রাজনীতির উর্দ্ধে মানবিকতা, মুখ্যমন্ত্রীকে স্যালুট
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজনীতিতে আদর্শ সবার সবার নিজের। তাই বলে নীতি যে একে অপরের ভিন্ন হবে না এটাই দস্তুর। সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে তৈরি হয় রাজনৈতিক দল। তাতে যুযুধান শিবিরের সঙ্গে যে লড়াই সেটা রাজনৈতিক।
সেখানে কোনো ভাবেই যেন ব্যক্তিগত জীবন উঠে না আসে এটাই শ্রেয়। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষপটে দাঁড়িয়ে বদলেছে রাজনীতির সংজ্ঞা। মাঠে ময়দানে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ। সঙ্গে উঠে আসে ব্যক্তিগত জীবনের নানা প্রসঙ্গ।
তবে সেসবের উর্ধ্বে গিয়ে যদি মানবিকতার দিক থেকে ভাবা যায় তাহলে হয়ত লড়াই করা অনেক সহজ হয়। কারণ দিনের শেষে রাজনীতির আঙিনা ছেড়ে আমরা সবাই মানুষ। একে অপরের বিপদে পাশে দাঁড়াব এটাই কাম্য। আর এই বিষয়ে যিনি পথ প্রদর্শক তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ৯ ডিসেম্বর বুধবার শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে ভর্তি হন উডল্যাণ্ড নার্সিংহোমে। সেদিন বনগাঁয় একটি জনসভায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুদ্ধবাবুর শারীরিক অসুস্থতার খবর পেয়েই সেখানে প্রতিনিধি হিসাবে পাঠান ফিরহাদ হাকিমকে।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/nadia-political-situation-2021tmcinner-clash/
তারপর নিজে পৌঁছন হাসপতালে। খোঁজ নেন কেমন আছেন বুদ্ধবাবু। তারপর বাবার জন্য উৎকন্ঠিত মুখে দাঁড়িয়ে থাকা কন্যা সুচরিতার কাঁধে হাত রেখে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে এলেন মুখ্যমন্ত্রী। বুদ্ধবাবু সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।
গোটা বাংলা এই ছবি দেখল। তবে এটা প্রথমবার না। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অসুস্থতার সময়ে সেখানেও নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সব রকম ব্যবস্থা করেছিলেন।
অভিভাবকের মত পৌলমী বসুর সঙ্গে ছিলেন বাবার শেষকৃত্য পর্যন্ত। পরবর্তীতে পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দেন তিনি। সংবাদ মাধ্যমে যা স্বীকার করেন পৌলমী নিজেও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মানবিকতাকে স্যালুট।
রাজনীতির মাঠে প্রতিপক্ষ হলেও তিনি যে কতটা মানবিক সেটা তিনি সরকারে আসার পর থেকে বারবার প্রমাণ রেখেছেন। প্রকাশ্য বৈঠক থেকে কোভিডের সময় তিনি বিমান বসুকে ধমক দিয়ে বলেছিলেন, “মাস্ক পড়ুন,বয়স হচ্ছে তো।” লকেট চট্টোপাধ্যায় থেকে আব্দুল মান্নান সব ক্ষেত্রেই কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি খোঁজ নিয়েছেন।
রাজনীতির ময়দানে বামেদেরর তিনি যতই কটাক্ষ করুন না কেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা বরাবর অটুট থেকেছে। প্রত্যেকবারের মত এবারেও তিনি পুজোর সময় সস্ত্রীক বুদ্ধবাবুকে উপহার পাঠান। যে বামেদের সঙ্গে তিনি লড়াই করেছেন, ক্ষমতায় এসেছেন। তবে সেই রাজনৈতিক লড়াইকে তিনি ব্যক্তিগত পর্যায়ে নিয়ে যান নি।
তাঁর ঘোরতর বিরোধীরাও প্রকাশ্যে না হলেও গোপনে স্বীকার করেন যে, তিনি যা পারেন তা সারা দেশের কোনও জনপ্রতিনিধির পক্ষেই সম্ভব নয়। যখন বিরোধী নেত্রী ছিলেন তখনও তা প্রমাণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/politics-or-potatoes-whose-price-is-higher-before-the-election/
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা প্রয়োজন, ৯ তারিখ যখন বুদ্ধবাবুর অসুস্থতার খবরে তড়িঘড়ি নার্সিংহোমে পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়,সেদিন রাজ্য সফরে আসেন জেপি নাড্ডা। এখনো অবদি বিজেপির কোনো নেতৃত্বকেই দেখা যায়নি বুদ্ধবাবুর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে।
বঙ্গ সফর থেকে ফিরে করোনা আক্রান্ত হন জেপি নাড্ডা। টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী নাড্ডার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। এসবের মাঝেই শুভেন্দু অধিকারী যোগ দিলেন বিজেপিতে। বললেন তিনি নাকি যখন কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন তখন মুখ্যমন্ত্রী খোঁজ নেননি।
যদিও তথ্য বলছে অন্যকথা। শুভেন্দু করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরই শিশির অধিকারীকে ফোন করে মুখ্যমন্ত্রী খোঁজ নেন। সেইসঙ্গে বার্তা দেন পাশে থাকার।
মুখ্যমন্ত্রী যে মানবিকতার পরিচয় দিয়েচছেন, তা সত্যিই বিরল। হয়ত একজন প্রকৃত রাজনীতিবিদের এমনই হওয়া উচিত। আপনারা এই মেলবন্ধনের ধারায় চিরকাল অটুট থাকুক মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক।