সব পুজো প্যান্ডেল কন্টেনমেন্ট জোন: হাইকোর্ট

দ্য কোয়ারি ডেস্ক: করোনা আবহে এবছর বন্ধ রাখা হোক বারোয়ারি দুর্গাপুজো। এই দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় একগুচ্ছ পর্যবেক্ষণ ও প্রশ্ন তুলেছে কলকাতা হাইকোর্ট।

বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, প্রতিটি মণ্ডপকে কনটেনমেন্ট জোন হিবাসে চিহ্নিত করা হোক। মণ্ডপের ৫-১০ মিটারের মধ্যে প্রবেশের উপর বিধিনিষেধ জারি করা প্রয়োজন।

কেউ যাতে মণ্ডপে যাতে না যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পুজো উদ্যোক্তাদের নিতে হবে বলেও পর্যবেক্ষণে জানিয়ে হাইকোর্ট। দর্শকশূন্য মণ্ডবে পুজো হোক বলেও পর্যবেক্ষণ আদালতের।

এদিনের মামলার শুনানিতে মুম্বইয়ের গণেশ পুজো অনুমতি পায়নি, তাও তুলে ধরা হয়।

রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়েও এদিন উদ্বেগ প্রকাশ করে হাইকোর্ট। আদালত এদিন স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দিয়েছে রাজ্যের ছোট বড় সমস্ত পুজো মন্ডপই বাফার জোন ।

মন্ডপে শুধু ঢুকতে পারবেন পুজো উদ্যোক্তারাই । তাও একসঙ্গে ২৫ জনের বেশি উদ্যোক্তা মণ্ডপে থাকতে পারবেন না বলে রায়ে জানিয়েছে আদালত ।

পুজোর ভিড়ে করোনা সংক্রমণে বিস্ফোরণের আশঙ্কায় ঐতিহাসিক রায় বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ।

লাখ লাখ দর্শক নিয়ন্ত্রণে মাত্র ৩০ হাজার পুলিশ । ভিড় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল আদালত । এদিন রায় দানে বিচারপতি জানান, ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে দোষ দেওয়া যায় না ।

পুলিশের সীমাবদ্ধতা রয়েছে । তাই বিকল্প ব্যবস্থাস্বরূপ প্রত্যেক পুজো মণ্ডপ কন্টেইনমেন্ট জোন গণ্য হবে । এদিনের রায় স্পষ্ট জানিয়েছে হাইকোর্ট ।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/a-section-of-bjp-mps-is-increasingly-interested-in-contesting-the-assembly-polls/

 

করোনা পরিস্থিতিতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে আদালত জানায়, ছোট বড় সমস্ত মন্ডপেই সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য নো এন্ট্রি ।

মণ্ডপের বাইরে ঝোলাতে হবে নো এন্ট্রি বোর্ড । প্যান্ডেল থাকবে দর্শকশূন্য । সমস্ত মন্ডপে থাকবে বাফার জোন । ছোট মণ্ডপ হলে তার ৫ মিটারের মধ্যে এবং বড় মণ্ডপ হলে তার ১০ মিটারের মধ্যে কোনও দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারবে না।

শুধু তাই নয়, কোর্টের নির্দেশ, আগে থেকে উদ্যোক্তাদের নামের তালিকা জমা দিতে হবে। মন্ডপের বাইরে উদ্যেক্তাদের নামের তালিকা টাঙাতে হবে । সেই ব্যক্তিরাই শুধু মন্ডপে ঢুকতে পারবেন ।

যে ৩৪ হাজার কমিটি অনুদান নিয়েছেন তাঁদের প্রত্যেককেই হলফনামা দিতে হবে, বলেও জানিয়েছে আদালত ।

মামলার শুনানিতে আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য জানান, আজ চিকিত্সকরা বারবার বলছেন, এতে বড় ক্ষতি হবে। পূর্ণ লকডাউন করা হোক, যাতে পুজোর ভিড় থেকে সংক্রমণ ঠেকানো যায়।

আইনজীবী বিকাশবাবুর এই যুক্তিতে স্বাগত জানিয়েছেন বিচারপতি। ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশ প্রস্তুত বলেও জানিয়েছে রাজ্য।

এদিনের মামলার শুনানিতে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, এটা রাজ্যের দোষ নয়, তাদের সদিচ্ছা আছে। কিন্তু যে দর্শনার্থী হয় বুঝে কিংবা না বুঝে ভিড় বাড়াবেন, ঘন জন বসতিপূর্ণ এলাকায় মণ্ডপ ঘিরে চিন্তা বাড়ছে। আমরা মনে করি, এই গাইডলাইন যথেষ্ট নয়। তাই কাল পর্যন্ত অপেক্ষা নয়। কন্টেন্টমেন্ট জোনে নো-এন্ট্রি জোন করে দেওয়া উচিত্। রাজ্যের জবাব, কেউ যদি ভিতরে না যেতে পারে তাহলে এটা একটা লস্। বাঙালির বড় উত্সব এটা।

পাল্টা বিচারপতি জাবান, আপনি বাঙালি নন? কটা প্যান্ডেলে যান? বড়জোড় ২৫ জনকে ভিতরে ঢুকতে দেব। যাদের নাম আগে থেকে টাঙিয়ে রাখবেন। লক্ষ্মীপুজোর পরেই হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশ পালন করা হয়েছে কিনা তা নিয়ে ডিজিপি, সিপি-কে রিপোর্ট পেশের কথা বলেছে আদালত । কাউকে ভিতরে যেতে দেওয়া হবে না । আমার তো মনে হয় প্রশসনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো উচিত্। এতে কাজের সুবিধা হবে, পর্যবেক্ষণ অভিজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

করোনা আবহে এবছর বন্ধ রাখা হোক বারোয়ারি দুর্গাপুজো। এই দাবি জানিয়ে এবার কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের করেন হাওড়ার বাসিন্দা অজয় দে। মামলায় কেরলের ওনাম উত্সবের পর করোনা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে বাংলার দুর্গোত্সব নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

কেরলের মতো বাংলায় উত্সব পালিত হলে করোনা সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করা হয়। মহারাষ্ট্রে গণেশ পুজো উত্সব এবং মহরম উত্সবে যখন অনুমতি মেলেনি, তখন কেন বাংলায় পুজোর অনুমতি?

সবকিছু বিবেচনা করে বাংলায় দুর্গাপুজোর উত্সব বন্ধের আবেদন জানানো হয় হাইকোর্টে। আজ ওই আবেদনের ভিত্তিতে রাজ্যের দিকে গুচ্ছে প্রশ্ন ও পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে আদালত।

সম্পর্কিত পোস্ট