আগামী দিনে রামমন্দিরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠতে পারে পর্যটন কেন্দ্র, রুটিরুজির সংস্থান হবে সর্বধর্ম নির্বিশেষেঃ পঙ্কজ ঘোষ
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বহু প্রতিক্ষিত রাম মন্দিরের ভূমি পুজার অনুষ্ঠান শেষ। এবার ধাপে ধাপে মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হতে চলেছে।
প্রায় ১৫ যুগ ধরে দেশ বিদেশের একাধিক মন্দির নির্মাণে নিযুক্ত সোমপুরা পরিবারের তরফে ১৬১ ফুট উচু, ৩৬০ ফুট দীর্ঘ এবং ২৩৫ ফুট চওড়া মন্দিরের ডিজাইন ১৯৮৮ সালে প্রকাশ করা হয়েছিল।
আহমেদাবাদের বিখ্যাত শিল্পী চন্দ্রকান্ত সোমপুরা এর ডিজাইন তৈরি করেন। ২১২ থেকে ৩৬০ টি পিলারের ওপর তৈরি হবে এই মন্দির। খরচ পড়বে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। সেই ধাঁচেই তৈরি হবে মন্দির।
দক্ষিণ ভারতের নাগাড়া শিল্প ছোঁয়াতেই এই মন্দির নির্মাণে নিযুক্ত হয়েছেন নিখিল সোমপুরা এবং আশীষ সোমপুরা। মন্দির তৈরিতে সময় লাগবে প্রায় সাড়ে তিন বছর।
রামমন্দির নিয়ে বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না। করোনা পরিস্থিতিতে রাম মন্দিরের ভূমি পুজো নিয়ে বিরোধীরা সকলেই কাঠগড়ায় তুলেছে কেন্দ্র সরকারকে।
তবে সেই সব বিতর্কের মাঝে রাম মন্দির নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ছেলে ওরফে কোচবিহার জেলা পরিষদের সদস্য পঙ্কজ ঘোষ।
পঙ্কজ ঘোষের কথায়, ভারতের যে কোনও পবিত্র স্থান শুধুমাত্র ধর্মের প্রতীক নয়। এরসঙ্গে জড়িত থাকে সাহিত্য, শিল্প কলা এবং বহু প্রাচীন সংস্কৃতিও।
ভারতীয় ইতিহাসে বিতর্কমূলক বিষয়ের একটি অধ্যায় ছিল অয্যোধ্যা। যা গত বছরেই সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তে একেবারে মুক্তি পায়। সরযু নদী তীরে নবগঠিত রাম মন্দির শুধুমাত্র একটা অধ্যায় হিসেবে থেকে যাবে এটা বলা হয়তো এখনই ঠিক হবে না।
আগামী সপ্তাহ থেকেই শুরু হবে কাউন্সেলিং, বাড়ি বসেই ভর্তি প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন পড়ুয়ারা
পঙ্কজ বাবু আরও বলেন, এমনিতেই করোনা মহামারির কথা মাথায় রেখে উত্তরপ্রদেশের কড়াকাড়িতে অয্যোধ্যায় সেভাবে ভিড় হয়নি। তবে মন্দির নির্মাণ হলে এটি ভারতের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে। যাকে কেন্দ্র করে কয়েক হাজার মানুষের রুটি রুজির সন্ধান মিলতে পারে৷ মহামারিতে কাজ হারানো বেশ কিছু মানুষ ভগবান রামের সহায় নিজের পেটের ভাত নিজেরাই জোগাড় করে নিতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, বহুত্ববাদের ভারতবর্ষে হিন্দু-মুসলিম-শিখ-ইসাই সবাই ভাই ভাই। পৃথিবীর জনসমুদ্রে ভারতের বাইরে থেকে আসা মানুষের সমাগম যখন এই অয্যোধ্যাতে বেড়ে চলবে। তখন ভারতীয় সংস্কৃতি দেশের বাইরেও সমাদৃত হবে।
তাঁর মতে, রাজনৈতিক পরিসরের বাইরেও রামের আলাদা পরিচয় রয়েছে। হিন্দু শাস্ত্রে রামকে একাধিক রূপে দেখা হয়। কখনও তিনি আদর্শ নেতা। কখনও তিনি আদর্শ ভাই। আবার কখনও তিনি একজন নিষ্ঠাবান অনুজ শিক্ষার্থীও৷
তাই নতুন করে রাজনীতির মোড়ক লাগিয়ে রামকে দেখা ছাড়াও রামের সঙ্গে মিশে থাকা বৈচিত্র্যের মধ্যে যে ঐক্য বহমান তাকে সামনে আনাটা বিশেষভাবে প্রয়োজন।
পঙ্কজ বাবুর কথায়, এযুগে রামের প্রয়োজনীয়তা এখানেই। একুশ শতকে স্মার্ট ফোনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা ভুল খবরে পা দিয়ে ভুল পথে চলে যাই। সেখান থেকে আমাদের আলোর পথ দেখাতে পারে আমাদের ইতিহাস, সংস্কৃতি, স্থাপত্য, শিল্প। ঠিক তেমনই রাম মন্দিরের মাধ্যমে আমাদের নতুন করে চেতনার জন্ম নেবে। যা থেকে তৈরি হবে নতুন ভারতবর্ষ।