১৬ তে বাজিমাত করেছিল খাদ্যসাথী, ২১ এ কী তবে ফ্রি রেশন মন্ত্র?

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের খাদ্যসাথী প্রকল্পকে সামনে রেখে বাজিমাত করেছিল শাসক দল তৃণমূল। বছর ঘুরলেই একুশের বিধানসভা নির্বাচন।

বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে একুশের ভার্চুয়াল সভা থেকে মাস্টারস্ট্রোকটা দিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, একুশে ক্ষমতায় থাকলে বিনামূল্যে রেশন-শিক্ষা-স্বাস্থ্য পরিষেবা পাবেন বাংলায় মানুষ। এরপরই রাজনৈতিক মহল মনে করছে, একুশের বিধানসভা ভোটের ইস্তেহার যেন এই ভার্চুয়াল সভা থেকেই লেখা হয়ে গেল তৃণমূল কংগ্রেসের। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে তারই একটা বড় ঘোষণা করে দিলেন তৃণমূলনেত্রী।

এমনিতে কোভিড পরিস্থিতির জন্য আগামী জুন পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

এদিন শহিদ দিবসের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বড্ড মিথ্যে অপপ্রচার হচ্ছে। বাংলায় কত রেশন দোকান রয়েছে? দু’একটা স্পটে গণ্ডগোল হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা তার ব্যবস্থা নিয়েছি। এত ব্লকে সরকার শান্তিতে কাজ করছে সেটা নিয়ে কিছু বলছে না। দু’একটা ঘটনা নিয়ে বিজেপি, কংগ্রেস সিপিএম লণ্ডভণ্ড করতে নেমে পড়েছে।

এদিন ২১শের ভার্চুয়াল সভায় বলতে উঠে তৃণমূল সুপ্রিমো রেশন প্রসঙ্গ টেনে আনেন। রেশন নিয়ে রাজ্যে লকডাউনের মধ্যেই বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। তার জেরে শতাধিক ডিলারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেয় রাজ্য খাদ্য দফতর। তারপর থেকেই অবশ্য রেশন নিয়ে সেই বিক্ষোভ স্থিমিত হয়ে যায়।

২১ এ জনসভা নয়, পথসভা করবে তৃণমূল, আমাদের সরকার অনুমতি দেবেঃ দিলীপ ঘোষ

এদিন সেই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে এনে মুখ্যমন্ত্রী বিঁধলেন কেন্দ্রীয় সরকারকেও। তাঁদের পাঠানো চাল নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন তুলে দিলেন তিনি।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভাল চাল আমরা দিই, খারাপ চাল কেন্দ্রীয় সরকার দেয়। ওটা পচা চাল। এরপরেই তিনি সারা জীবন রেশন দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, ‘আমাদের সরকার থাকলে সারা জীবন বিনামূল্যে রেশন পাবেন, স্বাস্থ্য পাবেন। সম্মান নিয়ে বাঁচব আমরা। টাকা কোথা থেকে আসবে সে চিন্তা করতে হবে না কাউকে। মানুষের জন্য যা করা প্রয়োজন তা-ই করব।

একই সঙ্গে রেশনের দুর্নীতি নিয়ে দলের কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, একটা লোক যদি দুষ্টুমি করে তাহলে সবার বদনাম না হয়। সেটা যেন না হয়, আপনারা সাধারণ মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়ান। লোকে আপনাকে মনে রাখবে। কেউ যদি রেশন না পায় তাহলে দেখুন সে কেন রেশন পাচ্ছে না। প্রয়োজন হলে বিডিওর সঙ্গে কথা বলুন। একই সঙ্গে আম্ফানের দুর্নীতি ও তার জেরে টাকা না পাওয়ার ক্ষোব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, যাঁরা সত্যিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের চিন্তা নেই। সবাই সরকারি সাহায্য পাবেন।

যদিও ফ্রি রেশনের কথা শুনে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, সাত মণ তেলও পুড়বে না আর রাধাও নাচবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একুশে সরকারে আসছেন না। সুতরাং এই ঘোষণার কোনও অর্থই নেই।

তাঁর আরও বক্তব্য, আসলে দিদিমণি জানেন তিনি আর নবান্নে যেতে পারবেন না। তাই বলছেন, আকাশ দেবেন, চাঁদ দেবেন, নদী দেবেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এটাই শেষ একুশে জুলাই। যে চাল চোরেরা তৃণমূলে আলো করে রয়েছে তাদের সামনে সারা জীবনের উপার্জনের রাস্তা দেখিয়ে রাখা হচ্ছে। কিন্তু সে গুড়ে বালি।

সম্পর্কিত পোস্ট