“নিজের পরিবার সহ ৬২ জন তৃণমূল কর্মীকে চাকরি দিয়েছি”- TET নিয়ে বিশ্বজিৎ কুন্ডুর মন্তব্যে অস্বস্তিতে শাসকদল
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী হিসাবে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু। সেসময় দলবদলের প্রাকমুহুর্তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর ক্ষনিকের মত বদল করে তিনি বলেছিলেন তৃণমূলেই থাকছেন।
তবে রাত পোহাতে না পোহাতেই সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন। রাতারাতি মেদিনীপুরে অমিত শাহের মঞ্চে শুভেন্দু অধিকারীর পাশে হাজির হয়ে যান বিশ্বজিৎ কুণ্ডু।
একদিকে যখন দলবদলি নেতাদের তোপ দাগতে ছাড়ছেনা শাসক শিবির, তখনই উঠে আসছে একের পর এক অভিযোগ। তেমনি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের টেট নিয়ে নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল কালনার বিধায়কের বিরুদ্ধে।
দীর্ঘদিন ধরে চাকরির দাবিতে রাস্তায় নেমে যেসব শিক্ষকরা শাসকদলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাদের সেই অভিযোগ কতখানি যে সত্যিই সেটা বিশ্বজিৎ কুণ্ডু প্রমাণ করে দিলেন। স্বীকার করলেন তার স্ত্রী এবং বৌদি চাকরি পেয়েছেন। একইসঙ্গে বললেন ৬২ জন তৃণমূল কর্মী চাকরি পেয়েছে।
নিঃসন্দেহে এই তথ্য সামনে আসার পর শাসক শিবিরের সাঁড়াশি চাপছে বাড়বেই তা স্পষ্ট। তবে প্রশ্ন এখানেই, যদি এই দাবিকে সামনে রেখে তিনি দল ছেড়ে থাকেন তাহলে সেটা আগে কেন করলেন না?
তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর কথায় ২০১৪ সালে যে নিয়োগ হয়েছিল তাতে বেশিরভাগটাই তৃণমূলের কর্মীরা চাকরি পেয়েছিল। রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ থেকে শুরু করে তপন চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলের নাম করে তিনি বলেন এই নেতারা অনেককে প্রাইমারিতে চাকরি দিয়েছেন।
যদিও স্বপন দেবনাথ এই অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন। অন্যদিকে তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন তার মেয়ে চাকরি পেয়েছেন। তবে তার যা যোগ্যতা সেখানে বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর স্ত্রী এবং বৌদির যোগ্যতা সম্পূর্ণ আলাদা।
তপন বাবুর কথায়, “ওনাকে প্রমাণ করতে হবে যে আমার মেয়ের যোগ্যতা ওর গুষ্টির লোকের থেকে কম। আমি সার্টিফিকেট দেখাতে পারব। অন্যথায় বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।”
উল্লেখ্য মঙ্গলবার বারুইপুরের সভায় বিজেপিতে গিয়ে যোগ দিয়েছেন দীপক হালদার। সোমবারই তিনি স্পিড পোস্টের মাধ্যমে উচ্চ নেত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
দলবদলের পরেই দীপক বাবুর বিরুদ্ধে ডায়মন্ড হারবারে দুর্নীতির পোস্টার দেখা গেল। সেই পোস্টারে লেখা রয়েছে জাহাজ ইউনিয়ন থেকে টাকা নেওয়া এবং টাকার বিনিময়ে কাজ পাইয়ে দেওয়া মতো বিভিন্ন দুর্নীতি মূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন দীপক হালদার। সেই পোস্টার ফেলা হয়েছে ডায়মন্ড হারবার বিধানসভার নাগরিকবৃন্দ তরফে।
এ বিষয়ে দীপক বাবু অবশ্য বলেন, আগামী দিনে মানুষ বিচার করবে। তবে আমি জানতে চাই তৃণমূল কংগ্রেসে আর কি গদ্দার আছে? যদি থাকে তবে নামগুলি প্রকাশ করা হোক।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, যারা দলে থাকছেন তারা ভালো।আর দল থেকে যারা বেরিয়ে যাচ্ছে তারাই হচ্ছে গদ্দার। একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য যারা কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে বিধায়ক হয়েছেন, সাংসদ হয়েছেন, মন্ত্রী হয়েছেন, যারা ভারতীয় জনতা পার্টির হাত ধরে বিজেপিতে জিতেছেন তারা যদি গদ্দার হোন তাহলে আমিও গদ্দার।