বারাসাতের ঐতিহ্যবাহী কালীপুজো, করোনাকালে আড়ম্বর কমলেও অটুট জৌলুস
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ কলকাতায় দুর্গা (Durgapujo), চন্দননগর জগদ্ধাত্রী পুজোয় (Jagaddhatri pujo) বিখ্যাত আর বারাসত বিখ্যাত কালীপুজোর (Kalipujo) জন্য। দশ কিলোমিটার বৃত্তের মধ্যে ছোটো বড়ো মিলিয়ে ৭০ টি পুজো হয় বারাসতে (Barasat)। বারাসতের পুজোর বয়স গড়ে ৬০ বছর পেরিয়েছে। কালী মুলত ডাকাতদের দেবী।
ব্রহ্মযামল তন্ত্রমতে, দেবী কালী হলেন বাংলার অধিষ্ঠাত্রী। বারাসতে কালীপুজোর এমন রমরমার আসল কারণ হিসেবে অনেকেই মজা করে বলেন, ‘বারাসত আদতে ডাকাতের জায়গা’। তবে ইতিহাস বলছে অন্য কথা।
বাজির দামামা সাথে আলোর রোশনাই, এই কালীপূজোর আনন্দ কে শতগুণ বাড়িয়ে তোলে; এসবের মাঝে এই বারাসাতের সাথে সমার্থক হয়ে যাওয়া কালীপূজোর ইতিহাস কোথাও কি চাপা পড়ে যায়?
বারাসতের প্রথম বিখ্যাত মন্দির হল করুনাময়ী কালীমন্দির (Karunamoyee kali temple)। মোঘল সম্রাট আকবরের রাজপুত সেনাপতি মানসিংহ বারাসাতের আমডাঙায় সূক্ষ্মাবতী নদীর তীরে এটি প্রতিষ্ঠা করেন।
আমডাঙা মন্দিরে মা কালীকে পুজো করে হাতনাতে সুফল পাওয়া বারাসতবাসী শুরু করলেন কালীপুজো। আর এই কালীপুজো ঘিরে শুরু থিম লড়াইয়ের টেক্কা।
বিগ বাজেটের কালীপুজোর জন্য খ্যাত বারাসত। এবার বড় কোনও কালী পুজো হবে না। করোনা পরবর্তীকালে দেশ ও রাজ্যের মানুষের আর্থসামাজিক পরিস্থিতি খারাপ। তাদের কথা মাথায় রেখে কালী পুজোতে কোনও রকম অতি আড়ম্বর না করার সিদ্ধান্ত এবারও নেওয়া হয়েছে সংগঠকদের তরফে।
কালীপুজোর খরচ থেকে বাঁচানো টাকা, খরচ করা হবে কর্মহীন ও ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের জন্য। এবার বড় প্যান্ডেল না বানিয়ে সেই টাকায় গরীব মানুষদের নতুন জামা কাপড় ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হবে।
বারাসতের কালী পুজোর প্যান্ডেল, প্রতিমা ও আলোকসজ্জার অভিনবত্ব এবং ঐতিহ্য সর্বজন জ্ঞাত। ফলে শুধু এই জেলা নয় অন্য জেলা ও রাজ্য থেকে কালীঠাকুর দেখতে আসেন।
কালীপূজোর বারাসাত এখানে আসা অগুন্তি দর্শনার্থীকে প্রতি বছর উপহার দিয়ে যায় অনেক নয়নাভিরাম শিল্পকর্ম, নানান অভিনব ভাবনা, সময় আর যুগের সঙ্গে বিস্মৃত হয়ে যাওয়া নানান অবাক করে দেওয়া হাতের কাজ, আর সাথে আরও একটা বছর অপেক্ষা করার জন্য প্রচুর রশদ।