২৩ শে ত্রিপুরাতেও বাম-কং জোট? সেমিফাইনালের ফল উস্কে দিল জল্পনা
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ত্রিপুরার চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন কার্যত সেমিফাইনালের মর্যাদা পেয়েছিল। রবিবার ফল প্রকাশের পর দেখা গেল উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে সাড়ে চার বছরের মাথাতেও গেরুয়া ঝড় অব্যাহত। ৩-১ ব্যবধানে জিতে বিজেপি বুঝিয়ে দিল আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য তারা পুরোপুরি প্রস্তুত।
উপনির্বাচনে বামেদের যুবরাজনগর আসনটি হাতছাড়া হওয়াকে বড় ধাক্কা বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তেমনই আগরতলা ৬ কেন্দ্রে সুদীপ রায়বর্মনের জয় কংগ্রেসকে আবার সে রাজ্যে প্রাসঙ্গিক করল বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা। এই অবস্থায় নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের আভাস ভেসে আসছে ত্রিপুরা থেকে।
এই উপ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন বিজেপি চারটি কেন্দ্রে ব্যাপক সন্ত্রাস চালিয়েছে বলে সিপিএম, কংগ্রেস, তৃণমূল সব শিবির থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল। ভোট প্রচার পর্বে আক্রান্ত হয়েছিলেন সদ্য নির্বাচিত কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মন। ভুয়ো ভোটারদের একাধিক ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়েছিল ত্রিপুরা সিপিএম।
তারপরেও ভোটের ফল বুঝিয়ে দিচ্ছে নিচুতলায় সিপিএমের সংগঠনের রাস অনেকটাই দুর্বল হয়েছে। বিশেষ করে বিজেপি যেভাবে তাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করেছে তার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হলে বিরোধীদের একজোট হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
আগরতলাতেই এই! ত্রিপুরাবাসী ‘নো এন্ট্রি’ বোর্ড ঝুলিয়েছে, বুঝবে কী তৃণমূল…?
নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় সুদীপ রায়বর্মন কিছুটা তেমন ইঙ্গিতই যেন দেন। তিনি সরাসরি বামেদের নাম না করে বলেন, “বিজেপির মতো ফ্যাসিস্ট শক্তিকে হারাতে হলে সমস্ত গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির একজোট হওয়া প্রয়োজন”।
রবিবার রাতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। সেখানে বাম নেতাকর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহার আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেন। এর থেকেই রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা সেমিফাইনালের ফল প্রকাশের পরই বাস্তবটা বুঝতে পেরে ধীরে ধীরে কাছে আসতে শুরু করেছে বাম ও কংগ্রেস।
তবে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের এই সমীকরণে আপাতত তৃণমূলকে দেখা যাচ্ছে না। কারণ চারটি বিধানসভার একটিতেও তারা বিন্দুমাত্র ছাপ ফেলতে পারেনি। উল্টে তাদেরকে ‘ভোট কাটুয়া’ পার্টি বলে দেগে দিতে চাইছে সিপিএম ও কংগ্রেস দুপক্ষই। তবে বাম কংগ্রেস জোট হওয়াটা ত্রিপুরার মাটিতে খুব সহজ নয়।
কারণ বাম জমানার স্মৃতি কংগ্রেস সমর্থকদের মন থেকে এখনও মুছে যায়নি। অপরদিকে সাড়ে চার বছর আগেও মূলত কংগ্রেসে বিরোধিতা করেই ত্রিপুরায় পায়ের তলার জমি ধরে রেখেছিল সিপিএম। এই পরিস্থিতিতে বাম ও কংগ্রেস একজোট হলে দুয়ে দুয়ে চার হওয়ার বদলে শূন্যও হতে পারে! কারণ রাজনীতি সব সময় সরল পাটিগণিত মেনে চলে না।