বাবাকে খুন করা হয়, পরপর ‘তালাক’, যৌন ছবির পোকা পরীমণির জীবন যেন সিনেমা
টলিপাড়ায় গুঞ্জন 'কান টানলেই মাথা আসে'!
দ্য কোয়ারি ডেস্ক: ইয়াবার মতো মারাত্মক মাদক মজুত ও পাচার মামলায় জড়িয়ে জেলে গেলেন বাংলাদেশের প্রবল জনপ্রিয় নায়িকা পরীমণি। তিনি কলকাতার টলিপাড়ায় বিশেষ পরিচিত। তাঁর নামেই কোটি কোটি টাকার সিনেমা ব্যবসা চলছে দুই বাংলার সিনে পাড়ায়।
বাংলাদেশ তৈরির পর ঢালিউড দুনিয়ায় প্রথম কোনও রুপোলি নায়িকা হলেন পরীমণি যার মাদক মামলায় জেল হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে জেলের মেয়াদ হবে ৫ বছর। সেই অর্থে পরীমণিকে ঘিরে সিনে ব্যবসা বিপুল ধাক্কা খেতে চলেছে। ঢাকার পাশাপাশি কলকাতার টলিপাড়াতেও আলোড়ন পড়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, পরীমণির সঙ্গে টলিউডের বিশেষ সম্পর্ক। এর ফলে টলিপাড়ায় গুঞ্জন। কানাকানি চলছে, কান টানলেই মাথা আসে…!
পরীমণির ভালো নাম শামসুন্নাহার স্মৃতি। তাঁর জন্ম
১৯৯২ সালের ১৫ ডিসেম্বর। জীবনের মারাত্মক সব মোড় পার করেছেন আলোচিত নায়িকা। অগ্নিদগ্ধ হয়ে তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়।
মা মারা যাওয়ার সময় তিন বছর বয়স ছিল পরীমণির। তিনি মাসির কাছে বড় হন। তাঁর বাবা ছিলেন পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম। ২০১২ সালে তার চাকরি চলে গিয়েছিল। তখন তিনি গ্রামের বাড়িতে থেকে ব্যবসা করতেন। ব্যবসা সূত্রে তাকে কুপিয়ে খুন করা হয়।
পরীমণি ঢাকার সিনে দুনিয়ার রানি হন আরও পরে। একটার পর একটা বিয়ে ও বিচ্ছেদ যেন পরীমণির জীবনে নিয়ম হয়ে যায়। ২০১০ সালে আত্নীয়
ইসমাইল হোসেনকে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করেন। ২ বছর পর বিচ্ছেদ হয়। ২০১২ সালে বিয়ে করেন ফুটবলার ফেরদৌস কবীর সৌরভকে। সেই বিয়ে টেকেনি। ২০১৯ সালে সাংবাদিক তামিম হাসানের সাথে পরীমণি ফের বিয়ে হয়। আবার বিচ্ছেদ হয়। ২০২০ সালে তিনি পরিচালক কামরুজ্জামান রনিকে বিয়ে করেন। অন্যদিনেই সেই বিয়ে বিচ্ছেদ হয়।
কেন এতবার বিয়ে ? কেন পরীমণির বিকৃত যৌন ছবির প্রতি তীব্র আকর্ষণ? দুটি বিষয়কে নিয়ে তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। পরীমণির ঢাকার অভিজাত এলাকা বনানীর ফ্ল্যাটে অভিযানের সময় দুটি মারাত্মক মাদক ইয়াবা ও এলএসডি বিপুল পরিমাণে মিলেছে। সেইসঙ্গে মিলেছে বিকৃত যৌন ইচ্ছার জন্য সরঞ্জাম।
যদিও পরীমণির দাবি, সাজানো মামলায় তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। আদালতেও তিনি চিৎকার করে একই যুক্তি দেন। তবে সরকারপক্ষের দাবি, প্রভাবশালীদের সঙ্গে বিস্তর যোগাযোগ থাকায় পরীমণির জামিন হলে তদন্তে বাধা আসবে। সব শুনে ঢাকা মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক ধীমানচন্দ্র মণ্ডল পরীমণিকে জেলে রেখে তদন্ত চালানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ১৩ জুন পরীমণি আচমকা সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করেন তাঁকে ঢাকার উত্তরা বোটক্লাবে ধর্ষণ ও খুনের চেষ্টা করা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, এ ঘটনায় প্রভাবশালী রাজনীতিক নাসির উদ্দিন জড়িত। নাসির উদ্দিন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ও ব্যবসায়ী।
পরিমণির অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ নাসির উদ্দিন কে গ্রেফতার করে। পরে তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে মানহানির মামলা দায়ের করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন। তাৎপর্যপূর্ণ, ওই ব্যবসায়ী জামিন পাওয়ার পর পুরো মামলা মোড় নেয়। পরীমণির বিরুদ্ধে মাদক পাচারের অভিযোগে তাঁর ফ্ল্যাটে তল্লাশি হয়।
তল্লাশির সময় বিপুল পরিমাণ ইয়াবা মাদক সহ বেআইনিভাবে মজুত মদ, বৈদেশিক মূদ্রা, বিকৃত যৌনাচারের সামগ্রী বাজেয়াপ্ত ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঢাকা থেকে সেই আলোড়ন এসে পৌঁছায় কলকাতার টলিউড মহলে। কারণ, বাংলাদেশি পরীমণির সঙ্গে টলিউডের বিরাট সম্পর্ক। টলিপাড়ায় গুঞ্জন ছড়িয়েছে, পরীমণিরর বিরুদ্ধে যে যৌন ব্যবসা, ব্ল্যাকমেলিং ও মাদক পাচারের অভিযোগ রয়েছে তাতে টলিউডের কয়েকজন জড়িত।