এ যেন অকাল দীপাবলি, লকডাউন ভেঙেই রাস্তায় ‘অতি উৎসাহীরা, পোড়ানো হলো আতশবাজি

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ফের সেই একই ছবি। ২২ মার্চ জনতা কার্ফুর দিন যেভাবে কাঁসর-ঘন্টা বাজিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছিলেন একদল মানুষ, ৫ এপ্রিলও মোমবাতি, প্রদীপ, মোবাইলের টর্চ লাইট জ্বালিয়ে প্রবল উৎসাহে রাস্তায় নামলেন তাঁরা।

দেশের প্রধানমন্ত্রীর আবেদন অবশ্যই তাঁরা মানলেন। সঙ্গে করোনা সংক্রমণের উদ্বেগ ছড়ালেন। এমনই মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। দেশজুড়ে জারি লকডাউন।

তারমধ্যেই গত শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও বার্তায় আহ্বান জানিয়েছেন।  রবিবার রাত ন’টায় মোমবাতি, প্রদীপ কিংবা মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালিয়ে করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে দেশের প্রতি সংহতি জানান।

মোদী বলেছিলেন, “১৩০ কোটি দেশবাসীর মহাশক্তি জাগরণ করতে হবে। মহাসঙ্কল্পকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে। তাই ৫ এপ্রিল রবিবার রাত ন’টায় আমি আপনাদের সকলের ন’মিনিট চাইছি।

ওই সময়ে আপনারা ঘরের সমস্ত লাইট বন্ধ করে ঘরের দরজা বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে ৯ মিনিট ধরে মোমবাতি, প্রদীপ, টর্চ বা মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালান।”

তাঁর দাবি, এর ফলে এক অনন্য মহাশক্তির প্রকাশ হবে দেশে। প্রতিটি দেশবাসী একইসঙ্গে লড়াই করার সঙ্কল্প করবেন ওই উজ্জ্বলতায়।

প্রধানমন্ত্রীর কথা এদিন অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন বহু মানুষ। রাত ন’টা বাজতেই ঘরের আলো, পাখা, টিভি, ফ্রিজ, সব বন্ধ করে কেউ মোমবাতি, কেউ প্রদীপ কেউ মোবাইলে ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়ে বারান্দায় চলে এসেছেন।

কিন্তু ১৩০ কোটির দেশে অতি উৎসাহীর সংখ্যা কম নয়। অভিযোগ, সেইসব অতি উৎসাহীরা এদিনও ৯ মিনিটের জন্য সেলিব্রেশন মোডে চলে গিয়েছিলেন।

আরও পড়ুনঃ করোনার মোকাবিলায় পথে অতনু প্রসাদ মিত্র – খাদ্যদ্ৰব্য বন্টন – দিন ১

লকডাউনের মধ্যেই তাঁরা আলো হাতে রাস্তায় নেমে পড়লেন।

বারবার যে সোশ্যাল ডিসটেন্সের কথা বলা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভুলে গেলেন সাধারণ মানুষ। আবার অনেকেই কালীপুজো, দীপাবলী ভেবে দেদার বাজি ফাটালেন।

আবার সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কোনও এক পাড়ায় মোমবাতি হাতে পাড়া ঘুরতে বেরিয়েছেন মহিলারা।

দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা যখন ৩৫০০ ছাড়িয়েছে, মৃতের সংখ্যাও যখন ১০০ ছুঁইছুঁই করছে। তখন এই দল বেঁধে সেলিব্রেশন যাঁরা করলেন, তাঁদের দেখে অনেকেরই মনে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন,। ‘এরা কারা’? ববিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা(WHO) বারবার বলছে, করোনার জীবাণু সংক্রমণের জন্য এক জায়গায় একাধিক লোকের জমায়েত এড়িয়ে চলতে হবে।স্বাস্থ্যমন্ত্রক সেই পরামর্শ মেনে চলতে বলছে।

সামাজিক দূরত্বের কথা বলা হলেও কেন এই ‘ইভেন্ট’ গুলো তৈরি হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে প্রশাসন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

এদিনের ৯ মিনিটের আলোক শোভার উন্মাদনা সেই প্রশ্ন আরও বড় করেই দেখিয়ে দিয়ে গেল।

সম্পর্কিত পোস্ট