করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন ফলতার বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন ফলতার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ। গত ২৪ মে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এই বিধায়ক। বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল।

গত তিনদিন ধরে ক্রমশই অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। অবশেষে বুধবার সকালে কার্ডিয়াক অ্যাটাক হয় তাঁর। মাল্টি অর্গান ফেলিওর হয়ে মৃত্যু হয় এই প্রবীণ বিধায়কের। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।

তমোনাশ ঘোষ ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের সহকর্মী। তাই প্রবীণ এই বিধায়কের মৃত্যুর খবরে গভীরভাবে শোক প্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন এক ট্যুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন, খুব দুঃখজনক তমোনাশের মৃত্যু। ফলতার তিনবারের বিধায়ক তমোনাশ দলের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন হাজার ১৯৯৮ সাল থেকে। পয়ত্রিশ বছরের রাজনৈতিক সঙ্গীকে হারালাম। দল ও সাধারণ মানুষের জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন তমোনাশ। প্রচুর সামাজিক কাজে নিযুক্ত ছিলেন তিনি। ওঁর মৃত্যু অপূরণীয় ক্ষতি। তমোনাশের স্ত্রী ঝর্না, দুই মেয়ে এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় এক মাস ধরে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তমোনাশ। শুরু থেকেই পরিস্থিতি বেশ সঙ্কটজনক ছিল ফলতার বিধায়ক তামোনাশের। তিনি অসুস্থতাকে প্রথম দিকে গুরুত্ব দেননি।

আজ নবান্ন সভাঘরে সর্বদল বৈঠক, থাকবেন সব দলের রাজনৈতিক নেতারা

পরিস্থিতি বেশ গুরুতর হয়ে ওঠার পরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই কারণেই পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছিল বলে জানা গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও বিষয়টি নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেছিলেন।

তমোনাশ ঘোষের সুস্থ হয়ে ওঠা নিয়ে নিজের উদ্বেগ গোপন করেননি মুখ্যমন্ত্রী। তমোনাশের পরিবারের আরও কয়েকজনও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।

সময়মতো চিকিৎসা করিয়ে তাঁরা সবাই সুস্থ হয়ে ফিরেছেন বলে, মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন সংবাদমাধ্যমকে। যাঁরা রোগ গোপন করতে চেয়েছেন বা গুরুত্ব দেননি, তাঁদেরই বিপদ বেড়েছে— এমনও বলেছিলেন তিনি।

যখন তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, তখন থেকেই বেশ গুরুতর অবস্থা ছিল তমোনাশের। মাঝে জানা যায়, কিছুটা উন্নতি হয়েছে অবস্থার, তবে সঙ্কট পুরোপুরি কাটেনি।

কিন্তু গত তিন দিনে ফের দ্রুত পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। একে একে তাঁর নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কাজ করা বন্ধ করছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আজ সকালে জানিয়েছে, মাল্টি অর্গ্যান ফেলিওরেই বিধায়কের মৃত্যু হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল বিধায়কের রক্তে সুগার ছিল মাত্রাতিরিক্ত। তা ওষুধ দিয়ে কমানো হয়েছিল। পরে সোডিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় তাও কমানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ভেন্টিলেশনের থাকার ফলে তাঁর গলায় সংক্রমণ হয়। সে জন্যও চলছিল চিকিৎসা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি।

তমোনাশবাবুর দুই মেয়েও করোনায় সংক্রামিত হয়েছিলেন। তাঁরা আগেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।বিধাননগরের বিধায়ক তথা রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুও কিন্তু করোনা আক্রান্ত হয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছিলেন।

তিনি তমোনাশের পরে ভর্তি হন। কিন্তু সুজিতের চিকিৎসা সময় মতো শুরু হওয়ায় তিনি বেশ তাড়াতাড়িই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু তমোনাশ ঘোষ আর ফিরতে পারলেন না।

তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দলে ছিলেন তমোনাশ ঘোষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বহু আন্দোলনের তিনি শরিক। মিশুকে প্রকৃতির মানুষ ছিলেন, তাই অন্য দলেও তাঁর ব্যক্তিগত স্তরে অনেক বন্ধু রয়েছে। এ

দিন সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়েই শোকের ছায়া নেমে এসেছে রাজনৈতিক মহলে।

সম্পর্কিত পোস্ট