মাস্কের বদলে মুখ ঢাকা আঁচলে, পুলিশি প্রচারের পরও চূড়ান্ত জনসচেতনার অভাব বারাসাতে

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ  করোনা সংক্রমন দিন দিন বেড়েই চলেছে উত্তর ২৪ পরগণার সদর শহর বারাসাতে। তা সত্ত্বেও মানুষের সচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

এবার বারাসাতে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল এক মাছ ব্যবসায়ীর। যার জেরে আপাতত ৭ দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বারাসাতের ৩ টি বাজার। সেই তিনটি বাজার হল নবপল্লী ছোট বাজার, ডিপ টিউবওয়েল বাজার ও ভদ্রবাড়ি বাজার।

করোনায় মৃত মাছ ব্যবসায়ীর বাড়ি বারাসতের ডিপ টিউবওয়েল সংলগ্ন এলাকায়। তিনি নবপল্লির ছোটো বাজারে মাছ বিক্রী করতেন।

ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে বাগুইআটির এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি হয়েছিলেন তিনি। মঙ্গলবার সেই হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।

মৃত্যুর আগে তার শারীরিক লক্ষণ দেখে সন্দেহ হয় চিকিৎসকদের। এরপরই তাঁর লালারসের নমুনা পাঠানো হয় পরীক্ষার জন্য। বুধবার সেই রিপোর্ট পজিটিভ আসে।

এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ছোটবাজার এলাকার বাসিন্দারা। ওই মাছ বিক্রেতার পরিবারকে রাখা হয়েছে হোম কোয়ারেন্টিনে।

চিন্তা বাড়াচ্ছে উত্তর ২৪ পরগণা, একদিনে রেকর্ড হারে বৃদ্ধি করোনা আক্রান্তের সংখ্যা

তবে এতকান্ডের পরও এতটুকুও হুঁশ ফেরেনি বারাসাত বাসীর। যত্রতত্র বেরিয়ে পড়ছেন তারা। চা দোকান থেকে সর্বত্রই মানুষের জটলা অব্যাহত। সামাজিক দূরত্ব থাকলেও দেখা মিলবে না মাস্কের।

শুক্রবার বারাসাত থানার আইসি দীপঙ্কর ভট্টাচার্য খোদ রাস্তায় নেমে মাস্কবিহীন ভাবে যারা বেরিয়েছিলেন তাদের মাস্ক পড়িয়ে সচেতনতার পাঠ দেন। এদিন নামানো হয় র‍্যাফও। মানুষকে সচেতন হতে বলেন উত্তর ২৪ পরগণার জেলা পুলিশ সুপার অভিজিত ব্যানার্জী।

পাল্টা বারাসাত বাসীর তরফে অভিযোগ তোলা হয় সচেতনতা নিয়ে পুলিশের ভূমিকায়। নাগরিকদের প্রশ্ন একদিন বেরিয়ে সচেতনতা অভিযান চালিয়ে কী হবে? যদি রোজ পুলিশের এই ভূমিকা থাকে তাহলেই একমাত্র সমস্যার সমাধান সম্ভব।

বারাসাত থানার তরফে প্রচার মারফৎ জানানো হয়, মাস্কের ক্ষেত্রে রাজ্যের নির্দেশিকা মানতে হবে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। নিয়ম না মানলে নেওয়া হবে আইনী ব্যবস্থা।

মাস্ক  নিয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবের বিবৃতির পরে শনিবারও চলল পুলিশি প্রচার। যেকোনো মুখাবরণ নয়, মাস্কই পরতে হবে। মাস্ক না পরলে এবার আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

জরিমানা দিলেও মাস্ক বিহীন মানুষকে পথ থেকে বাড়ির দিকে ফেরানো হতে পারে। তা সত্ত্বেও কুছ পরোয়া নেহি। চলছে মাস্ক বিহীন অবিরাম যাতায়াত।

ঝুঁকির জীবন, কাঁকড়া ধরতে গিয়ে ফের বাঘের মুখে মৎসজীবী

করোনাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে উদাসীন ভাবে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে মানুষদের। হাঁটার সময় বা গাড়ি চালানোর সময় অনেকেরই মাস্ক নেই। এমনকি কিছু দোকানদারকেও মাস্ক ছাড়াই দেখা যাচ্ছে। মহিলাদের অনেককে দেখলে আবার তাজ্জব হতে হচ্ছে। আঁচল দিয়ে মুখ ঢেকে রাস্তায় চলছে অবাধ যাতায়াত।

শনিবার দুপুর থেকে বারাসাত শহর জুড়ে পুলিশের প্রচারের পরেও সার্বিকভাবে  হুঁশ নেই মানুষজনের।

পুলিশি প্রচারের সময়ও বহু মাস্ক বিহীন। অতঃপর মাস্ক পরার নির্দেশিকায় কড়া আইন কতটা বলবৎ হয় ও পুলিশ কী ব্যবস্থা নেয় সেই অপেক্ষা  ছাড়া গতি নেই।

পুলিশি পদক্ষেপ আনলক ফেসে সার্বিকভাবে চোখে পড়েনি। হতাশার সুরে  বলছেন স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা মানুষজন।

পুলিশের পদক্ষেপ ছাড়াও প্রশ্ন উঠছে সচেতনতা নিয়ে। যেখানে বারবার চিকিৎসকেরা সতর্ক করছেন সেখানে কয়েকজন মানুষের চূ়ড়ান্ত উদাসীনতার ফল ভুগছেন বাকীরাও। হুঁশ কী আদৌ ফিরবে?

সম্পর্কিত পোস্ট