চাঁপদানি থেকে বিজেপি প্রার্থী জিতেন্দ্র তিওয়ারি! চলছে গুঞ্জন
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক : অবশেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মায়া কাটিয়ে গেরুয়া শিবিরের নাম লেখালেন আসানসোলের হেভিওয়েট নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি।
মাসখানেক আগেই যিনি বিজেপিতে যাব যাব করে আবার ফিরে এসেছিলেন ঘাসফুল শিবিরে। সাফাই দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধাচারণ করে তিনি কিছুই করতে পারবেন না। তবে এদিনের ঘটনা যেন অন্য কোনো রাজনৈতিক সমীকরণের আভাস দিচ্ছে।
ঘোষণা হয়ে গিয়েছে নির্বাচনে নির্ঘণ্ট। বুধবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তা ঠিক আগেরদিনই জিতেন্দ্র তিওয়ারির দলবদলে নতুন কোনো সমীকরণের গন্ধ খুঁজে পাচ্ছেন বাংলার রাজনৈতিক মহল।
সেইসঙ্গে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কেন আসানসোল থেকে ১৮৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বৈদ্যবাটিতে বিজেপিতে যোগ দিলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি? নাকি গোটা ঘটনাটা ঘটে গিয়েছে খুব স্বাভাবিক নিয়মেই?
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মোটেই এই জিনিসটিকে সাধারণ ঘটনা বলতে নারাজ। তাদের মতে যেসময়ে জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে নিয়ে আগে থেকেই ক্ষোভ ছিল আসানসোলের বিজেপি কর্মী সমর্থকদের। সেকথা বিলক্ষণ জানতেন নেতৃত্ব। একইসঙ্গে সেবার আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় রুখে দাঁড়িয়েছিলেন।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে জিতেন্দ্র তিওয়ারি যেকোনো মুহূর্তে বিজেপিতে যোগদান করতে পারেন। একথা বেশ ভালই জানতেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই এবারের নির্বাচনে হয়তো জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে টিকিটের আওতার বাইরে রেখেছিলেন তিনি।
সেকথা কানে আসা মাত্রই মুহূর্তের মধ্যে নিজের সিদ্ধান্ত বদলে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন জিতেন।তাই হয়তো তড়িঘড়ি একটি ছোট সভা থেকেই দলবদলটা সেরে ফেললেন তিনি।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে বৈদ্যবাটির চাঁপদানি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী হতে পারেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি।
কিন্তু নিজের পুরনো কেন্দ্র পাণ্ডবেশ্বর ছেড়ে কেন চাঁপদানিতে নিতে এসে দাঁড়াতে হচ্ছে জিতেনকে?
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাদের মতে বৈদ্যবাটির এই অঞ্চলে একটি বড় অংশ হিন্দিভাষীদের বাস।
তৃণমূলে থাকাকালীন একাধিকবার নির্বাচনের আগে বা নির্বাচনের পরে বিভিন্ন সময়ে কর্মসূচিতে এই অঞ্চলের বক্তৃতা করে গিয়েছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। ফলে এই অঞ্চলটা গোটাটাই তার নখদর্পণে। আর সেই ভোটকে টার্গেট করেই জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে এখান থেকে প্রার্থী করা হতে পারে।
একইসঙ্গে তারা আরো জানাচ্ছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে আসানসোলের বাইরে টিকিট দেওয়া হলে পশ্চিম বর্ধমানের নেতৃত্বদের বিরোধিতা করার জায়গা থাকবেনা। আসানসোল, জামুড়িয়া, পাণ্ডবেশ্বর, কুলটি, বার্নপুরে বিজেপি কর্মীরাদের সঙ্গে বারবার জিতেনের নেতৃত্বরে সংঘর্ষে জড়িয়েছে তৃণমূল। তাতে আসানসোল থেকে জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে কোন সিটে প্রার্থী করা হলে হয়তো আদি বনাম নব্য বিজেপির দ্বন্দ্ব প্রকট হতে পারে।
মনে করা হচ্ছে বেশ সমীকরণ কষেই জিতেনকে দলে নিয়েছে গেরুয়া শিবির। তবে এখনই কী ঘটবে তা বলা খুব খুব মুশকিল। চতুর্থ দফায় ১০ এপ্রিল চাঁপদানিতে নির্বাচন হবে। তার আগে অবশ্য পরিষ্কার হয়ে যাবে এখানে প্রার্থী কে।
এই মুহূর্তে সেখানে বিধায়ক রয়েছেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। যদি জিতেন্দ্র সেখানে প্রার্থী হন তাহলে লড়াই যে সেয়ানে সেয়ানে হবে সে কথা এখন থেকেই স্পষ্ট।