুয়ারি থেকে সাংসদদের নিজেদের এলাকায় পড়ে থাকতে হবে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে। নেত্রীর নির্দেশে কর্মসূচি সংক্রান্ত তালিকা করা হচ্ছে। কারা কিভাবে কাজ করবেন, কী বার্তা দেবেন সবটাই তৈরি করা হচ্ছে দলের তরফে।

সেইসঙ্গে নেত্রী বলেছেন, দলের জনপ্রতিনিধিরা যেন শালীনতা বজায় রেখে কথাবার্তা বলেন। এমন কিছু যাতে না বলেন যাতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। কৃষক আন্দোলনকে সামনে রেখে আরো সক্রিয় হয়ে সবাইকে ময়দানে নামার পরামর্শ দিয়েছেন মমতা।এদিনের বৈঠকে তৃণমূলের অধিকাংশ সাংসদ উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, তৃণমূলে বেশ কয়েকজন দেব, নুসরত ও মিমির মতো তারকা সাংসদদের নির্বাচনী প্রচারে তাঁদের কিভাবে সামনে আনা যায়, সেই ব্যাপারে বিশেষ নজর দিয়েছেন মমতা। এমন খবরই পাওয়া গিয়েছে তৃণমূল সূত্রে। দলত্যাগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এদিন সবার কাছে বিষয়টি পরিষ্কার করে দিয়েছেন।

পুলিশের অনুষ্ঠানে দরিয়া দিল মমতার, ভোটের আগে দিলেন আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী-কেএলও সদস্যদের চাকরি

বলেছেন, যে, যে বা যারা দল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন তাঁদের নিয়ে চিন্তা করার কোনো প্রয়োজন নেই। তাঁদের কথা না ভেবে সকলকে নিজেদের জায়গায় মনোনিবেশ করতে হবে আরও বেশি করে। অর্থাত্ মানুষের পাশে দাড়িয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

সেইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জোর দিয়েছেন দলের ভাবমূর্তির ওপর। বহুবার দেখা গিয়েছে তৃণমূল নেতাদের একাংশ এমন কিছু কথা বলেছেন সংবাদমাধ্যমে বা প্রকাশ্য জনসভায়, তাতে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে দলকে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে আর রাজি নন। সেটা তিনি পরিষ্কারভাবে সবাইকে বুঝিয়ে দিয়েছেন বলেই জানা গিয়েছে।

সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে দলত্যাগটা যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিয়ম করেই কেউ ছাড়ছেন মন্ত্রিত্ব। আবার কেউ ছাড়ছেন বিধায়ক পদ। দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন কেউ কেউ। এসবের মধ্যে দলকে শৃঙ্খলার শবক দিযেছেন মমতা। যতদিন না পর্যন্ত নির্বাচনী আচরণবিধি লাগু হয়, আপাতত ততদিন মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে প্রচারের কথা বলেছেন।

দিল্লির ইজরায়েলি দূতাবাসের কাছে বিস্ফোরণ, ক্ষতিগ্রস্থ ৩ টি গাড়ি

এদিন বৈঠক শেষ করে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় দলের তরফে কৃষি আইন নিয়ে অনমনীয় মনোভাবের নিন্দা করেন। সাধারণতন্ত্র দিবসে লালকেল্লায় কৃষকদের আন্দোলনের ঘটনায় বিজেপি ঘনিষ্ঠ একজন জড়িত রয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন।

রাষ্ট্রপতি এদিন কৃষি আইনের প্রশংসা করেন। তবে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে সম্মান জানিয়েও কৃষি আইনের সমর্থনের সমালোচনা করেন সৌগত রায়। তৃণমূল আন্দোলনরত কৃষকদের পাশে রয়েছে বলেও আরও একবার জানান তিনি। সেখানে তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয় তৃণমূল।

সম্পর্কিত পোস্ট