Kunal Ghosh : তৃণমূলে হচ্ছেটা কী! কুণাল কি কারোর বোড়ে হিসেবে কাজ করছেন?
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ তৃণমূলে (TMC) হচ্ছেটা কী! ২০১১ সালে দীর্ঘ বাম (CPIM) শাসনের অবসান ঘটিয়ে ক্ষমতায় আসার পর প্রথম দুটো টার্মে অজস্র কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়লেও দলের শীর্ষ নেতাদের অনৈক্য সেভাবে প্রকট হয়নি। অন্তত কেউ কারোর বিরুদ্ধে সেভাবে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেননি।
এরই মাঝে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) দল ছেড়েছেন। কিন্তু তিনি যতদিন তৃণমূলে ছিলেন প্রকাশ্যে কাউকে উদ্দেশ্য করে মন্তব্য করেননি। সারদা (Sarada Scam) মামলায় জড়িয়ে কুণাল ঘোষ ( Kunal Ghosh ) জেলে যাওয়ার পর যখনই সুযোগ পেতেন সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) নিশানা করতেন। কিন্তু সেই সময় গোটা তৃণমূল তাঁর থেকে দূরত্ব বাড়িয়েছিল। আলাদা করে কাউকে কোনও পক্ষ নিতে দেখা যায়নি।
কিন্তু তৃতীয়বার বিজেপি প্রবল প্রতাপকে ঠেকিয়ে সরকার গঠনের পরই যেন গোটা ব্যাপারটা গুলিয়ে গিয়েছে তৃণমূলের মধ্যে, আড়াআড়ি বিভাজন অত্যন্ত স্পষ্ট। কুণাল ঘোষের সঙ্গে এর আগে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Kalyan Banerjee) সরাসরি লেগেছিল। সেই সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) মহাসচিব ও দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির প্রধান হিসেবে কড়া বার্তা দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
Sundarban : ইয়াস ও আম্ফান বিধ্বস্ত সুন্দরবনের পূণর্গঠনে ADB কে ঋণের আবেদন রাজ্যের
কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল পার্থর(Partha Chatterjee) সেই ভূমিকায় খুব একটা খুশি হননি অভিষেক (Abhishek Banerjee)। কল্যাণ আগে মুখ খোলা সত্বেও পার্থ তাঁর বিরুদ্ধে নরম মনোভাব দেখিয়েছেন, এমনই ধারণা ছিল অভিষেক শিবিরের।
যদিও পরে ব্যাপারটি ধামাচাপা পড়ে যায়। শোনা যায় ধামাচাপা পড়লেও পার্থর ওপর ক্ষোভ ছিল কুণালের মনে। সেই ক্ষোভই সম্ভবত এসএসসি বিতর্কের সময় শক্তিশালী হয়ে আছড়ে পড়ছে পার্থর গায়ে।
এসএসসি(SSC) বিতর্ক নিয়ে অভিষেক ঘনিষ্ঠ বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর পাশে দাঁড়িয়ে কুণাল বলেন, বিষয়টি তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আমলের। এই আগেই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তবে সবচেয়ে বেশি চাঞ্চল্য তৈরি হয় তাঁর সোমবারের মন্তব্য ঘিরে।
চিটফান্ড মামলায় জেলবন্দি থাকাকালীন তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ। এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে সোমবার আদালতে হাজির হয়ে আইকোর চিটফান্ডের প্রসঙ্গ টেনে নাম না করে রাজ্যের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীকে গ্রেফতারের দাবি জানান!
অতীতে আইকোর মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম জড়াতে দেখা গিয়েছিল। তাই তৃণমূল মহাসচিবের অনুগামীদের ধারণা নাম না করলেও পার্থকেই নিশানা করেছেন কুণাল। তাঁরাও পাল্টা কুণালের অপসারণের দাবি জানিয়ে বেহালা, তারাতলা অঞ্চলে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান। কুণালের কুশপুতুলও পোড়ানো হয়!
এই গোটা ঘটনাক্রমে সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হল তৃণমূলের একটা বড় অংশ প্রকাশ্যে না হলেও পিছন থেকে কুণাল ঘোষকে মদত দিচ্ছেন, এমনটাই মনে করছে দলের অপর একটি অংশ! এই বিতর্কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও মুখ খোলেননি। কিন্তু প্রকাশ্যে যা ঘটছে তা মোটেও ভাল হচ্ছে না। বেশি দিন এই অবস্থা চলতে থাকলে তৃণমূলের এই আড়াআড়ি বিভাজন এবার নিচুতলায় পৌঁছে যেতে পারে।