দামোদরজুড়ে বেআইনি বালি খাদানের রমরমা পঞ্চায়েত ভোটে শাসকের মাথাব্যথা হতে পারে
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বাংলায় বেআইনি বালি খাদানের রমরমা দীর্ঘদিনের। বাম আমলে এর সূত্রপাত। তবে সেই সময় শাসক দলের কড়া মনোভাবের জেরে এক রকম নিয়ন্ত্রণ ছিল। কিন্তু বর্তমান শাসক দলের স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশ সরাসরি এই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ।
এই নিয়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীকে একাধিকবার দলীয় ও প্রশাসনিক বৈঠকে বালি খাদান নিয়ে সুর চড়াতে দেখা গিয়েছে। তাতেও যে অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন ঘটেনি তা স্পষ্ট। ফলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দুশ্চিন্তায় শাসক দল।
এরাজ্যে বৈধ বালি খাদানের থেকে অবৈধ বালি খাদানের সংখ্যা ঢের বেশি। অবৈধ বালি খাদানে কাজ করলে দুটো বেশি পয়সাও পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে এলাকার অনেকেরই কর্মসংস্থান হয়। দক্ষিণ দামোদর অববাহিকায় বহু মানুষ এই অবৈধ বালি কারবারের সঙ্গে যুক্ত।
তাদের কেউ নদীর চর থেকে বেআইনিভাবে বালি কাটে, কেউ আবার গাড়িতে করে সেই বালি নির্দিষ্ট যায়গায় পৌঁছে দেয়। এর ফলে গ্রাম বাংলার এক বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বালি খাদানের বেআইনি অর্থের এক সমান্তরাল অর্থনীতি তৈরি হয়েছে। আর সমস্যাটা সেখানেই।
বাংলাদেশের ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ঘটনায় অশোকনগর থেকে গ্রেফতার ১ মহিলা সহ ৬ অভিযুক্ত
যারা বালি মাফিয়া, যারা এই অবৈধ বালি খাদানের ব্যবসার মাথায় থেকে পুরোটা নিয়ন্ত্রণ করে তাদের মাসল পাওয়ারও থাকে। বর্তমানে তাদের সঙ্গে শাসকদলের ব্লক সভাপতি, অঞ্চল সভাপতিদের একাংশের ওতপ্রোত যোগাযোগের কারণে পেশী শক্তির সঙ্গে সেখানে রাজনৈতিক শক্তির মেলবন্ধন ঘটেছে।
ফলে গাজোয়ারি, ভিন্নমত সহ্য না করার মত বিষয় অনেক বেড়ে গিয়েছে। বালি খাদানের সঙ্গে যারা যুক্ত নয় তারা সামান্যতম প্রতিবাদ করলেই তাদের উপর অত্যাচার হয়, এমনটা বারেবারে অভিযোগ উঠেছে।
তাছাড়া নদীর পাড় থেকে অবৈজ্ঞানিক উপায়ে বালি তুলে নেওয়ার ফলে যখন তখন ধস নেমে তলিয়ে যাচ্ছে চাষের জমি, বসতভিটে। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে এই নিয়ে ক্ষোভও যথেষ্ট। সেইসঙ্গে বালি খাদানের লোভনীয় ব্যবসা কার নিয়ন্ত্রণে থাকবে তা নিয়ে শাসকদলের নিচুতলায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও ক্রমশ বাড়ছে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য নিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আমজনতার একটা বড় অংশের ক্ষোভ, অন্যদিকে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, মালদহ, মুর্শিদাবাদের মত জেলায় ভুগতে হতে পারে তৃণমূল কংগ্রেসকে। ইতিমধ্যেই বিরোধীরা এই অবৈধ বালি খাদানের ব্যবসাকে হাতিয়ার করে তলায় তলায় মানুষের মধ্যে প্রচার শুরু করে দিয়েছে