বন ধ্বংস হলে থাকবে না মানুষের বেঁচে থাকার রসদ অক্সিজেন, মত পরিবেশমন্ত্রীর

আবু আলী, ঢাকা
দেশে বন্যপ্রাণী না থাকলে, বন ধ্বংস হয়ে যাবে। আর বন ধ্বংস হলে আমরা বেঁচে থাকার জন্য অতিপ্রয়োজনীয় অক্সিজেন ও অন্যান্য উপাদান পাব না। আমাদের টিকে থাকার স্বার্থেই বনের বন্যপ্রাণীর অসংখ্য প্রজাতিকে সম্মিলিতভাবে রক্ষা করতে হবে।
জীববৈচিত্র সংরক্ষণে অবদান রাখায় জনগণকে উৎসাহ প্র্রদানের জন্য সরকার ‘বঙ্গবন্ধু এওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন’ নামে জাতীয় পুরস্কার চালু করেছে। গত মঙ্গলবার আগারগঁআও বন অধিদফতরে বিশ্ব বন্যপ্রাণ দিবস ২০২০ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
তিনি আরও বলেন, প্রায় এক হাজার এক’শ ৬৩ প্রজাতির বৈচিত্র্যময় প্রাণীর আবাসভূমি আমাদের বাংলাদেশ। এখানে রয়েছে বৈচিত্র্যময় বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল, বিশ্বের একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন-সুন্দরবন, চিরহরিৎ বৃক্ষের বন, পত্রঝরা বৃক্ষের বন, শাল বন ও গ্রামীণ বন। সরকার দেশের এ সকল বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের লক্ষ্যে আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
আরও পড়ুনঃ বীমা খাতে জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা বাড়াতে হবেঃ হাসিনা
বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ মোতাবেক বন্যপ্রাণী অপরাধ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ইউনিট ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে বন্যপ্রাণী, বন্যপ্রাণীর দেহাংশ উদ্ধার, গোয়েন্দা নেটওয়ার্কিংসহ বন্যপ্রাণী সংশ্লিষ্ট অপরাধ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করছে। এখনও পর্যন্ত ৩১ হাজার ৬০২টি বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে জঙ্গলে ছেড়ে দিয়েছে এই ইউনিট ।
মন্ত্রী বলেন, গাজীপুরের ‘শেখ কামাল ওয়াইল্ডলাইফ সেন্টার’-এ বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ সংক্রান্ত শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে।
বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনাকে অধিকতর গুরুত্ব প্রদান করে ৪৫টি এলাকাকে ‘‘রক্ষিত এলাকা” ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ১৯টি জাতীয় উদ্যান, ২০টি অভয়ারণ্য, তিনটি ইকোপার্ক, দু’টি বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা ও একটি মেরিন প্রটেক্টেড এলাকা।
তিনি জানান, বন্যপ্রাণীর বংশবিস্তার ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে কক্সবাজার ও গাজীপুরে দু’টি সাফারীপার্ক স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া মৌলভীবাজার জেলার জুড়ি উপজেলার লাঠিটিলায় একটি নতুন সাফারী পার্ক স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
‘পৃথিবীর অস্তিত্বের জন্য প্রাণীকূল বাঁচাই’ বিষয়ে এদিন মন্ত্রী ছাড়াও বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান, ডিসি এবং অতিরিক্ত সচিব ড. মো. বিল্লাল হোসেন এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু প্রমুখ।
সভাপতিত্ব করেন বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক মোহাম্মদ সফিউল আলম চৌধুরী।