আফগানিস্তানের এক চতুর্থাংশে তালিবান সরকার, মাজার ই শরিফের ভারতীয়দের উদ্ধার
দখল করা এলাকায় গণহত্যা শুরু করল জঙ্গিরা
দ্য কোয়ারি ডেস্ক: একেবারে শেষ মুহূর্তে ভারতীয় নাগরিকদের উদ্ধারের পরেই তালিবান দখলে চলে গেল আফগানিস্তানের চতুর্থ বৃহত্তম শহর মাজার ই শরিফ। এখান থেকেই লড়াই করার বার্তা দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। তাঁর সফরকালেই আফগান সেনার হাতছাড়া হলো অতি গুরুত্বপূর্ণ শহরটি।
বিবিসি জানাচ্ছে, বালখ প্রদেশের মাজার ই শরিফ তালিবান দখলে চলে গিয়েছে। আফগানিস্তানের এক চতুর্থাংশ এখন সরকার হাতছাড়া। ৯টি প্রদেশে চলছে তালিবান শাসন। প্রায় সব এলাকা থেকে পিছু হটছে সেনা। তবে মার্কিন সেনা নামমাত্র অভিযান জারি রেখেছে। তারা ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুরোপুরি আফগানিস্তান ত্যাগ করবে।
এদিকে মাজার ই শরিফ তালিবান দখলে যেতেই রাজধানী কাবুল জুড়ে নেমেছে তীব্র আতঙ্ক। কাবুলে ফের তালিবান শাসন হওয়া সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করা হচ্ছে।
আফগানিস্তানের পুরো নিয়ন্ত্রণ কি তালিবান দখলে ফের চলে যাবে ? এই প্রশ্নে আলোড়িত বিশ্ব। একের পর এক প্রদেশে ভয়াবহ সন্ত্রাস কায়েম করেছে তালিবান। দোহায় তালিবান প্রতিনিধিদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠকে নির্ধারিত চুক্তি মেনেই সেনা অপসারণের কাজ শুরু করেছে ওয়াশিংটন। তাদের আফগানিস্তান থেকে সম্পূর্ণ চলে যাওয়ার পরেই কাবুল ঘিরে আক্রমণ শুরু করবে তালিবান।
রুশ সংবাদ সংস্থা তাস জানাচ্ছে, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তানের লাগোয়া আফগান সীমান্ত পুরো তালিবান দখলে। তবে তালিবান জঙ্গিরা সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টা করছে না।
সাবেক সোভিয়েত জমানায় আফগানিস্তানে ঢোকা রুশ সেনা ফের একবার অভিযান করবে? ক্রেমলিন নীরব। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ক্রেমলিনে ডেকে পাঠিয়েছেন আশি নব্বই দশকের সোভিয়েত সেনা কর্তাদের, যারা আফগানিস্তান নিয়ে বিশেষজ্ঞ।
আশির দশকে সোভিয়েত লাল ফৌজ তৎকালীন দুই অঙ্গ প্রদেশ তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে আফগানিস্তানে ঢুকেছিল। নব্বই দশকে সোভিয়েত পতনের পর সেনা প্রত্যাহার করে মস্কো। বর্তমানে তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তান দুটি আলাদা দেশ।
রাশিয়া তার বিদেশে সব থেকে বড় সামরিক ঘাঁটি তাজিকিস্তানেই পরিচালনা করে। আফগান সীমান্ত তালিবান দখলে যাওয়ার পর উদ্বিঘ্ন রুশ সরকার সরাসরি তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তান সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে সেনা মহড়া চালাচ্ছে।
আফগান সীমান্তে ভারি ট্যাংক বহরে, সাঁজোয়া গাড়ি, সেনা কুচকাওয়াজ চলছে। আকাশে চক্কর কাটছে মিসাইল বহনকারী হেলিকপ্টার। রুশ সেনার সংখ্যা আরও বাড়িয়েছে মস্কো। তাজিক ও উজবেক সরকারও একইভাবে মহড়া নিচ্ছে। রাশিয়ার চিন্তা আফগানিস্তানে ফের তালিবান সরকার হলে পুরো মধ্য এশিয়ায় ছড়াবে অশান্তি।