ফেব্রুয়ারি মাসেই চার দফায় হাওড়া সহ ১১১ টি পুরসভার নির্বাচন
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ কলকাতা পুরসভার ভোট পর্ব মিটে যাওয়ার পর আগামী দুমাসের মধ্যে রাজ্যের বাকি সব পুরসভার নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই চার দফায় হাওড়া সহ বাকি ১১১ টি মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরসভার নির্বাচন করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় সব থেকে বেশি পুরসভার নির্বাচন বকেয়া রয়েছে। তাই সেই জেলা থেকেই পুরো নির্বাচন পর্ব শুরু হবে বলে স্থির করা হয়েছে। হাওড়ার পাশাপাশি রাজ্যের আরও ১১১টি পুরসভায় নির্বাচিত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়েছে বেশ কিছু দিন আগে। হাওড়া পুরসভার নির্বাচন-ভাগ্য ঝুলে রয়েছে রাজভবনে।
কারণ, হাওড়া পুরসভার সংশোধনী বিলটি রাজ্যপাল এখনও আটকে রেখেছেন। তাই কলকাতার পুরভোট শেষ হতেই বাকি ১১১টি পুরসভার ভোট নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে বলেছেন, দু’-এক মাসের মধ্যে ভোট হয়ে যাবে।
নবান্নের যুক্তি, শীতের মধ্যে ভোট হলে কষ্ট অনেক কম হয়। তাই ঠান্ডার আমেজ থাকতেই নির্বাচন করার পক্ষে রাজ্য সরকার। কিন্তু করোনার কারণে একসঙ্গে নয়, কয়েক দফায় ভোটগ্রহণ হওয়াই ভালো। বিধানসভার ভোট আট দফায় হলে, পুরভোটে চার-পাঁচ দফায় ক্ষতি কী? সেই অনুযায়ী জানুয়ারি মাসে নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে একটি মহলে চর্চা তুঙ্গে।
KMC ELECTION 2021: নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে লালবাড়ি দখলের পথে তৃণমূল
কিন্তু সোমবার সরকার ও কমিশনের বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, নতুন ভোটার তালিকার উপর ভিত্তি করে হবে পুর নির্বাচন। আর তা প্রকাশিত হবে আগামী ৫ জানুয়ারি। তারপর বিভিন্ন পুরসভার ওয়ার্ড ধরে ভোটার তালিকা তৈরি করতেও সময় লাগবে কয়েকদিন। আবার আইন অনুযায়ী, ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি ও নির্বাচনের দিনের মধ্যে ন্যূনতম ২৪ দিনের ব্যবধান থাকা প্রয়োজন। ফলে ফেব্রুয়ারি মাসের আগে বাকি পুরভোট হওয়া কার্যত অসম্ভব।
আরও কিছু কারণ রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম সরকারি ছুটি। ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দ এবং ২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন। ২৬ জানুয়ারি সাধারণতন্ত্র দিবস। আবার গঙ্গাসাগর মেলা রয়েছে। সর্বোপরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের কর্মসূচি ‘দুয়ারে সরকার’ও দু’দফায় হওয়ার কথা জানুয়ারি মাসে।
প্রথম দফায় ২ থেকে ১০ জানুয়ারি, আর দ্বিতীয় দফায় ২০ থেকে ৩০ জানুয়ারি রাজ্যের সর্বত্র হবে এই শিবির। ‘দুয়ারে সরকার’ থেকে ২০টি প্রকল্পের সুবিধা পাবেন সাধারণ মানুষ। তাই জানুয়ারি মাস ভোট করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট অসুবিধাজনক।
অন্যদিকে, মার্চ-এপ্রিল মাসে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক সহ একাধিক পরীক্ষা রয়েছে। গরমও পড়তে শুরু করবে। সেক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারি মাস ভোট করার ক্ষেত্রে আদর্শ সময় বলে মনে করছেন কমিশনের কর্তারা। তাঁদের ধারণা, রাজ্যে যে সংখ্যক পুরসভা বকেয়া রয়েছে, তার ভোট করাতে গেলে কমপক্ষে চার দফা করা প্রয়োজন। এছাড়া রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হাতে ১৫ হাজার ইভিএম আছে। তা দিয়ে একদফায় ১১১টি পুরসভার ভোট করা সম্ভব নয়।