কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন না রাজ্যের প্রাক্তন আমলারা

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ দীর্ঘদিন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য সচিবের দায়িত্ব সামলেছেন অর্ধেন্দু। ১৯৭৬ ব্যাচের আইএএস প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সময়ে অর্থাৎ ২০১০ সালে মুখ্য সচিবের দায়িত্ব সামলেছেন সফলভাবে। রাজ্যের বর্তমান মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলি নিয়ে তিনি প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন।

তার মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের উচিত মুখ্যসচিবের বদলির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়া। স্পষ্ট ভাষায় তিনি বলেন এটা অন্যায় কাজ হয়েছে এবং অনুচিত কাজ হয়েছে। তার মতে আইনগতভাবেও এই নির্দেশ সঠিক নয়।

অর্ধেন্দু বাবু বলেছেন, আইনের গোড়ার কথা হল যে কোনও নির্দেশ যুক্তিযুক্ত হতে হবে। যুক্তি দিয়ে যা প্রতিষ্ঠা করা যায় না তাকে আইন সমর্থন করে না। একে আইনের ভাষায় বলে কালারেবল এক্সেস অফ পাওয়ার। আমার মনে হয় আদালতে গেলে বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে।

একইভাবে গোটা বিষয়টিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবেই দেখছেন প্রাক্তন আইএএস জহর সরকার। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত অন্যায়, অভূতপূর্ব এবং বে-আইনি। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়না। আগে কখনোই নেওয়া হয়নি।

একজন ব্যক্তির চাকরি জীবনের শেষ দিনে তাকে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ে যাবে, আইন না জেনে অশিক্ষিত লোকেরা যা করে সবকিছু মানা যায় না।’ তিনি আরও বলেন, যদি কেন্দ্র আগামীতে এর বিরুদ্ধে কোনো ডিপার্টমেন্টাল অ্যাকশন নেয়, তা ধোপে টিকবে না।

এখানেই শেষ নয়, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের পেছনে রাজনীতি দেখছেন এই প্রাক্তন আমলা। তিনি বলেন, কোনও ক্যাডার অফিসারকে ডেপুটেশনে নিতে হলে তাঁর ও রাজ্য সরকারের মতামত ও অন্যান্য ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়। উনি একটি রাজ্যের মুখ্যসচিব। কোনও আইনি পথে না-হেঁটে স্রেফ গুন্ডাগিরি করছে কেন্দ্রীয় সরকার।

জহর বাবুর আরও মত, ‘আসলে রাজ্যে ভোটে গোহারান হেরেছে বিজেপি। ওরা মনে করেছিল, ভোট কিনে নেবে। সফল হয়নি। তাই এই আক্রমণ। এটা ভারতের গণতন্ত্রের ওপর আঘাত। এখন প্রতিহিংসার বশে আক্রমণ করছে অফিসারদের।’

৫ জুন দলের বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠক ডাকলেন মমতা

রাজ্যের অপর প্রাক্তন আমলা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থ সচিব ও আইএস এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি সুনীল মিত্র বলেছেন, এমন সিদ্ধান্ত অতীতে কখনও নেওয়া হয়েছে বলে আমার জানা নেই। সে দিক থেকে দেখলে এই ঘটনা অভূতপূর্ব।

সবচেয়ে বড় কথা রাজ্যের তরফ থেকে নাম পাঠানো হয়নি এমন কোন অফিসারকে এইভাবে কেন্দ্র ডাকতে পারে কিনা সন্দেহ। কেন্দ্র বললেও রাজ্যের হাতে ক্ষমতা রয়েছে আগেও তাকে ছাড়া যাবে কিনা। সবচেয়ে অদ্ভুত বিষয় চারদিন আগেই কেন্দ্র রাজ্যের দাবি মেনে এক্সটেনশন দিল। তখন কেন্দ্র মনে করল করোনা আবহে এই অফিসারকে দরকার।

মাত্র চারদিনের মধ্যেই সেই সিদ্ধান্তের পরিবর্তনের প্রয়োজন হল কেন? সাধারণত আমরা যা আমরা হিসাবে কাজ করি তারা রাজনীতি বুঝিনা। তবে কি বলতে হবে এই সিদ্ধান্ত রাজনীতির জন্যই নেওয়া হল। একইসঙ্গে তিনি এও বলেন, যেভাবে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে রাজ্যের কোন প্রতিনিধি মন্ত্রী বা আমলা থাকল না এমন ঘটনাও অভূতপূর্ব।

সম্পর্কিত পোস্ট