সবাই ফোন করলেও ফোন পাননি প্রধানমন্ত্রীর, জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বরাবরই সৌজন্যের অনন্য নজির রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রাজ্যের তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর একটি ফোন করার মতো সৌজন্য দেখাতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর তা নিয়ে সোমবার কটাক্ষের শোনা গেল মমতার গলায়, ‘উনি (পড়ুন প্রধানমন্ত্রী) আমাকে ফোন করেননি। হয়তো ব্যস্ত ছিলেন।’
রবিবারের ফলপ্রকাশের পর থেকেই একের পর এক অনেকেরই অভিনন্দন পেয়েছেন মমতা। ব্যক্তিগত ভাবে ফোন করেছেন দিল্লি, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, পাঞ্জাবের মতো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা। তবে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফোন করেননি তাঁকে। সোমবার ভোটের সম্পূর্ণ ফল প্রকাশের পর সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানান মমতা।
ভোটে জয়ী রাজ্যের ভাবী মুখ্যমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানানো প্রধানমন্ত্রীর তরফে রাজনৈতিক সৌজন্য। বিশেষত একুশের ভোটে যখন একাধিক বার এসেছেন রাজ্যে তিনি। লাগাতার আক্রমণও করে গিয়েছেন। অথচ ভোটে পরাজয়ের পর শাহজাহানের কাছ মারালেন না তিনি।
আর তাই সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, ‘এই প্রথম দেখলাম কোনও প্রধানমন্ত্রী ফোন করলেন না। আমি অবাক হয়েছি।’ মমতার মুখে কথা শুনে অনেকেই প্রশ্ন করেন, ‘প্রধামন্ত্রী ফোন করেননি আপনাকে?’
তাঁর জবাব, ‘না উনি আমাকে ফোন করেননি। হয়তো ব্যস্ত ছিলেন।’ তারপর সামলে নিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘ আমি অবশ্য কিছু মনে করিনি। জাতীয় স্বার্থে এবং রাজ্যের স্বার্থে আমাদের যেখানে একসঙ্গে কাজ করার কথা সেখানে সহযোগিতা থাকলেই হল।’
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর ফোন না এলেও, দেশের বিরোধী নেতা নেত্রীরা যে তাকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সে কথা জানাতে ভোলেননি মমতা। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মমতা অবশ্য বিশেষ করে উল্লেখ করেছেন তাঁদের কথা, যাঁরা তাঁকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
যেমন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল এবং পাঞ্জাবের অমরিন্দর সিংহের কথা। অখিলেশ যাদবও যে তাঁকে ফোন করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, তা বলেছেন মমতা।
দলত্যাগীরা ফিরতে চাইলে স্বাগত, জানালেন মমতা
প্রসঙ্গত, ভোটের প্রচারে প্রতি সভাতেই মমতাকে ডেকেছেন মোদি। তাঁর বক্তৃতার ছত্রে ছত্রে থাকত ‘দিদি ও দিদি’ ডাক। সেই ডাকে একটা সময়ে বিরক্তও হয়েছেন মমতা। কিন্তু জয়ের পর প্রধানমন্ত্রী যে সামান্য কিছু দেখাবেন না তা হয়তো প্রত্যাশিতই ছিল।
উল্লেখ্য, নির্বাচনের পরে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন না করলেও সোশ্যাল মিডিয়া ট্যুইটারের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। রাজনৈতিক মহল অবশ্য বলছে, এর পিছনে মূলত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ এড়াতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একই পথের পথিক হয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এবং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও।
লোকসভা ভোটের সময় প্রধানমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছিলেন প্রত্যেক পুজো তাকে মিষ্টি এবং কুর্তা পাঠান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনীতির বাইরেও তাঁদের সম্পর্ক এতটাই মধুর। কিন্তু একুশের পরাজয়ে তাঁকে সামান্য সৌজন্যে দেখিয়ে ফোন করতে পারলেন না প্রধানমন্ত্রী।