রাজ্যের জিএসটি বকেয়া নিয়ে ৬ বিরোধী মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজ্যের বকেয়া জিএসটি চেয়ে ফের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কড়া চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ক্ষতিপূরণের ইস্যুতে মমতা-সহ ছয় বি-বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিছেলেন।

এই চিঠিতে তাঁরা কেন্দ্রকে তার ‘সাংবিধানিক দায়িত্ব’ স্মরণ করিয়ে জিএসটি ক্ষতিপূরণের ‘স্থায়ী বিকল্প’ বের করার কথা বলেছেন। তাঁদের দাবি, কেন্দ্রকে জিএসটির ক্ষতিপূরণে ২.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা বকেয়া পূরণ করতেই হবে।

কেন্দ্র রাজ্যকে ঋণ নেওয়ার যে পরামর্শ দিয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করে তাঁরা বলেছেন, এই অবস্থায় রাজ্যগুলির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকাতা করছে কেন্দ্র, প্রয়োজন হলে কেন্দ্র ঋণ নিক।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এও জানিয়েছেন, প্রত্যেক রাজ্যের যে বকেয়া জিএসটি রয়েছে তা দিয়ে দেওয়া হোক। অন্যথায় দেশের গণতন্ত্র রক্ষা করা সম্ভব হবে না।

উল্লেখ্য, শুধু এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীই নয়, কেরল, তামিলনাড়ু, ছত্তিশগড়, দিল্লি, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রীরাও এই একই দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন।

তবে এঁদের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর চিঠিই সবচেয়ে কড়া। সরাসরি তিনি বলেন, রাজ্যের পাওনা না দিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করছে কেন্দ্র। কারণ জিএসটি চালুর সময় যে প্রতিশ্রুতি তারা দিয়েছিল তা থেকে কোনওভাবেই সরে আসতে পারে না কেন্দ্র।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/who-gave-the-right-to-ruin-the-future-of-the-students-cm-mamata-banerjee-shout-against-bjp/

এদিন চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে মমতা মনে করিয়ে দিয়েছেন, আপনি যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন বিজেপির পক্ষ থেকে এই জিএসটি’র বিরোধিতা করা হয়েছিল। বিজেপি ২০১৩ সালে যে কারণে জিএসটির বিরোধিতা করেছিল, আজ রাজ্য সরকারও একই কারণে এর বিরোধিতা করছে।

তিনি লিখেছেন, ‘২০১৩ সালে বিজেপির বিরোধিতার একমাত্র কারণ ছিল তৎকালীন সরকারের জিএসটি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে নির্দিষ্ট আশ্বাস দিতে না পারা। আজ, আমরা সেই কারণেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উপর বিশ্বাস রাখতে পারছি না। সত্যি কথা বলতে কী প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলির সেই কথাগুলিই আমাদের কানে বাজে।

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কেন্দ্র এখন রাজ্যের ভাঁড়ারের উপর চাপ কমাতে বাজার থেকে ধার করার পরামর্শ দিচ্ছে। কিন্তু রাজ্যের তুলনায় কেন্দ্র ধার নিলে তার সুদ কম হয়। তা না করে রাজ্যগুলিকে কেন ধার নিতে বলা হচ্ছে। এটা তাহলে বিশ্বাসঘাতকতার সামিল ! যে বিশ্বাস থেকে সব রাজ্যগুলি জিএসটিতে সায় দিয়েছিল, কেন্দ্র এখন তা ভুলে যাচ্ছে! পাঁচ বছর টানা কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেবে, এই কথায় সহমত হয়েছিল সব পক্ষ। আর এখন বছর দুই কাটতে না কাটতেই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ অবস্থান বদলে নেওয়া হচ্ছে। এটা কোনও ভাবেই দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর সঙ্গে যায় না।

দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল কে বেণুগোপালের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে লিখেছেন, তিনি সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছেন রাজ্যকে সব বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু অর্থমন্ত্রী নিজেই জানাচ্ছেন, সেটা সম্ভব নয়।

পাশাপাশি, রাজ্যকে ঋণ নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। এভাবে কোনও কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক চলতে পারে না। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ অবিলম্বে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সব মিলিয়ে গত সপ্তাহের বিরোধীদের বৈঠকে নিট ছাড়া জিএসটি নিয়ে যে জোটবদ্ধ হওয়ার ছবি দেখা গিয়েছিল, এদিন ফের তা দেখা গেল প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠির মধ্য দিয়ে।

সূত্রের খবর, কমবেশ বাকি ৫ মুখ্যমন্ত্রীই প্রধানমন্ত্রীকে এই বিষয়ে কড়া চিঠি লিখেছেন, যার মূল ভিত্তি কেন্দ্রের বিশ্বাসভঙ্গের প্রসঙ্গ।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন,রাজ্যগুলির উপরে শোষণমূলক বোঝা চাপানো হচ্ছে, ইতিমধ্যে তাদের রাজস্ব আদায় হ্রাস পেয়েছে এবং কোভিড -১৯-এর পরিস্থিতিতে তাদের অতিরিক্ত ব্যয়ের বোঝা বহন করতে হচ্ছে।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/mamata-banerjee-will-give-land-ownership-on-refugee-colonies-before-2021-assembly-election/

চিঠিতে বিভিন্ন মুখ্যমন্ত্রীরা বলেছেন যে, রাজ্যগুলি যদি ঋণ নেয়, তবে তা পরিশোধের দায়ও এসে পড়বে রাজ্যের ঘাড়ে। এতে রাজ্যের ওপর ঋণের বোঝা আরও বাড়বে। যেহেতু তারা ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক সমস্যায় জর্জরিত, সেক্ষেত্রে এই ঋণ তাদের উপর বাড়তি চাপ তৈরি করবে।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছিলেন,রাজ্যগুলির উপরে শোষণমূলক বোঝা চাপানো হচ্ছে, ইতিমধ্যে তাদের রাজস্ব আদায় হ্রাস পেয়েছে এবং কোভিড -১৯-এর পরিস্থিতিতে তাদের অতিরিক্ত ব্যয়ের বোঝা বহন করতে হচ্ছে।

কেসি রাও লিখেছেন, রাজ্যগুলিকে জিএসটি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিশ্বাসভঙ্গ করছে কেন্দ্র।

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন লিখেছিলেন যে, ‘জিএসটি সংবিধানিকভাবে কার্যকর হওয়ার আগে চুক্তির হয়েছিল তার সঙ্গে বর্তমানে রাজ্যগুলিকে ঋণ দেওয়ার বিকল্প নীতি মেলে না।

মোটের ওপর এখন যা পরিস্থিতি তাঁর বিরোধী শক্তি কম-বেশি একজোট। এখন দেখার এতগুলি রাজ্যের কাছ থেকে চিঠি পেয়ে প্রধানমন্ত্রী কী পদক্ষেপ নেন।

সম্পর্কিত পোস্ট