দলবদল নাকি স্বেচ্ছাবসর ? শিশির অধিকারীর রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে জল্পনা …

সহেলী চক্রবর্তী

বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে তরজা অব্যাহত শাসক – বিরোধী শিবিরে। সৌমেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তা বেড়েছে আরো বহুগুণ।

তৃণমূলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে বর্ষীয়ান সাংসদ ও শুভেন্দু অধিকারীর বাবা শিশির অধিকারীর অবস্থান নিয়ে। তবে ছোট ছেলে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর শিশির অধিকারী কিছুটা হলেও নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ পরিষ্কার করে দিয়েছেন, বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

৮১ বছর বয়সী এই সাংসদের কথায় ছেলের বিরুদ্ধে মুখ খোলা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, অনেক অভিমান থেকে শুভেন্দু ও সৌমেন্দু এমন একটি সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।

তিনি আরো জানান, এখন করোনার জন্য তিনি বাড়ি থেকে বেরোতে পারছেন না। তাঁর শারীরিক অবস্থার কথা মাথায় রেখেই ছেলেরা তাঁকে নিষেধ করেছেন বাড়ি থেকে বেরোতে। তবে ভ্যাকসিন বাজারে এলে তিনি ভ্যাকসিন নিয়ে দিল্লি যাবেন বলে জানিয়েছিলেন।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/mamata-will-bring-proposal-against-farm-law-of-central-government/

এখান থেকে নতুন জল্পনা সূত্রপাত। এখান থেকেই উঠছে দুটি প্রশ্ন। দিল্লি গিয়ে কি করবেন তিনি- প্রথমত, বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন কি? দ্বিতীয়ত নাকি ২১এর ভোটের আগে রাজনৈতিক জীবন থেকে স্বেচ্ছাবসর নেবেন শিশির অধিকারী?

রাজনৈতিক মহলের মতে, একদিকে তিনি যেমন ছেলেদের বিরুদ্ধাচারণ করতে পারছেন না তেমনি এতদিন যাবৎ যে দলের হয়ে তিনি কাজ করেছেন সেই দল এবং নেত্রীর বিপক্ষেও যেতে পারছেন না। এক কথায় এই মুহূর্তে তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে দোদুল্যমান পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, শিশির অধিকারী যদি এই বয়সে এসে বিজেপিতে যোগদান করেন, তাহলে একথা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় যে – অচিরেই মেদিনীপুরে জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়বে অধিকারী পরিবারের।

কারণ আমজনতা শিশির অধিকারীর মত বর্ষীয়ান সাংসদের ভোটের আগে দলবদল ভালোভাবে কিছুতেই নেবেন না। একইসঙ্গে, প্রশ্ন উঠবে দীর্ঘদিন ধরে মেদিনীপুরের মাটিতে একচ্ছত্র ভাবে রাজ করা অধিকারী পরিবারের নীতি আদর্শ দায়বদ্ধতা নিয়ে।

ইতিমধ্যেই শুভেন্দু বিজেপিতে যোগদানের পর থেকে অধিকারী পরিবারের উপর আস্থা রাখতে পারছেন না শাসক শিবিরের একাধিক নেতৃত্ব।

কারণ সাধারণ কর্মীরা কিছুতেই অধিকারী পরিবারের দীর্ঘ দিনের রাজত্ব আর মানতে চাইছে না। রীতিমতো সন্দেহ দানা বাধতে শুরু করেছে। আর সৌমেন্দু বিজেপি তে যাওয়ার পর সন্দেহ’তে কার্যত সিলমোহর বসাতে শুরু করেছেন অনেকই।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/mamata-demanded-a-national-holiday-on-netajis-125th-birth-anniversary/

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বর্ষীয়ান সাংসদ শিশির অধিকারী বাবা হিসেবে ছেলেদের বিরুদ্ধে যদি না বলতে পারেন তাহলে দলবদল না করে স্বেচ্ছাবসর গ্রহণ করাই শ্রেয়। এতে যেমন বজায় থাকবে বাবা হিসেবে শিশির অধিকারীর কর্তব্য। তেমনি একজন দলীয় কর্মী হিসেবে দলের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা।

তবে শিশির অধিকারী দলের প্রতি ক্ষুব্ধ তা তাঁর বক্তব্যে পরিষ্কার। এটা বোধহয় কোথাও বুঝতে বাকি নেই যে, ছেলেদের বিপক্ষে যাওয়া থেকে নিজেকে বাঁচাতে তিনি দলীয় কর্মসূচি এবং কোন জনসভায় অংশ নিচ্ছেন না।

সরাসরি সৌগত রায় ফিরহাদ হাকিম এর প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। প্রকাশ্য জনসভা থেকে তার পরিবারকে মীরজাফর এবং বিশ্বাসঘাতক তকমা দেওয়ার জন্য।

নির্বাচনের আর খুব বেশি দেরি নেই। ২৯৪ টি আসনে যথাযথ প্রার্থী বাছাই করে অন্তত ২০০ টি সিট নিজেদের দখলে রাখা শাসক শিবিরের কাছে প্রেস্টিজ ফাইট। তবে অধিকারী পরিবারের ক্যারিশমা ছাড়া মেদিনীপুর শহর জঙ্গলমহলে আদৌ নিজেদের জমি ধরে রাখতে সক্ষম হয় কিনা জোড়া ফুল সেটাই বড় প্রশ্ন।

সম্পর্কিত পোস্ট