গুরুত্বপূর্ণ মামলার মধ্যেই চেয়ারম্যানের ইস্তফা, রাজ্যের উপর ভরসা হারিয়ে SSC-র অফিস সিলের নির্দেশ

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ চন্দ্র অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর স্কুলশিক্ষিকার চাকরি পাওয়া নিয়ে মঙ্গলবার এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদারের কাছে তথ্য চেয়ে ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তারপরই বুধবার সকালে হঠাৎ করেই পদ থেকে ইস্তফা দেন সিদ্ধার্থ। অভিযোগ এসএসসির চেয়ারম্যানের ইস্তফার পরই এস‌এসসির বিতর্কিত উপদেষ্টা কমিটির সদস্যদের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন এসএসসি ভবনে প্রবেশ করেন।

এরপরই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লোপাট ও বিকৃত করার আশঙ্কা দেখা দেয় আন্দোলনরত চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে। সন্ধ্যাতেই এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে বিশেষ শুনানির আবেদন জানান আন্দোলনকারীদের আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। সেই আবেদনের শুনানির পর এসএসসির সদর দফতর আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র ভবন কার্যত সিল করে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । এই রায়কে বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন বলে মনে করা হচ্ছে।

বুধবার সন্ধেতে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে এসএসসি ভবনে থাকা তথ্যের নিরাপত্তা চেয়ে বিশেষ শুনানির আবেদন জানানোর পর‌ প্রধান বিচারপতির অনুমতি আনার নির্দেশ দেন বিচারপতি। আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি কাছে হাজির হয় এই বিষয়ে রাত্রিকালীন শুনানির ছাড়পত্র আদায় করে আনেন। এরপর‌ই রাত দশটা নাগাদ কলকাতা হাইকোর্টে নিজের চেম্বারে এসে পৌঁছন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর চেম্বারেই শুরু হয় রাত্রিকালীন এই শুনানি।

বৃহস্পতিবারই CBI দফতরে হাজিরা দিতে চেয়ে আইনজীবী মারফৎ আবেদন অনুব্রত মন্ডলের

শুনানির শুরুতেই আন্দোলনকারীদের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যর কাছ থেকে বিচারপতি জানতে পারেন এসএসসি চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সিদ্ধার্থ মজুমদার। যা শুনে বিচারপতি বিস্মিত হয়ে যান। একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা চলাকালীন কী করে তিনি ইস্তফা দিলেন তা নিয়ে কথা হয়।

এরপর‌ই বিকাশবাবু জানান বেশকিছু বহিরাগত এ দিন দুপুরের পর এসএসসি ভবনে ঢোকেন। তাদের দ্বারা তথ্য বিকৃতি ও গুরুত্বপূর্ণ ফাইল লোপাটের আশঙ্কা আছে বলে তিনি জানান। সব শুনে নজিরবিহীন রায় দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট বলে দেন এদিনই রাত সাড়ে বারোটার মধ্যে এসএসসি ভবনের দখল নিতে হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআরপিএফকে।

বিচারপতির স্পষ্ট নির্দেশ, রাত সাড়ে বারোটায় সিআরপিএফ এসএসসি ভবনের দখল নেওয়ার পর থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর একটা পর্যন্ত সেখানে কর্মচারী থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ আধিকারিক, এমনকি মন্ত্রী কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না। সেইসঙ্গে বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটার মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে এসএসসি ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ জমা দেওয়ার কড়া নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে বুধবার এসএসসি ভবন সিআরপিএফের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার আগে পর্যন্ত কারা কারা সেখানে প্রবেশ করেছিল তার বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এসএসসির বিভিন্ন দুর্নীতি মামলায় একের পর এক নজিরবিহীন রায় দিয়েছেন। তবে এদিন মধ্যরাতে যে রায় দিলেন তা কার্যত নজিরবিহীন। এতে সরকারের প্রতি বিচারব্যবস্থার অনাস্থা আরও প্রকট করে উঠল বলে বিরোধীদের দাবি।

সম্পর্কিত পোস্ট