আমফান নিয়ে পূর্বসূরীদের অভিযোগের জবাব দিলেন ফিরহাদ হাকিম

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ আমফানের তাণ্ডবলীলার চার দিন অতিবাহিত। অথচ কলকাতাবাসীর দুর্ভোগ কমার নাম নেই। এখনো শহরের বহু এলাকা বিদ্যুৎহীন। বহু এলাকায় পড়ে রয়েছে গাছ। পুরসভার কর্মী সিইএসসি দিবারাত্র কাজ করার পরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগছে।

এই অবস্থায় কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম যখন নাগরিকদের ধৈর্য ধরতে বলছেন। ঠিক তখনই তাঁর প্রাক্তনীরা কলকাতার এই অবস্থা নিয়ে ফিরহাদ হাকিমকে বিঁধতে ছাড়ছেন না। সোমবার ঈদের দিন কলকাতা পুরসভার বসে সমালোচকদের যোগ্য জবাব দিলেন তিনি।

পাশাপাশি সিইএসসির জন্য বললেন এনাফ ইজ এনাফ। মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। এই অবস্থায় পূর্ণ শক্তি দিয়ে কাজ করুক বিদ্যুৎ সংস্থাটি। এই দিন অবশ্য সিএসই তরফ থেকে বলা হয়েছে ইতিমধ্যেই কলকাতায় ৯৫ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ রিস্টোর করা গেছে। মঙ্গলবারের মধ্যে শহরের সর্বত্রই বিদ্যুৎ চলে আসবে।

যদিও ফিরহাদ হাকিম মনে করছেন, কলকাতা শহরকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে এখনো 2-3 দিন সময় লাগবে। এদিন ফিরহাদ হাকিম তার পূর্বসূরীদের যাবতীয় অভিযোগের জবাব দিয়েছেন।

রবিবার তার দুই পূর্বসূরী শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বিকাশ ভট্টাচার্য আমফান পরবর্তীতে মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে সরব হয়েছিলেন। তাদের অভিযোগ ছিল, পুরসভার প্রস্তুতির অভাবের কারনেই এই অবস্থা হয়েছে কলকাতার।

প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, রোগী ভেন্টিলেশনে চলে যাওয়ার পরে চিকিৎসা শুরু হয়েছে। পুরসভা হয়তো পরিস্থিতির গুরুত্বই বুঝতে পারেনি। আমফানের মোকাবিলায় যা যা করণীয় ছিল, তাতে ঘাটতি রয়েছে।

আর এক প্রাক্তন মেয়র, সিপিএমের বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যও পুর ব্যর্থতার দিকেই আঙুল তুলেছেন। ২০০৯ সালে আয়লার সময়ে বিকাশবাবু ছিলেন শহরের মেয়র। তার অভিযোগ,আয়লার সময়ে কলকাতায় যে পরিমাণ গাছ পড়েছিল তা পরিষ্কার করতে মাত্র দু’দিন সময় লেগেছিল। কিন্তু এই পুরবোর্ড সেই কাজ করতেই ব্যর্থ।

শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর পরীক্ষা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির

এদিন দু’জনকেই জবাব দিয়েছেন ফিরহাদ। তার কথায়, কলকাতার বুকে এত বড় ঝড় কখনোই আসেনি। বিকাশবাবু বলছেন,আয়লার সময়ে মাত্র দুই দিনেই পড়ে যাওয়া গাছ কাটা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু আয়লার ঝাপটা সরাসরি কলকাতার উপর আসেনি। কাজেই সে সময় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও ছিল অল্প।আয়লার সময়ে কলকাতায় সাড়ে পাঁচ হাজার গাছ পড়েনি। শুধু তখন কেন কলকাতা পুরসভার ইতিহাসে কখনোই সাড়ে পাঁচ হাজার গাছ পড়েনি। আমাদের সময় ফনিতে মাত্র একদিনে সব গাছ পরিষ্কার করা হয়েছিল। বিকাশবাবু তো দুইদিন সময় নিয়েছিলেন।

এদিন ফিরহাদ হাকিম বলেন, মানুষ সমস্যায় রয়েছে। আমি রাজনীতি করতে চাইনা। এই সময় সকলের উচিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। এখন ভোটের সময় নয়, ভোটের সময় এলে যত খুশি আমার বিরুদ্ধে নিন্দে করবেন। এখন আসুন সকলে মিলে মানুষের জন্য কাজ করি।

শোভন চট্টোপাধ্যায় প্রস্তুতি নিয়ে যে কথা বলেছিলেন সে সম্পর্কে বলতে গিয়ে এদিন ফিরহাদ হাকিম বলেন, পুরসভার তরফে সমস্ত ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। তবে ঝড়ের প্রভাব এত ব্যাপক ছিল যে কিছু করা যায়নি।

তিনি বলেন, পুর কর্মীরা উদয়াস্ত কাজ করছেন। অনেকেই গত চারদিন স্নান পর্যন্ত করেননি। তারপরেও তাদের সমালোচনা করা হচ্ছে। এটা বোধহয় ঠিক নয়। সাড়ে পাঁচ হাজার দু’দিনে কাটা তিনি কেন কারও পক্ষেও করা সম্ভব নয়। যিনি করতে পারবেন তিনি ভগবান।

তিনি বলেন বিরোধীদের জবাব দেওয়ার আমার কাছে কোনো সুযোগ নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে কলকাতার দায়িত্ব দিয়েছেন। কলকাতাকে আরো সুন্দর করব, মানুষের জন্য কাজ করব। আমি বিরোধীদের বলছি, এটা রাজনীতি করার সময় নয়। আসুন সবাই মানুষের পাশে দাঁড়াই। সকলে মিলে মানুষের জন্য কাজ করি।

সম্পর্কিত পোস্ট