লক্ষ্মীর দলত্যাগ প্রভাব ফেলবে না নির্বাচনে , সরব কুনাল -অরূপ
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজনীতি থেকে অবসর চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর পদ ছেড়ে বর্তমানে তিনি বিধায়ক হিসেবেই থাকবেন। এই মর্মে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন লক্ষ্মীরতন।
লক্ষ্মীর ইস্তফার খবর প্রকাশ্যে আসার কিছু ক্ষণের মধ্যেই মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন,খেলাধুলার জন্য রাজনীতি থেকে সরে যেতে চান লক্ষীরতন শুক্লা। তবে মন্ত্রিসভা থেকে তিনি পদত্যাগ করেননি।
মঙ্গলবার মমতা জানান, লক্ষীরতন যে চিঠি পাঠিয়েছে সেখানে মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফার কথা তিনি লেখেননি। লক্ষ্মী চিঠিতে কী লিখেছেন তা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”তিনি (লক্ষ্মীরতন শুক্ল) লিখেছেন, ‘আমি খেলার প্রয়োজনে রাজনীতি থেকে দূরে সরে যেতে চাই।’
তাই তাঁকে অব্যাহতি দিতে পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করার জন্য রাজ্যপালকে সুপারিশ করা হয়েছে।” তবে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, উত্তর হাওড়ার বিধায়ক বিধায়ক হিসেবে লক্ষ্মী মেয়াদ পূর্ণ করবেন।
মঙ্গলবার মন্ত্রিত্বের পাশাপাশি হাওড়া জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন লক্ষ্মী। এই খবর সামনে আসার পর থেকে তাঁকে নিয়ে জল্পনা ডালপালা মেলতে শুরু করেছে। তবে মমতার মতে, খেলাধুলা ছাড়া লক্ষ্মীর ইস্তফাতে ভিন্ন কোনও কারণ নেই।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/make-in-india-is-actually-sell-india-dola-sen/
তাঁর কথায়, ”কেউ পদত্যাগ করতেই পারেন। তাতে কী আসে যায়।” তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে লক্ষ্মীর প্রশংসা করে এ দিন তিনি বলেন, ”ও ভাল ছেলে। ইস্তফা দিয়েছে ঠিক আছে। কিন্তু এর মধ্যে কোনও ভুল বোঝাবুঝি নেই।”
‘দ্বিতীয় ইনিংস’-এর জন্য লক্ষীকে আগাম শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন মমতা। রাজ্যপালকে তিনি লক্ষ্মীরতন শুক্লার পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করার আবেজন জানাবেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
২০১৬ সালে রাজ্যের ক্ষমতায় দ্বিতীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার আসার পর ক্রীড়াদপ্তরের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান হাওড়া উত্তরের বিধায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্লা। দক্ষতার সঙ্গেই সেই কাজ চালাচ্ছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার। পুজোর আগে সংগঠনে রদবদলের সময়ে তাঁকে হাওড়ার জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পদও তিনি ছাড়তে চেয়েছেন।
সূত্রের খবর, হাওড়া জেলার দুই তৃণমূল নেতা অরূপ রায় ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতবিরোধের জেরে দলের অন্দরে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছিল লক্ষ্মীর। সম্ভবত সেই কারণেই তিনি হাওড়া জেলা সভাপতির পদ থেকেও ইস্তফা দিলেন।
লক্ষ্মী রতন শুল্কা জানান, এলাকার মানুষ তাঁকে নির্বাচন করেছেন। কিন্তু পুর বোর্ড না থাকায় কাজ হচ্ছে না। মানুষ সমস্যায় রয়েছেন। এটা তাঁর খারাপ লাগছে। তাই তিনি মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন, সভাপতি পদও ছাড়লেন। কিন্তু বিধায়ক পদ ছাড়লেন না, মানুষের জন্যে কাজ করে যাবেন বলে।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/completely-healthy-sourav-ganguly-he-will-return-home-on-thursday-morning/
বাংলা রঞ্জি দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার নিজের ইস্তফাপত্রেই ‘রাজনীতি থেকে অবসর’ নেওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশ করেন। গত কয়েকদিন ধরেই দলের নানা অনুষ্ঠানে গরহাজির থাকছিলেন তিনি। হাওড়া জেলায় শাসকদলের অন্দরে ডামাডোলের ছবিটা অবশ্য নতুন বছরের প্রথম দিনই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল।
পার্টির জেলা সদরের মূল অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের সদর সভাপতি লক্ষীরতন শুক্লা। গত কয়েক মাস আগেই একাধিক সাংগঠনিক রদবদলের মাধম্যে অরূপ রায়কে সরিয়ে হাওড়া জেলা (সদর) তৃণমূল সভাপতি করা হয়েছিল লক্ষ্মীরতন শুক্লাকে।
বাড়তি দায়িত্ব আসায় প্রাথমিকভাবে দলের অন্দরে কিছুটা সক্রিয়ও হতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। কিন্তু, কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ না পাওয়ার জন্য ঘনিষ্ঠ মহলে এর আগেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন বলে জানা যায়। শেষ পর্যন্ত ভোটের কয়েক মাস আগেই মন্ত্রিত্ব-সহ জেলা সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তিনি।
হঠাত করেই লক্ষ্মী রতন শুক্লার ইস্তফা আগামী বিধানসভা ভোটের আগে নিঃসন্দেহে বড় ধাক্কা বলে মনে করছে তৃণমূল। যদিও তা মেনে নিয়েছেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, লক্ষ্মীর ইস্তফা অবশ্যই দুঃখজনক ঘটনা।
দমদম লোকসভা কেন্দ্রের এই সাংসদ বলেন, ‘ও ভাল মন্ত্রী, সবাই ওঁকে পছন্দ করত। ওঁকে ফিরিয়ে আনা দরকার। আমি আবেদন করব লক্ষ্মী পদত্যাগপত্র তুলে নিন।’
তিনি আরও বলেন,’ দলের তোমাকে প্রয়োজন। দল ছেড়ো না।’ অন্যদিকে, নবান্নে লক্ষ্মীর পদত্যাগ নিয়ে মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর দাবি, লক্ষ্মীর ইস্তফার পিছনে নেগেটিভ কিছু নেই। খেলার জন্যেই মন্ত্রিত্ব ছেড়েছে ও! খেলার জগতে আবার পা রাখার জন্যে শুভেচ্ছাবার্তাও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে, তৃণমূলের কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন, কেন ঠিক ভোটের আগে লক্ষ্মীরতন এভাবে দল ছাড়লেন তাঁরা জানেন না। দল তাঁকে বিধায়ক পদ দিয়েছে, মর্যাদা দিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেষ্টা করেছেন, শুধু রাজনীতি নয়, অন্যান্য পেশার মানুষকেও নিয়ে এসে দায়িত্ব দিতে। তাঁরা যথেষ্ট ভাল কাজ করছেন। বিজেপির দেউলিয়া দশা, তাই তারা অন্য় দলের দিকে এভাবে নজর দিচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে হাওড়া জেলা তৃণমূল নেতা অরূপ রায় বলেন, “তিনি কী করবেন তা তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমার সঙ্গে ছোট ভাইয়ের মত সম্পর্ক ছিল। মন্ত্রী হওয়ার আগে থেকেই চিনতাম। খুব ভাল সম্পর্ক। এই মুহূর্তে বিধানসভা নির্বাচনের আগে যদি এমনটা করেন, তাহলে তো যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়নের মতো।”