“তিন নম্বর পাতার শেষে নাম রয়েছে ধনকরের, উনি আর আমাদের রাজ্যপাল এক ব্যক্তি কিনা সেটা ওনাকেই প্রমাণ করতে হবে”: সুখেন্দুশেখর রায়
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ জৈন হাওয়ালা মামলায় তার যোগ সম্পর্কে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর অর্ধসত্য বলছেন। তৃণমূল ভবনে আজ এক সাংবাদিক বৈঠকে দলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, রাজ্যপাল যা বলেছেন তা অর্ধ সত্য। ডায়েরির পাতায় শেষ নাম রয়েছে জগদীপ ধনকরের। কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানো জগদীপ ধনখড় এবং রাজ্যপাল একই ব্যাক্তি কিনা তা তাঁর জানা নেই। রাজ্যপালকেই বিষয়টি স্পষ্ট করতে হবে। সুখেন্দু শেখর রায় আরও বলেন, তিনি আরও বলেন ওই মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। ফলে মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই।
রাজ্যপালের সাম্প্রতিক উত্তরবঙ্গ সফর প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ওই সফরে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিজেপি নেতাদের সঙ্গে গিয়ে বৈঠক করছেন রাজ্যপাল। ক্যাগকে দিয়ে জিটিএ-এর অডিট করতে বলেছেন অথচ সমস্ত তথ্যই পার্বত্য দপ্তরের মন্ত্রীর কাছে রয়েছে। রাজ্যপাল চাইলেই তা পেতে পারতেন। কিন্তু আগে তা না দেখেই অডিটে কারচুপির অভিযোগ করে আদতে রাজ্যপাল সরকারকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছেন।
অন্যদিকে, তিনি ফেসবুক-টুইটারের মত সামাজিক মাধ্যমের অপব্যবহার করছেন বলেন অভিযোগ করেন ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দিষ্ট বিধি প্রণয়ন করা উচিত।
আগামী তিন মাসের মধ্যে শেষ হবে আধার-রেশন সংযুক্তি, উদ্যোগ রাজ্যের
উল্লেখ্য, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখরকে সরাসরি দুর্নীতিগ্রস্ত বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৯৬ সালের জৈন হাওয়ালা কেলেঙ্কারির চার্জশিটে ধনখড়ের নাম ছিল বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন। মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভে ফেটে পড়ে বলেন, “আমি এরকম রাজ্যপাল আগে দেখিনি৷ উনি পুরোপুরি পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন৷ এমন রাজ্যপালকে বাংলা চাই না৷’’
রাজ্যপাল, কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপিকে একই বন্ধনীতে রেখে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলা ভাগের চক্রান্ত চলছে৷ পরিকল্পিতভাবে উত্তরবঙ্গে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে৷ বাংলার মানুষ সবই দেখতে পাচ্ছেন৷’’ এদিনই মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘‘আমি থাকতে বাংলাকে ভাগ হতে দেব না৷’’
মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক শেষের পরেই, সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকর। তিনি দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে কোনো দিন কোনো চার্জশিট দেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই পদে থেকে অসত্য অভিযোগ করায় তিনি অত্যন্ত ব্যথিত।
মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখুন, হাওলা কেলেঙ্কারিতে এখনো পর্যন্ত কেউ অভিযুক্ত হয়নি। তাঁর দাবি মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ সত্য থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছে। শুধুমাত্র উত্তেজনা তৈরি করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর মত একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ এই রকম অভিযোগ করবেন তা তিনি কিছুতেই মানতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পাল্টা তৃণমূলকে আক্রমণ করতেও তিনি পিছপা হননি। প্রয়াত তৃণমূল নেতা অজিত পাঁজার নাম করে তিনি বলেন হাওলা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্তের তালিকায় ছিল তাঁর নাম। এমনকি চার্জশিটও জমা পড়েছিল আদালতে। যদিও পরবর্তীকালে অভিযোগ থেকে মুক্ত হয়েছিলেন তিনি।
একইসঙ্গে রাজ্যপাল বলেন দেশের প্রাক্তন অর্থ এবং বিদেশমন্ত্রী যশবন্ত সিনহার নাম হাওলা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্তের তালিকায় ছিল তার নাম। চার্জশিট জমা পড়ে কোর্টে। তিনি অজিত পাঁজার মত পরে অভিযোগ মুক্ত হন। তাঁর কাছ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী গোটা বিষয়টা জেনে নিলে ভালো করতেন।