কর্মসূচির উদ্বোধনে মমতাকে নিশানা নাড্ডার, অবাস্তব বক্তব্যে খঁড়কুটো আকড়ে বাঁচার প্রয়াস দেখছেন পার্থ
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ‘আমার পরিবার বিজেপির পরিবার’ দলের নয়া কর্মসূচির সূচনায় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে একহাত নিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। শুক্রবার এই কর্মসূচির সূচনায় ভার্চুয়াল মিডিয়ার বক্তব্য রাখেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।
এই সভা থেকে তাঁর অভিযোগ, মমতার রাজত্বে বাংলায় কুশাসন চলছে। অর্থনৈতিকভাবে বাংলার সরকারের অবস্থা বেহাল।পুরো ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতিতে গোটা ব্যবস্থা ছেয়ে গিয়েছে। সামাজিক ভাবে সমস্ত মূল্যবোধের জলাঞ্জলী দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়, আরও একধাপ এগিয়ে নাড্ডার আভিযোগ, বাংলায় গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।পাড়ুয়াদের জন্য ভালো শিক্ষার কোনও ব্যবস্থা নেই। যুব সম্প্রদায়ের হাতে কাজ নেই। কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত ফসলের দাম পাচ্ছেন না। করোনার সময় সাধারণ মানুষের খাবারের সংস্থান করতে যে খাদ্য সামগ্রী পাঠাচ্ছে- তা নিয়েও দুর্নীতি করা হচ্ছে।
এদিন সরাসরি রাজ্য সরকারকে নিশানা করে বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি বলেন, কাটমানি ছাড়া বাংলায় কোনও কাজ হয়না।তাই কাটমানি নিয়েই সমস্ত কাজ হচ্ছে। করোনার সময় রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে । এর থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র উপায় রাজ্যে ভারতীয় জনতাপার্টির সরকার গঠন করা।
বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের করলেন ঝাড়খন্ড মুখ্যমন্ত্রী
এদিকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির সব অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নাড্ডার দাবি ভিত্তিহীন বলেছেন তিনি।
তাঁর কথায়, জেপি নাড্ডা অনেক কিছুই বলেছেন। তার সত্যতা বা বাস্তবতা কোনোটাই নেই। উনি অন্য রাজ্যের কথা বিবেচনা না করেই এসব বক্তব্য রেখেছেন।
কাটমানি নিয়ে জেপি নাড্ডার অভিযোগ প্রসঙ্গে পার্থ বলেন, প্রতিবার এক কাসুন্দি ঘেঁটে কোনও লাভ নেই। বাংলার মানুষ বিজেপির আসল মুখ ভালোভাবেই চেনে।
তিনি বলেন, বাংলার মানুষ জানে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একমাত্র মুখ হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিপন্নতা থেকে মানুষকে বাঁচাবেনও তিনিই। নিরন্ন মানুষের জন্য অন্ন জোগানোর ব্যবস্থাও করছেন তিনি।
পার্থর প্রশ্ন, কোন কারণে বাংলার মানুষ ভারতীয় জনতা পার্টিকে সমর্থন করবে। বাংলার জন্য কী করেছেন তাঁরা। কেন্দ্রে ভারতীয় জনতা পার্টি তো আছেই। বাংলার মানুষ তো দেখেছে ,এই কেন্দ্রীয় সরকারের সময় কীভাবে দেশের বেকারত্ব বেড়েছে। কীভাবে এই সরকারের সময় কৃষক আত্মহত্যা করেছে।
তাঁর মতে, বাস্তব অস্বীকার করে শুধু বানিজ্যিক কথাবার্তা বলছে বিজেপি । এই কথার কোনও সারবত্তা নেই। দেশের এত বড় রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসাবে জেপি নাড্ডার বক্তব্য তথ্য ও বাস্তব নির্ভর হওয়া উচিৎ। তাঁর এই বাস্তব বোঝা উচিত বাংলায় যে সার্বিক উন্নতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছেন তা ঐতিহাসিক। এখন শুধু রাজনৈতিক ভাসন দেওয়ার সময় নয়। এখন সময় করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার, মানুষের পাশে দাঁড়ানোর।
পার্থর প্রশ্ন, উনি তো বলছেন, কেন্দ্র আনাজপাতি পাঠিয়েছে। আমফানের টাকা কোথায় পাঠানো হয়েছে আজও বোঝা যাচ্ছে না। করোনাকালে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য অনেক ঘোষণা করেছিল বিজেপি। তবে তাদের জন্য বাস্তবে কি হয়েছে? কেন্দ্র কী করেছে! কেউ যদি তাঁদের জন্য কিছু করে থাকে তা করেছেন মমতাই।
তৃণমূল মহাসচিবের ভাষায়, বিজেপিকে খঁড়কুটো আকড়ে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে। যে বক্তৃতা জেপি নাড্ডা দিচ্ছেন, মানুষ এর সম্পর্কে অবগত আছেন। মানুষই তার জবাব দেবে।