পাহাড়ি জমি ফিরে পেতে বিজেপির তাস বিভাজন

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ  এই মুহূর্তে বিমল গুরুং ও রোশন গিরি তৃণমূলকে সমর্থন করায় পাহাড়ে নিজেদের জনসমর্থন হারাতে বসেছে বিজেপি। এই অবস্থায় তাদের পায়ের তলার মাটি ধরে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যপালকে দিয়ে বিমল গুরুং ও বিনয় তামাংদের ঝগড়ার সুযোগ নিতে পারে বিজেপি। মূলত এই দুই বড় নেতার মধ্যে মতবিরোধের বৃত্ত আরও বড় করে পাহাড় তৃণমূলের অগ্রগমন রুখতে চাইছে কেন্দ্রের শাসক দল।

দিল্লি থেকে ফিরে শনিবার সকালে পাহাড়ের পথে রওনা দেন বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। আপাতত ১ মাস তিনি থাকবেন পাহাড়েই। তবে আগামীকাল তাঁর শিলিগুড়িতে একটি সাংবাদিক বৈঠক করার কথা রয়েছে। তাই এদিনই শিলিগুড়ি পৌঁছালেও পাহাড়ে উঠছেন না তিনি। রবিবার সাংবাদিক বৈঠক সেরেই পাহাড়ে উঠবেন।

রাজ্যপালের এই সফরে সব থেকে তাৎপর্য পেতে চলেছে পাহাড়ের রাজনীতি। মোর্চা সূত্রে জানা গিয়েছে খুব শীঘ্রই রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন বিনয় তামাং। সেই বৈঠকে থাকতে পারেন অনিত থাপাও। তবে সেই বৈঠকের দিনক্ষন এখনও ঠিক হয়নি।

মনে করা হচ্ছে গুরুং-গিরি হাতছাড়া হতেই পাহাড়ের ক্ষমতার রাশ ধরে রাখতে এখন বিজেপি তামাং-থাপা জুটিকে তুলে ধরতে চাইছে। রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক কার্যত সেই রাজনৈতিক সমীকরণকেই মান্যতা দেবে।

পাহাড়ে যাওয়ার আগে এদিন যথারীতি ট্যুইট করেছেন রাজ্যপাল। সেখানে ধনকর লিখেছেন, চলতি সফরে সাধারণ মানুষ এবং প্রশাসনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবেন তিনি। পর্যটন, আর্থিক এবং শিক্ষাগত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে উত্তরবঙ্গের মানুষের উন্নতি করা সম্ভব বলেও সেই ট্যুইটে জানিয়েছেন তিনি।

রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, জিটিএ নিয়ে পৃথক ভাবে একটি বৈঠক করতে পারেন রাজ্যপাল। সেই বৈঠকেই থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বিনয় তামাং ও অনিত থাপার। রাজ্যপালের সঙ্গে এই বৈঠক হলেও মোটামুটি পরিস্কার হয়ে যাবে বিজেপির সঙ্গে তামাং-থাপার রসায়ন কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে।

এদিকে পাহাড়ে রাজ্যপাল থাকার সময়েই সেখানে পা রাখতে চাইছেন গুরুং। মোর্চা সূত্রে তেমন ইঙ্গিতই মিলেছে। কারণ রাজ্যপাল থাকার সময়ে বিনয় তামাং ও অনিত থাপারা বড়সড় কোনও হাঙ্গামা ঘটাতে পারবেন না গুরুংয়ের প্রত্যাবর্তন ঠেকাতে।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/bjp-on-free-vaccine-19-lakh-jobs-promise/

সেক্ষেত্রে বিজেপি ঘাড়েও দোষ চাপবে। তবে এই সব কিছুই এখনই হিসেবনিকেষের স্তরেই রয়েছে। কোনও মহল থেকেই এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে চূড়ান্ত কিছু ঘোষণা করেনি।

তবে বিনয়-অনিত শিবিরেও প্রশ্ন উঠেছে বিজেপির ঘনিষ্ঠতা নিয়ে। গুরুং-গিরি তৃণমূলমুখী হওয়ায় বিনয় আর অনিত এখন বিজেপিমুখী হয়েছেন। কারণ তাঁদের আশঙ্কা রয়েছে গুরুং-গিরি পাহাড়ে ফিরলেও তাঁরা সব ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবেন।

কিন্তু গুরুং-গিরির জন্য বিজেপি কী করেছে যে তা দেখে আজ বিনয়-অনিত বিজেপিমুখী হলেন সেই প্রশ্ন কিন্তু এবার উঠে গিয়েছে। যে বিজেপি গত ৬ বছরে পাহাড়ের জন্য কিছুই করেনি তাঁরা আজ বিনয়-অনিতের কথা শুনে চলবে এটা ভাবা আর আকাশকুসুম কল্পনা করার মধ্যে যে বিশেষ ফারাক নেই সেটা বিনয়-অনিত শিবিরের অনেকেই বুঝতে চাইছেন।

তাঁদের এখন চিন্তাভাবনা রাজ্য সরকারের সঙ্গে মধ্যস্থতার মাধ্যমে গুরুং-গিরি আর তামাং-থাপা শিবিরের মধ্যে ক্ষমতার সমবন্টন। তবেই শান্তি আর উন্নয়ন ফিরবে পাহাড়ে। নাহলে আবারও অশান্তি অবধারিত যা পাহাড়বাসী একদম চাইছেন না।

সম্পর্কিত পোস্ট