হাইকমান্ডকে নিশানা করা জি-২৩ একই দোষে দুষ্ট!
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক :জি-২৩ কে নিয়েছে জেরবার কংগ্রেস হাইকমান্ড। অবশ্য সম্প্রতি দু’পক্ষই সুর কিছুটা নরম করেছে। তাই কংগ্রেসের বড়সড় ভাঙনের আশঙ্কা আপাতত ঠেকান গেল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
কিন্তু যে গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা, কপিল সিব্বলদের ক্ষোভ নিয়ে এতো কথা হচ্ছে তাঁরা দলের হাল ধরলে কি পরিস্থিতি পাল্টে যাবে? তবে কি ক্ষমতা ধরে রাখতে এই বিক্ষুব্ধ নেতাদের কোণঠাসা করেছে গান্ধি পরিবার?
কংগ্রেসের সমস্যাটা আসলে বেশ জটিল। বিক্ষুব্ধ নেতারা যে সমস্ত অভিযোগ তুলছেন তার অনেকগুলিরই সারবত্তা আছে। কিন্তু একই অভিযোগ তাঁদের বিরুদ্ধেও তোলা যায়!
গুলাম নবিরা কংগ্রেস হাইকমান্ডের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক অদক্ষতা ও জনবিচ্ছিন্নতার অভিযোগ তুলেছেন। এদিকে রাজ্যে রাজ্যে এই বিক্ষুব্ধ নেতাদের নিয়ে ঠিক একইরকম অভিযোগ আছে লিচুতলার কংগ্রেস কর্মীদের।
কাশ্মীরে গুলাম নবি আজাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ হল তিনি রাজ্যে দলকে সময় দেন না। কোনও আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন না। উল্টে শাসক বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা করে চলেন! এই নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের একটা বড় অংশ তাঁর প্রতি প্রবল অসন্তুষ্ট।
বিক্ষুব্ধদের মধ্যে অন্যতম পরিচিত মুখ শশী থারুরের বিরুদ্ধে কেরল কংগ্রেসের অভিযোগ তিনি বরাবরই নিচুতলার কর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব রেখে চলেন।
‘ইন্টেলেকচুয়াল’ থারুর এলিট ক্লাসের মধ্যেই বিচরণ করতে স্বাচ্ছন্দ্য এমনও অভিযোগ উঠেছে বারে বারে। ইউপিএ আমলে কংগ্রেসের প্রভাবশালী মন্ত্রী কপিল সিব্বলের নিজের রাজ্য দিল্লিতে জনভিত্তি বলে কিছু নেই। তাঁকে পুরসভা নির্বাচনে দাঁড় করালে কাউন্সিলর পদেও জিততে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে।
উল্টে দিল্লিতে শীলা দীক্ষিত যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বারবার তাঁর বিরোধিতা করে বিতর্কে জড়িয়েছেন সিব্বল। তিনিও কর্মীদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এলিট ক্লাসের রাজনীতি করেন বলে অভিযোগ।
এই পরিস্থিতিতে বিক্ষুব্ধ নেতাদের হাতে গান্ধি পরিবার যদি দলের যাবতীয় ভার সমর্পন করে তাতেও কংগ্রেসের হাল ফেরা কঠিন। বরং শতাব্দী প্রাচীন দলটির শেষ তাতে আরেকটু ত্বরান্বিত হবে। কারণ আজও দেশের অসংখ্য মানুষ গান্ধি পরিবারের প্রতি বিশ্বাস থাকে ‘হাতে’ আস্থা রাখে। কিন্তু সেই গান্ধি পরিবারই যদি কংগ্রেসে কোণঠাসা হয়ে পড়ে তবে পরিস্থিতি সামলানো বেশ কঠিন হবে কংগ্রেসের পক্ষে।
এক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠতে পারে কংগ্রেসে আশার আলো কি কিছুই নেই? আসলে বাংলার অধীর চৌধুরী, রাজস্থানের শচীন পাইলট, ছত্তিশগড়ের ভূপেশ বাঘেলের মতো নেতারা যদি সর্বভারতীয় স্তরে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পান তাহলে হয়তো কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়ালেও দাঁড়াতে পারে!