কাল রাত ৯টায় শক্তির প্রদর্শন -“৯” এর রহস্য ভেদে হাজার প্রশ্ন – উত্তর অজানা
রাহুল গুপ্ত
করোনা মোকাবিলায় দেশ , রাজ্য লড়ছে। গোটা দেশে চলছে কমপ্লিট লক ডাউন। সব যেন ঘুমিয়ে আছে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও বার্তার মাধ্যমে রবিবার আগামী ৫ই এপ্রিল দেশবাসীকে একতা প্রদর্শনের বার্তা দিলেন।
৩রা এপ্রিল সকাল ৯ টা র সময় প্রধানমন্ত্রীর বার্তা ওই দিন ( ৫ই এপ্রিল ) রাত ৯টা থেকে ৯ মিনিটের জন্য সবাইকে ঘরের আলো নিভিয়ে প্রদীপ , মোমবাতি , টর্চ , অথবা মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট এর আলো জ্বালাতে হবে ।
এরপর শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক আক্রমণ। বিরোধীদের বক্তব্য তাহলে করোনা মোকাবিলায় চিকিৎসার কি প্রয়োজন রয়েছে ? কংগ্রেস থেকে তৃণমূল কংগ্রেস সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরাই প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানের কোনো দিক খুঁজে পাচ্ছেন না।
এর কোনো কি অ্যাস্ট্রোলোজিক্যাল ব্যাখ্যা আছে ? না কি মানুষের মন জয় করার এটা কোনো পলিটিক্যাল ইভেন্ট ??
আসুন একটু বোঝার চেষ্টা করি। বিশ্বাস করা বা না করা আপনার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত বিষয়।
জনৈক জ্যোতিষ এর মতে প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণায় কোনো জ্যোতিষশাস্ত্রের ব্যাখ্যা নেই। কারণ ৫ ই এপ্রিল রাত ৯ টার সময় ভারতের মঙ্গল গ্রহের অবস্থান ভালোই আছে। ওই সময় ভারতের লগ্ন তুলা লগ্ন , কিন্ত শহর কলকাতায় আবার বৃশ্চিক লগ্ন।
আরও পড়ুনঃ ছাগল দিয়ে লাঙল চাষ হয় না, থালা বাজাও মোমবাতি জ্বালাও
তুলা লগ্নের নবম ঘরে রাহুর অবস্থান , কিন্তু কলকাতায় ওই সময় অষ্টম ঘরে রাহুর অবস্থান , বৃশ্চিক লগ্নের প্রেক্ষিতে।
তাহলে কলকাতায় ৮টা ধরে চলা উচিত ছিল , কিন্তু যেহেতু ৯টা ধরে চলা হচ্ছে , তাহলে কি রাজধানী দিল্লিকে এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় অবস্থান হিসাবে ধরা হলো ? উত্তর সেই অর্থে পরিষ্কার নয়।
তাঁর মতে ভারতের মঙ্গল গ্রহের অবস্থান ভালো ওই দিন , আরও ভালো করতে চাইলে আবার বিপদ হবে না তো ? পেলাম না কোনো সঠিক দিক নির্দেশ তাঁর কথায়।
যেমন পাওয়া যাচ্ছে না প্রধানমন্ত্রীর কথা থেকে কোনো বৈজ্ঞানিক কারণ যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। ঘরের আলো নিভিয়ে প্রদীপ জ্বালানো কিংবা মোমবাতি জ্বালানো দেখতে ভালো লাগবে অবশ্যই কিন্তু এটাই কি করোনা ভাইরাস কে হত্যা করার আসল অস্ত্র ?
না কি ১৩০ কোটির ভারত বর্ষ শুধুমাত্র জ্যোতিষের গণনায় এই যুদ্ধে জিতে যাবে ? তাও স্পষ্ট নয়। তাহলে কোথায় গেলো আজকের আধুনিকতার ভারত , কোথায় গেলো চিকিৎসাশাস্ত্র , কে জানে।
আবার কেউ কেউ বলছেন ওই দিন ( ৫ই এপ্রিল ) ৯টার সময় রামের আহ্বান করছেন না তো প্রধানমন্ত্রী ? কারণ যেহেতু রামনবমী চলছে দেশ জুড়ে। উল্লেখ্য ইতিমধ্যেই দূরদর্শনে ৮০ এর দশকের বিখ্যাত ধারাবাহির রামায়ণ দেখানো আবার শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সব মিলিয়ে প্রশ্ন হাজার , উত্তরের দেখা নেই। আবার ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বানে সেলেব দুনিয়াতেও পরে গেছে শোরগোল। সবাই প্রায় পাশে দাঁড়াচ্ছেন মোদীজির।
আবার মনোবিদরা বলছেন মন কে ভালো করার এবং এক ঘেঁয়েমি কাটানোর এটা একটা উপায়। তাতে অন্তত ৯ মিনিটের জন্য মন আপনার ভালো হয়ে যাবে। যেহেতু ভারত বর্ষের মানুষ আধ্যাত্বিক ভাবনায় বিশ্বাসী তাই এটা একটা ভালো দিক মন ও আপনার একাগ্রতাকে ভালো রাখার।
অনেক কথাই উঠে এলো এই প্রতিবেদনে। সবটাই যদি , অথবা , কিন্তু , হতেও পারে এই সবের উপর ভিত্তি করে।
কিন্তু কি রয়েছে ৯ নম্বরের রহস্য ? এটা মনে হয় ফেলুদা থাকলে তার কপালেও চিন্তার ভাঁজ পড়তো বৈকি। আমি নিশ্চিত বাঙালির উৎসাহী মন আজ ( শনিবার ) থেকে রবিবারের মাছের বাজারে এই আলোচনা করবেই করবে।
মাথায় রাখবেন তার জন্য অন্তত নিজেদের মধ্যে দুরুত্ব টা দয়া করে বজায় রাখবেন। ভালো থাকুন – সুস্থ থাকুন।