পাউডারের সঙ্গে জল মিশিয়ে তরল করে তা ইনজেক্ট করা হচ্ছিল মানব শরীরে! কসবা ভুয়ো ভ্যাকসিন কান্ডে থরহরি কম্প!
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ কসবা ভ্যাকসিন কাণ্ডে নিয়ে ক্রমশ নতুন নতুন তথ্য উঠে আসতে শুরু করেছে পুলিশ ও পুরকর্তাদের সামনে। জানা গেছে, সরলা ডেভলপমেন্ট মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রাইভেট লিমিটেডের পক্ষ থেকে এনইএফটি-র মাধ্যমে ১ লক্ষ ১১ হাজার ১৫০ টাকা টাকা দেওয়া হয়েছিল ভুয়ো আইএস দেবাঞ্জন দেবকে। পাশাপাশি আরও বেশকিছু সংস্থার কাছ থেকে ভ্যাকসিন ক্যাম্প করার নাম করে টাকা তুলেছিল দেবাঞ্জন বলে এদিন জানান কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মন্ডলীর অন্যতম সদস্য অতীন ঘোষ।
তাঁর কথায়, কসবা অঞ্চলে যারা এখন থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন তাদের ১১২ জনের মধ্যে ৭০ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে। প্রাথমিকভাবে দেখা গিয়েছে ভ্যাকসিন নিয়ে অনেকেই প্যানিক অ্যাটাকের শিকার হয়েছেন।
কারোর কারোর মাথা, গা ও হাতে, পায়ে ব্যথা যন্ত্রণা রয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনের হালকা জ্বরও আছে। বেশ কয়েকজনের স্কিনে অ্যালার্জিও দেখা যায়। তবে কারোরই বড়োসড়ো অসুস্থতার লক্ষণ চোখে পড়েনি।
ইতিমধ্যেই কসবা ভ্যাকসিন কাণ্ড নিয়ে কলকাতা পুলিশ, ফরেনসিক ডিপার্টমেন্ট ও পুর আধিকারিকরা তদন্ত শুরু করেছে। এখনো পর্যন্ত যে সমস্ত মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছেন তাদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ জানানো হয়নি।
সাংসদ মিমি চক্রবর্তী ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও কোন এসএমএস বা শংসাপত্র পাননি। তারপরেই কলকাতা পুরসভাকে এই বিষয়ে অবহিত করেন। তারপরেই কসবা ভ্যাকসিন কাণ্ড নিয়ে তদন্ত শুরু হয়।
এদিন কলকাতা পুরসভার ডেপুটি সিএমওএইচ ডক্টর রনিতা সেনগুপ্ত জানান, “কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য যে সমস্ত শিশি বা ভয়েল ব্যবহার করা হয়েছিল, তার গায়ে কোনরকম ম্যানুফ্যাকচারিং ডেট, ব্যাচ নাম্বার, কোম্পানির নাম, কন্টেনটস সম্পর্কে কিছুই লেখা ছিল না।”
তিনি বলেন, “এদেশে বা এ রাজ্যে বর্তমানে ব্যবহৃত কোভিশিল্ড, কো-ভ্যাকসিন তরল আকারে শিশির মধ্যে থাকে। কিন্তু কসবায় যে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল, তার ব্যবহৃত শিশি বা ভয়েলে পাউডারের মত কিছু রাখা ছিল। যাতে জল বা স্যালাইন ওয়াটার জাতীয় কিছু মিশিয়ে সেটিকে তরল করে তোলা হচ্ছিল। সেগুলি মানব শরীরে ইনজেক্ট করা হচ্ছিল।”
এদিন কলকাতা পৌরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য ও বিধায়ক অতীন ঘোষ বলেন, কসবা এলাকায় বহু মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছেন। কিন্তু তাদের কাছে কোন মেসেজ বা তথ্য কিছুই দেওয়া হয়নি। ভ্যাকসিন প্রদানের নিয়মে অনুযায়ী, কেউ ভ্যাকসিনেশন ক্যাম্প করলে তাকে কলকাতা পৌরসভার অনুমতি নিতে হবে এমন কথা বলা নেই। মিথ্যা প্রচার করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, “যারা ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন, তারা কলকাতা পৌরসভাকে জানায়নি। অতএব যারা নিয়েছেন এই ভ্যাকসিন দায় তাদের।”
ভ্যাকসিনের মধ্যে আদৌ কী ছিল? তা জানতে ল্যাবরেটরীতে পাঠানো হয়েছে। সেই তথ্য আসলে পুরোটা জানা যাবে।