গরু ও কয়লা পাচারের টাকায় হাসপাতাল ! বারিক বিশ্বাসকে নিজাম প্যালেসে তলব CBI-র
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ এই মুহূর্তে গরু এবং কয়লা পাচারকারীদের ধরতে রীতিমতো প্রতিদিন তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছেন সিবিআই আধিকারিকরা। এনামুলকে গ্রেফতারের পর থেকেই একের পর এক মাথাদের ধরতে তৎপর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
গরু ও কয়লা পাচারকারীদের ধরতে গিয়ে উঠে আসছে রাজনৈতিক যোগসুত্র। এই পাচার কারবারিদের সঙ্গে যারা পরোক্ষে জড়িত তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন কার্যত নজর কেড়েছে গোয়েন্দার আধিকারিকদের।
গরু এবং কয়লা পাচারকারীদের টাকায় গড়ে উঠেছে আস্ত একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ। সঙ্গে হাসপাতাল। তদন্ত করতে গিয়ে এমনই একটি ঘটনায় চক্ষু চড়কগাছ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকদের। হাসপাতালটি তৈরি হয়েছে দুর্গাপুরে।
ডিরেক্টর পদে রয়েছেন চারজন। সেই চারজনের অন্যতম একজন বিনয় মিশ্র। এই মুহূর্তে যাকে হন্যে হয়ে খুঁজে সিবিআই। হাসপাতালের বিষয়টি সিবিআইয়ের নজরে আসতে গা ঢাকা দিয়েছেন বাকি তিন ডিরেক্টর।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার অনুমান তারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আর যদি তা না হয়ে থাকে তাহলে খাতায়-কলমে তাদের অস্তিত্ব থাকলেও বাস্তবে নেই। এককথায় গোটাটাই আইওয়াশ। সিবিআইয়ের অনুমান হয়তো বাকি তিন জনের নাম করে ভুয়ো নথিপত্র বানিয়ে বকলমের গোটা হাসপাতালটি চালাত বিনয় মিশ্র। হয়তো এর নেপথ্যে রয়েছে আরো বড় কোন প্রভাবশালী মাথা।
আজ পুরুলিয়ায় শুভেন্দু, সভাস্থলের পাশে মিলল পেট্রল ক্যান, উত্তেজনার মাঝে কড়া নিরাপত্তা
ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। হাসপাতালে বোর্ড অফ ডিরেক্টর কারা, মিটিংয়ে কারা থাকতেন, সর্বোপরি হাসপাতালে বিনিয়োগ কোথা থেকে আসতো সমস্ত বিষয়ে খুঁটিনাটি জানতে শুরু হয়েছে তদন্ত।
অন্যদিকে আজই গরু পাচারে অভিযুক্তের তালিকায় উঠে আসা আব্দুল বারিক বিশ্বাসকে নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে বারিক বিশ্বাসকে শিখন্ডী খাড়া করে বাকিদের খোঁজ পাওয়া যেতে পারে।
আব্দুল বারিক বিশ্বাস ইমপোর্ট এবং এক্সপোর্ট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। জানা গেছে তিনি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ। ফলে তার বাড়িতে অবাধ যাতায়াত চলত তৃণমূলের নেতাকর্মীদের।
সিবিআই সূত্রে খবর, ব্যবসার পেছনেই চলতো গরু পাচারকারীদের সঙ্গে যাবতীয় কথাবার্তা। বসিরহাটের এই ব্যবসায়ী গরু পাচারের টাকার লেনদেনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত বলে দাবি করছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আধিকারিকরা।
২০০৬ সালে বামেদের আমলে বারিক বিশ্বাসের পরিবার রাজনৈতিক ময়দানে প্রবেশ করে। ২০০৮ সালে বামেদের পঞ্চায়েত নির্বাচনে পরাজয়ের পর তিনি শিবির বদল করে তৃণমূলের নাম লেখান।
সিবিআই সূত্রে দাবি, বারিক বিশ্বাসের বিরুদ্ধে একাধিক অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বেশ কয়েকবার বিএসএফ, কেন্দ্রীয় সরকারের শুল্ক বিভাগ ও আয়কর দপ্তরের জেরার মুখে পড়তে হয়েছে। ২০১১ সালের পর ব্যবসা রমরমা বাড়ি বারিক বিশ্বাসের। তার স্ত্রী এবং ভাই জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষের পদে বসেন। ঘনিষ্ঠতা বাড়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও।
সম্প্রতি সিবিআই এর একটি দল বারেক বিশ্বাসের বসিরহাটের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায়। বেশকিছু নথিপত্র সিবিআই এর হাতে আসে। এবার মুখোমুখি তলব করা হয় তাকে। মনে করা হচ্ছে বারিক বিশ্বাসের মাধ্যমেই আরো বেশ কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে বাগে আনতে সক্ষম হবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।