কর্মীদের থেকে নেতা তৈরি করে নেব, তবু দুর্নীতির সঙ্গে আপস নয়: মমতা

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ একদিকে করোনা, অন্যদিকে আমফানে মানুষের পাশে দাঁড়াক দল, চেয়েছিলেন মমতা। তিনি চেয়েছিলেন, রাজনীতির রঙ না দেখে তাঁরা দুর্গত মানুষের সেবা করুক। ব্যক্তিগত ফায়দা নয়। তৃণমূল স্তরের মানুষের কাজ করার জন্যই দল গড়েছেন তৃণমূল নেত্রী।

কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী নেতা-কর্মীদের জন্য মুখ পুড়ছে দলের। এতে ব্যথিত তৃণমূল সুপ্রিমো। একইসঙ্গে চরম ক্ষুব্ধও তিনি।

শুক্রবার দলের সভাপতি, বিধায়ক, সাংসদদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভানেত্রীর বার্তা দুর্নীতির সঙ্গে কোনও কোনও আপস করবেন না তিনি। প্রয়োজনে কর্মীদের থেকেই নেতা তৈরি করে নেবেন। যাঁরাই এসব করুক তা মেনে নেবেন না তিনি।

উল্লেখ্য, করোনা আবহে রেশনের চাল নিয়ে দুনীতি এবং আমফান পরবর্তী পরিস্থিতিতে ত্রান নিয়ে দুর্নীতিতে যাঁর বিরুদ্ধেই অভিযোগ থাক সাদারণ মানুষকে সরাসরি পুলিশের কাছে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এবার দলের থেকেও এই দুর্নীতিগ্রস্থ নেতাদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিলেন প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে তিনি শুধু দুর্নীতিবাজদের শাস্তি চান তা নয়, দলনেত্রী হিসাবেও তিনি চান দলে তাঁদের জায়গা না দিতে।

কেন্দ্রীয় সরকারে জনবিরোধী নীতি সহ ৫ দফা দাবিতে পথে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন ও ১২ই জুলাই কমিটি

এদিন তিনি জেলা সভাপতিদের পাশাপাশি দলের বিধায়কদেরও তিনি বার্তা দিয়েছেন, দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করুন। মানুষের দল তৃণমূল সেখানে দুর্নীতিবাজদের ঠাই নেই।

এদিন দলের অভ্যন্তরীণ অন্তদ্বন্দ্ব নিয়েও এদিন সরব হন মমতা। তিনি বলেন, দলের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট বড় মেজো নেতাদের মধ্যে কলহের খবর আসছে। ভাববেন না যে আমার চোখে কিছু পড়বে না। এখনই সতর্ক হোন না হলে দল ব্যবস্থা নেবে। কলহ ছেড়ে সকলে মিলে একসঙ্গে কাজ করুন। এদিন উত্তরবঙ্গের নেতাদেরও সাবধান করে দেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, উত্তরবঙ্গের নেতারা সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করুন। পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করে গুরুত্ব দিয়ে কাজ ভাগ করে নিন।

এদিন দলের নেতাদের বিজেপির বিরুদ্ধেও সক্রিয় হওয়ার কথা বলেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপি নেতারা রাস্তায় নামছেন সরকারের বিরুদ্ধে প্রচার করছেন, মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন। আপনারা ঘরে চুপচাপ বসে আছেন কেন?

সামাজিক দূরত্ব মেনে আপনারাও প্রচার করুন। তারা যে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে সেগুলি তুলে ধরুন।
এদিন দলীয় বিধায়কদের প্রত্যেক বিধায়ককে বিধানসভায় জিততে হবে এই লক্ষ্যমাত্রা দেন তিনি। এরজন্য জনসংযোগে আরও জোর দেওয়ার কথা বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি বলেন, জানি কোভিড সংক্রমণ রয়েছে। তার মধ্যেও সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং মেনে জনসংযোগের সঙ্গে জনবিরোধী কার্যকলাপ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হতে হবে। রেল ও কয়লার বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ নিচ্ছে তা সাধারণ মানুষকে বোঝাতে হবে।

তাঁর কথায়, এলাকার মানুষকে কাছে গিয়ে বলতে হবে রাজ্য সরকার কি কাজ করেছে। কেন্দ্রীয় সরকার কিভাবে রাজ্যকে বঞ্চনা করেছে। পেট্রোল-ডিজেলের দাম যেভাবে দিন দিন বাড়ছে তা নিয়ে বুথে বুথে প্রতিবাদ সংগঠিত করতে হবে। দলীয় নির্দেশ মেনে সেইসব কর্মসূচি পালন করতে হবে বিধায়কদের। বিধায়কদেরই দায়িত্ব নিতে হবে।

এদিন দলকে কর্মসূচিও দিয়েছেন দলনেত্রী। ৭ তারিখ থেকে লাগাতার কর্মসূচি শুরু হবে তৃণমূল কংগ্রেসের। এক একদিন এক একটি ইস্যুতে হবে প্রতিবাদ।

এদিকে এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন কোষাধ্যক্ষ হলেন শুভাশিস চক্রবর্তী। সদ্য প্রয়াত বিধায়ক তমোনাশ ঘোষের জায়গায় বসানো হলো রাজ্যসভার সাংসদ তথা তৃণমূল নেত্রীর অন্যতম আস্থাভাজন নেতা শুভাশিস চক্রবর্তীকে।

সম্পর্কিত পোস্ট