” আমি শুভেন্দু, জানি কোথায় কী করতে হবে”
দ্য কোয়ারি ডেস্ক: শুভেন্দু অধিকারী নিজে ও তার পরিবার বরাবরই ক্ষমতার অলিন্দে থাকতে ভালবাসেন। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের দাবি, গোটা নির্বাচন চলাকালীন নিজের হাতে রেখেছিলেন বিজেপির প্রচারের রাস।
ফলে বিজেপির অন্দরমহলে ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হতে শুরু করে। নির্বাচনের ফল বেরোনোর পরেই বিভিন্ন দিকে আক্রমণের মুখে পড়তে হচ্ছে শুভেন্দু অধিকারীকে। তাকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না দলের নেতৃত্বরা।
তার সত্বেও একপ্রকার নিরুপায় বঙ্গ বিজেপি। শুভেন্দুর টিকি বাঁধা আছে খোদ অমিত শাহের কাছে। তাই বাকিদের কুছ পরোয়া নেহি অ্যাটিটিউড দেখাতেন। তবে এই অ্যাটিটিউড তার নতুন না।
তৃণমূলে থাকার সময় থেকেই ছিল।
নন্দীগ্রাম হোক বা নেতাই গণহত্যা। বাকি তৃণমূল নেতাদের পিছনে ফেলে বরাবরই অনেকটাই এগিয়ে থেকেছেন শুভেন্দু। সাংগঠনিক দিক থেকে তাঁর ক্ষুরধার বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে মেদিনীপুরের বৃহৎ অংশে অধিকারী পরিবারের রাজত্ব কায়েম ছিল বিগত বেশ কিছু বছর ধরে। এই নিয়ে ক্ষোভ ছিল তৃণমূল কংগ্রেসে। এখন ভারতীয় জনতা পার্টির অন্দরে তৈরি হয়েছে সেই ক্ষোভ।
শুভেন্দুর আত্মহংকার আর দিলীপ ঘোষের মতো নেতাদের ব্যবহার নিচু তলায় কর্মীদের হতাশ করেছে।নির্বাচন শেষ হওয়ার পর বহু কর্মী ঘর ছাড়া। বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভার বিপ্লবী রাস বিহারী বসু ভবনে কর্মীদের একবারও চোখের দেখা দেখতে যাননি বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভার সাংসদ সুরিন্দর সিং আহলুওলিয়া বা রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু ।
সংবাদমাধ্যমে আবেগ প্রকাশ করেছেন তারা। উদ্যোগ নিয়ে ঘরে ফেরানোর প্রয়াস দেখা যায়নি। আর দেখা গিয়েছে সরকারকে বিভিন্ন ইস্যুতে আক্রমণ করা। ভাষাগত বৈচিত্রের কথা নাইবা আলোচনা করা হলো। তাই হতাশার মধ্য দিন কাটছে তাদের কর্মীদের।এটাই বাস্তব।
বর্ধমানে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীরা অবহেলায় থেকে গেছেন। আবার উল্টোদিকে তার নিজের বিধানসভা নন্দীগ্রাম ছুটে যাচ্ছেন তিনি। বাকি জেলায় তৃণমূল ত্যাগের আগে অনুগামীদের ছড়াছড়ি দেখা গিয়েছিল।এখন সেই অনুগামীদের প্রশ্ন কোথায় দাদা শুভেন্দু?
ঘরছাড়াদের ফেরানোর থেকে নিজে গিয়ে দিল্লিতে ক্ষমতার আস্ফালন ঘটিয়ে চলেছেন। নিজের জমি ফিরে পাওয়ার চেষ্টায় কোনো কসুর করতে ছাড়ছেন না। তাহলে কর্মীদের নিরাপত্তার প্রশ্ন তো উঠে আসবেই।
বিরোধী দলনেতা মানে রাজ্যের দলনেতা। কোথায় তিনি? ভরা কোটাল ও নিম্নচাপের জেরে পূর্ব মেদিনীপুর, দক্ষিণ 24 পরগনা ও উত্তর 24 পরগনার একাংশে আবারো ক্ষয় ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এরবেলায় কেন বিরোধী দলনেতা বা ভারতীয় জনতা পার্টির সামনের সারির নেতৃত্ব দের কোন ভূমিকা নিতে দেখা যাচ্ছে না। প্রশ্ন উঠছে দলনেতা হিসেবে শুভেন্দু অধিকারীর কর্তব্য নিয়েও।
একা রাজত্ব করবো। এই মানসিকতায় বেশি ব্যস্ত শুভেন্দু। একথা সংবাদমাধ্যম বলছে না। বলছেন একদা যারা শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী হিসেবে জেলায় জেলায় পোস্টার লাগিয়েছেন। রাতারাতি শুভেন্দু অধিকারীর দল বদলে যারা বিজেপিতে এসেছিলেন তারাও এখন এই প্রশ্নে আটকে আছেন।
তাই শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তো থাকছেই।যে সব নেতাকর্মী ও বিধায়করা শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে এসেছিলেন তারা এখন কোন মেরুতে বসবাস করছে, এর খবর তিনি রাখেন না। আসলে সেসব এখন অতীত। এখন পুরোটাই ক্ষমতা আস্ফালনের একটা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। যার ফল ভুগছে ভারতীয় জনতা পার্টি এবং নিচুতলার কর্মীরা।