কলকাতার রাস্তায় আজ থেকেই নামল অটো, ফুটপাতের দোকান খোলার কথা থাকলেও আমফানের কারণে ব্যাহত পরিষেবা
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বুধবার সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে চালু হল অটো পরিষেবা। একইসঙ্গে এদিন থেকেই খুলল হকার্স মার্কেট, ফুটপাতের দোকান।
কনটেনমেন্ট জোন বাদ দিয়ে এদিন থেকে অটো চালুর অনুমতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। আপাতত সরকারি নির্দেশ মেনে অটোয় ২ জন যাত্রী তােলা হচ্ছে। পূর্ব নির্ধারিত ভাড়াতেই আপাতত দুজন যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন অটোচালকেরা।
এদিন দমদমের নাগেরবাজার, উল্টোডাঙ্গা সহ বিভিন্ন জায়গায় অটো চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, আপাতত সরকারের নির্দেশকে মাথায় রেখেই দু’জনকেই যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে পূর্বনির্ধারিত ভাড়াতেই তারা অটো চালাচ্ছেন।
তবে কেউ যদি স্বেচ্ছায় বাড়তি ভাড়া দেন তাদের মানা করা হচ্ছে না। অটোচালকেরা এও বলছেন আপাতত এক মাস এভাবে চলার পর কতটা ক্ষতি হয় তা ইউনিয়নের সঙ্গে বসে পর্যালোচনা হবে তারপরই ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করা হবে। আপাতত পুরনো ভাড়াতেই সবকিছু চলছে।
অন্যদিকে, জোড় বিজোড় নীতি মেনে এদিন থেকেই খুলে গেল হকার্স মার্কেট ও ফুটপাথের দোকান। চতুর্থ দফার লকডাউন চলবে ৩১ মে পর্যন্ত।
রাজ্য সরকার এই দফার লকডাউনে কনটেনমেন্ট জোন বাদ দিয়ে গণপরিবহণও ধাপে ধাপে সচল করার কাজ শুরু করেছে। শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রুটে বাসের সংখ্যা অনেকটাই বাড়িয়েছে পরিবহণ দফতর।
যদিও এরইমধ্যে শহরের একাধিক জায়গায় আগে থেকেই অটো চলছিল। কামালগাজি, গড়িয়া, মেটিয়াবুরুজ, খিদিরপুর এলাকায় কিছু কিছু অটো রাস্তায় দেখা গিয়েছিল। বাসিন্দাদের অভিযােগ ছিল লকডাউনে অটোর ভাড়া ইচ্ছামতাে বাড়িয়েছেন চালকরা।
৯ টাকার ভাড়া ৩০ টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযােগ উঠেছিল। এরপরই অটো চালুর ব্যাপারে পুলিশ ও পরিবহণ দফতরকে প্রয়ােজনীয় গাইডলাইন তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল সরকার । তবে ২ জন যাত্রী নিয়ে চললে অটোর ভাড়া কী হবে সেব্যাপারে এখনাে কিছু জানায়নি পরিবহণ দফতর।
এর আগেই বেসরকারি বাস মালিকদের বর্ধিত ভাড়ার দাবি খারিজ করে দিয়েছিল সরকার। বেসরকারি বাস মালিকরা ফের সরকারের কাছে বাস চালু করার জন্য আর্জি জানিয়েছেন।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতই এ দিন থেকেই জোড়-বিজোড় নীতি মেনে ফুটপাতের দোকান ও হকার মার্কেট খােলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে । এর জন্য রাজ্য পুলিশের ডিজি কলকাতার পুলিশ কমিশনার ও অন্যান্য আধিকারিকদের নিয়ে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
লকডাউনের মধ্যে কাজ এগিয়ে রাখছেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কর্তারা, বাড়ি থেকেই নম্বর সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু
হকার সংগঠনগুলাের সঙ্গে কথা বলে ওই কমিটি এ ব্যাপারে রুপরেখা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। পুলিশ সূত্রে খবর, কবে কোন দোকান খোলা হবে তার জন্য দোকানদারদের পাস ইস্যু করা হয়েছে। ফুটপাতের প্রতিটি দোকানকে আলাদা নম্বর দেওয়া হয়েছে। তার ভিত্তিতেই কোনদিন জোড় সংখ্যা , কোনদিন বিজোড় সংখ্যার দোকান রােটেশন অনুযায়ী খােলা হচ্ছে।
এদিন অনেক দোকানদারের সঙ্গে কথা বললেও তাদের গলায় হতাশার সুর, তারা বলছেন দোকান তো খোলা হচ্ছে কিন্তু এই জিনিস কিনবে কারা। লোক কোথায়? ফুটপাতের দোকান, হকার্স মার্কেটে সানিটাইজেশন করার পরেই এদিন দোকান খোলা হয়।
কবে এই দোকানগুলিতে মানুষের উপস্থিতি আশানুরূপ নয়। এদিন হকার্স ইউনিয়নের নেতা শক্তিমান ঘােষ জানালেন , এদিন থেকে দোকান খোলার কথা থাকলেও। বহু দোকানদার কাদের দোকান খুলতে পারেনি। কারণ ঘূর্ণিঝড় আমফান বহু ফুটপাতের দোকান ভেঙে তছনছ করে দিয়ে গিয়েছে। এগুলো ঠিক করে কবে ফের ফুটপাতে দোকান খোলা যাবে অনেকেই বলতে পারছেন না। ফলে এই মানুষগুলো যেমন অন্ধকারে ছিল তেমন অন্ধকারেই রয়ে গেছেন।