অগ্নি সুরক্ষার স্বার্থে এবার প্রত্যেক ব্লকেই দমকল বাহিনী
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ শোভন চট্টোপাধ্যায় দমকল মন্ত্রী থাকাকালীন রাজ্যের প্রতিটি ব্লকেই দমকল কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল।
যেখানে স্থায়ী দমকল কেন্দ্র নেই সেখানেও একটি অস্থায়ী জায়গা খুঁজে দমকলের গাড়ি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। যাতে যে কোনো ঘটনা ঘটলেই দ্রুত সেখানে পৌঁছে যাওয়া যায়।
এবার রাজ্যের প্রতিটি ব্লকেই স্থায়ী দমকল কেন্দ্র গড়ে তুলতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। রাজ্যের ৩৪১ টি ব্লকের মধ্যে এই মুহূর্তে স্থায়ী দমকল কেন্দ্র রয়েছে হাতেগোনা ব্লকে।
সুজিত বসুর দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ বছরের মধ্যেই ২১০ টি ব্লকে একটি প্রশিক্ষিত দমকল বাহিনী রাখা হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত এর জন্য স্থায়ী জায়গা না পাওয়া যায়, ততক্ষণ এই বাহিনী থাকবে বিডিও অফিসে। আর যেখানে দমকলের জন্য জায়গা রয়েছে সেখানে সেই ভবনেই বাহিনীকে রাখা হবে।
দফতর সূত্রে খবর, দমকলের জন্য একদল যুবক যুবতীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর কথায়, শহরাঞ্চলে দমকলের পরিকাঠামোর পাশাপাশি আমাদের জেলাগুলি কেউ নজর দিতে হবে।
এই মুহূর্তে জেলাগুলিতেও শিল্পের পরিকাঠামো তৈরি করছে রাজ্য সরকার। সেক্ষেত্রে অগ্নি সুরক্ষার বিষয়টি একটি জরুরী পরিকাঠামো হিসেবেই মনে করা হচ্ছে।
কিন্তু সমস্যা হল জেলায় কোনো প্রত্যন্ত এলাকায় আগুন লাগলে সদর শহর থেকে গিয়ে আগুন নেভাতে নেভাতে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে প্রত্যেককেই অগ্নি নির্বাপনের পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ প্রত্যেক ব্লকেই দমকলের পরিকাঠামো তৈরি রাখতে হবে।তাঁর কথায়, লকডাউন চলাকালীন কলকাতা, হাওড়া-সহ ৩-৪টে জায়গায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে।
লাগাতার জ্বালানীর মূল্যবৃদ্ধি মোদি সরকারকে নিশানা অভিষেকের
কলকাতার কাছাকাছি হওয়ায় দ্রুত তা মােকাবিলা করা গেছে। তাই এবার দূরে বড় ধরনের অগ্নিকান্ড ঘটলে দ্রুত তা আয়ত্তে আনার ব্যাপারেও উদ্যোগী হয়েছে।
অগ্নিনির্বাপন ও জরুরি পরিষেবা বিভাগ। রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২২০টি ব্লকে একদল যুবক-যুবতী প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি রাখা হবে। প্রতিটি বিডিও অফিসে রাখা হবে পাের্টেবল পাম্প, বড় বড় পাইপ, একই সঙ্গে জলের ব্যবস্থাও থাকবে গ্রাম এলাকায়।
কোথাও আগুন লাগলে স্থানীয় থানার পুলিশ তাে থাকবেই, তাদের সঙ্গে থাকবে আগুন নেভানাের বিষয়ে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত স্থানীয় এই বাহিনী।
মন্ত্রীর কথায়,‘প্রথমেই ব্যবস্থা নিতে পারলে আগুনের ভয়াবহতা থেকে গ্রামবাসীদের রক্ষা করা যাবে। দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই আগুন নেভানাের ‘ফাইটার’ হিসাবে কাজ করার জন্য প্রচুর স্বেচ্ছাসেবী নিয়ােগ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জেলাগুলিতে এরমধ্যেই ১৯টি বড় উদ্ধার দল, ২৫টি ছােটো উদ্ধার দল পাঠানাে হয়েছে। একই সঙ্গে উদ্ধার কাজের জন্যও আনুষাঙ্গিক সরঞ্জাম জেলাগুলিতে মজুত রাখার ব্যবস্থাও হয়েছে।
সুজিত বসুর কথায়, “রাজ্যের বর্তমান দ্রুত শিল্পায়ন ও নগরায়নের পরিপ্রেক্ষিতে অগ্নি-নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে জরুরি নির্দেশও দিয়েছেন। এরইমধ্যে পর্যাপ্ত ফেব্রিকেটেড ওয়াটার বাউজার’,‘ফেব্রিকেটেড ওয়াটার কেরিয়ার’,‘অ্যামােনিয়া সুট’,‘ক্লোটিং পাম্প, ‘পার্সোনাল প্রােটেকটিভ ইকুইপমেন্ট কেনা হয়েছে। একই সঙ্গে কেনা হয়েছে স্বয়ংক্রিয় শ্বাসকার্য সহায়ক যন্ত্র, তাপ নিরােধক মাস্ক, ২ হাজার অগ্নিনির্বাপক বল।
জেলাগুলিতে এরমধ্যেই নবগঠিত ৭টি দমকল কেন্দ্রের কাজ চালু করা হয়েছে। সুজিত বসু জানান, জেলা থেকে ব্লকস্তর পর্যন্ত আরাে ৫০টি নতুন দমকল কেন্দ্র চালু করার পরিকল্পনাও রয়েছে রাজ্য সরকারের। অর্থ দফতর সূত্রের খবর, দমকল বাহিনীকে আরাে সুসজ্জিত করে গড়ে তােলার জন্য ২০২০-২০১২ অর্থবর্ষে ১৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।