EXCLUSIVE STORY: নেতা থেকে জননেতা শুভেন্দু অধিকারী,পর্ব-২

||অনুুপম কাঞ্জিলাল, সাংবাদিক||

শুভেন্দু অধিকারী যে ভাবে নেতা থেকে হয়ে উঠলেন জননেতা…. পর্ব-২

বামদেরও চ্যালেঞ্জ করা যায় তাদের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদের ধ্বজা তুলে আল্দোলনে নামা সম্ভব। শুভেন্দু অধিকারীকে সামনে দেখে সেদিন নল্দীগ্রামের মানুষ তা বিশ্বাস করতে শুরু করে।

ক্রমে আন্দোলন থেকে শুরু হয় প্রতিরোধের প্রস্তুতিও। নন্দীগ্রাম শুভেন্দুর রাজনৈতিক উত্থানের আঁতুরঘর হয়ে ওঠে। শুভেন্দু সে সময় ছুটে বেড়াতে শুরু করেন এপ্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে। প্রতিরোধ যে গড়ে উঠছে তা টের পেয়ে বামেরাও সে সময় সংগঠনকে ব্যবহার করতে শুরু করে।

মাটিতে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করা শুভেন্দু বুঝতে পারেন সামনে কঠিন লড়াই তাই সংগঠন বাড়াতে তিনি শুধু তৃণমূলের উপর ভরসা না করে নাগরিক আন্দোলনের সংগঠনগুলিকেও নন্দীগ্রামের মানুষের পাশে দাঁড়াবার বার্তা দিতে থাকেন।

কলকাতার যেসব বিশিষ্টজন সে সময় নন্দীগ্রামের আন্দোলনকে সমর্থন করছিলেন প্রত্যক্ষ না হলেও শুভেন্দু তাঁদের পরোক্ষ মদত দিতে থাকেন।

আরও পড়ুনঃEXCLUSIVE STORY: নেতা থেকে জননেতা শুভেন্দু অধিকারী,পর্ব-১

অত্যন্ত বুদ্ধিমান রাজনীতিক শুভেন্দু জানতেন বিশিষ্টজনদের সমর্থন মধ্যবিত্তের একটা বড় অংশকে প্রভাবিত করবে।

মনে রাখতে হবে সিঙ্গুর আন্দোলনের মধ্যেই নন্দীগ্রাম আন্দোলনের উন্মেষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রথম পর্যায় সিঙ্গুর নিয়েই বেশী ব্যস্ত ছিলেন। তার মধ্যেই বাম সরকার সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ পর্ব সেরে ফেলে ও পাঁচিল দিয়ে জমি ঘিরেও ফেলা হয়।

সেই অভিজ্ঞতা থেকে শুভেন্দু বার বার মানুষকে মনে করিয়ে দিয়েছেন একবার অধিগ্রহণ হয়ে গেলে কিছু করার থাকবে না। তাই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও শুভেন্দু বার বার বলতে থাকেন যে কোন ভাবেই হোক অধিগ্রহণ রুখে দিতেই হবে।

কাছে দাঁড়িয়ে যে নেতা বার বার আসন্ন বিপদ সম্পর্কে মানুষকে সজাগ করে দিতে পারেন তার কথায় ভরসা করতে বাধ্য মানুষ।

শুভেন্দুর অধিগ্রহন বিরোধী অবস্থানের আন্তরিকতা নন্দীগ্রামের মানুষকে তাড়িত করেছিল। তাই অধিগ্রহণ রুখে দিতে তারা ছিলেন প্রাণপন ও মরিয়া।

শুভেন্দু অধিকারী যুক্তিনিষ্ট বক্তব্য রাখতে পারদর্শী। তাই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সেসময় যখন বলা হতে থাকে জমি অধিগ্রহন হবে না হলদিয়া ডেপলপমেন্ট অথরিটির নোটিশ ছিঁড়ে ফেলা হোক। তদানিন্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নন্দীগ্রামের মানুষকে এই আশ্বাসবাণী শোনাতেই পরিষ্কার মনে আছে শুভেন্দু অধিকারীর এক যুক্তিনিষ্ট বক্তব্য সংবাদ মাধ্যমে এসে পড়ে।

তিনি বলেন,সরকারি একটা নোটিশ ছিঁড়ে ফেললেই কী তার কার্ষকারিতা নষ্ট হয়ে যায়?আসলে দরকার তো আর একটা নোটিশ দিয়ে পুরোন নোটিশ বাতিল বলে ঘোষণা করা।সরকারি ভাবে এটা যতক্ষণ না করা হচ্চে ততক্ষণ বুঝতে হবে সরকার ভাওতা দিচ্ছে।

শুভেন্দুর এই বক্তব্যের যৌক্তিকতা প্রমাণিত হয় ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে গুলি চালনার ঘটনায়। তারপর ১৮ মার্চ সরকার পাল্টা নোটিশ দিয়ে হলদিয়া ডেপলপমেন্ট অথরিটির পুরনো নোটিশ বাতিল বলে ঘোষণা করায়।

ক্রমশ…

সম্পর্কিত পোস্ট