করোনা আবহে অঙ্গ প্রতিস্থাপন করে নজির কলকাতায়
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ করোনা আবহে অঙ্গ প্রতিস্থাপন করে নজির গড়ল কলকাতা। যুদ্ধকালীন তত্পারতায় তিলোত্তমার তিনটি হাসপাতালে হল প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া। গ্রহীতাদের সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোটাই এখন চ্যালেঞ্জ ডাক্তারদের কাছে।
শুক্রবার রাতে কল্যাণীতে বাইক দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন ভাটপাড়ার বাসিন্দা, পেশায় মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ সংগ্রাম ভট্টাচার্য। বছর বত্রিশের সংগ্রামকে প্রথমে কল্যাণীর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে। সেখানে গতকাল ব্রেন ডেথ ওই যুবকের।
রবিবার স্বাস্থ্যভবনের ব্রেন ডেথ কমিটি পরীক্ষা করে জানান যে, ওই যুবকের ব্রেন ডেথ হয়েছে। এরপরই সংগ্রামের অঙ্গদানের সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার।
করোনার কারণে বিভিন্ন প্রতিকূলতা থাকলেও সেসবকে উপেক্ষা করে গ্রহীতার খোঁজ শুরু করে হাসপাতাল। রাতেই লিভার প্রয়োজন, এমন এক আগরতলার বাসিন্দাকে বিমানে নিয়ে আসা হয় কলকাতায়।
বাংলার ঐতিহ্য নষ্ট করে এমন কিছু বিশ্বভারতীতে হওয়া উচিত নয়: মমতা
সংগ্রামের একটি কিডনি দেওয়া হচ্ছে হাওড়ার লিলুয়ার বাসিন্দা এক যুবককে। আরেকটি পাঠানো হয় এসএসকেএমে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মৃত যুবকের চোখ ও হৃদযন্ত্র দেওয়া হয়েছে আরএনটেগোর হাসপাতালের এক রোগীকে।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই অ্যাপোলো ও আরএনটেগোরে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। উল্লেখ্য, এসএসকেএমের স্কিন ব্যাংকে রাখা হচ্ছে ওই যুবকের ত্বক।
তবে গোটা বিষয়টাই সম্ভব হয়েছে সংগ্রামের পরিবারের মনোবলের কারণে, এমনটাই বললেন অ্যাপোলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের কথায়, বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে এই অঙ্গ প্রতিস্থাপন একটা যুদ্ধ। অনেক ঝুঁকি রয়েছে এতে। সংগ্রামের পরিবার সাহস না জোগালে এটা কখনই সম্ভব ছিল না।
পাশাপাশি, একটি অঙ্গ নিয়ামক সংস্থাকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। কারণ, তাঁদের মাধ্যমেই এত অল্প সময়ের মধ্যে গ্রহীতাদের হদিশ মিলেছে।
এদিন যাঁরা ওই কিশোরের অঙ্গ পেলেন তাঁদের আত্মীয়রা জানিয়েছেন, এভাবে উপযুক্ত অঙ্গ পেয়ে যাব ভাবতেই পারিনি। এরকম একটা মর্মান্তিক পরিণতি হবার পরও সংগ্রামের বাবা-মা যে সন্তানের অঙ্গ দানের অনুমতি দিয়ে একাধিক মানুষের জীবন দান করতে চলেছেন। যুবককে আমাদের প্রণাম ও শ্রদ্ধা। তাঁর পরিবারকে আমরা কীভাবে শ্রদ্ধা জানাব বুঝতে পারছি না।