লকডাউনে মায়ের হাতে শিশুর ল্যাকটোজেন প্রদান অতনুর,খাদ্য দ্রব্য বন্টন-দিন ৩
রাহুল গুপ্ত
আগেই বলেছিলেন জনসেবায় রাজনীতির কোনো প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন সৎ চিন্তার। বক্তা অতনু প্রসাদ মিত্র। দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূল যুব এর সাধারণ সম্পাদক। এদিন সকালে প্রতিদিনের মতোই শুরু হলেও শেষটা হলো একেবারে অন্যভাবে। চরম আনন্দের , তৃপ্তির।
লক ডাউন চলছে এই অবস্থায় পাওয়া যাচ্ছে না কোনো কিছুই। দরকার এই কঠিন সময়ে এক থাকার। সেই বিষয় টিকে মাথায় নিয়েই করোনার মোকাবিলায় পথে নেমে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা শুরু করে দিয়েছেন দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অতনু প্রাসাদ মিত্র ওরফে ডিউক।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় – সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঐকান্তিক ইচ্ছায় অতনু প্রসাদ মিত্র কলকাতা পুরসভার ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডে দুবেলা করে প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য সামগ্রী বন্টন করছেন। সকাল হতে না হতেই সাধারণ মানুষ হাজির ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের দেওধর স্ট্রিট এলাকায়। প্রয়োজনীয় কুপন দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে খাদ্য দ্ৰব্য সামগ্রী।
এদিন পেয়ারাবাগান সংলগ্ন ৪টি ক্লাবের হাতে তুলে দেওয়া হলো প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্য সামগ্রী। ক্লাব গুলি হলো দেশ বন্ধু ক্লাব , নিউ কিশোর সংঘ , জ্যোতিন বয়েস ক্লাব এবং মিত্র সংঘ ক্লাব। ঘরে ঘরে গিয়ে প্রদান করা হয় । খাদ্য দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে চাল , ডাল , আলু ও সোয়াবিন।
আরও পড়ুনঃ সেবায় প্রয়োজনীয়তা নেই রাজনীতির ,আসুন সবাই হাতে হাত ধরিঃ অতনু প্রসাদ মিত্র, খাদ্যদ্ৰব্য বন্টন -দিন ২
এদিনের সকালের খাদ্য দ্রব্য বন্টন প্রক্রিয়ায় থাকলেন তৃণমূল যুব নেত্রী ও আইনজীবী মৌমিতা গাঙ্গুলী, তৃণমূলের বহু দিনের সৈনিক রাজীব ( ভাগ্নে) , মানসী প্রমুখ।
মৌমিতা জানান ” রাজনীতি ভুলে এই প্রক্রিয়া চলছে। সাধারণ মানুষ কোন রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করেন সেই ভেবে এই কাজ হয় না। ”
অন্যদিকে অপর এক যুব নেত্রী মানসী বললেন ‘ সকাল থেকেই মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে যেন নিজে আরও বেশি করে রিফ্রেশ হচ্ছি ” .
দেওধর স্ট্রিট এলাকায় রাস্তার ধরে ফুটপাথে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রেখেই দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষকে নির্দিষ্ট কুপনের বিনিময়ে খাদ্য দ্রব্য সামগ্রী বন্টন শুরু হয়।
অন্যদিকে সন্ধে বেলায় চারটি ক্লাবে খাদ্য দ্রব্য সামগ্রী বন্টনের পর যুব নেতা ভরত জানা ও দক্ষিণ কলকাতা তৃণমূল যুব এর সাধারণ সম্পাদক অতনু প্রসাদ মিত্র বক্তব্য রাখেন। বারবার সতর্ক করা হয় এলাকার বাসিন্দাদের। বাইরে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া না বেরোনোর পরামর্শ দেওয়া হয়।
সারাদিনের ব্যস্ততার পর পেয়ারাবাগান অঞ্চলে এক ২ বছরের সন্তানের মা এর হাতে ল্যাকটোজেন তুলে দেন অতনু। হঠাৎ জনৈক ওই মহিলা এসে তার পরিচয় দেন। কোথায় থাকেন তাও বলেন। ওই মহিলা জানান তার দু বছরের সন্তানের জন্য ল্যাকটোজেন কিনে দেওয়ার মতো অর্থ নেই তার কাছে ।
এই কথা শোনার পর পরই অতনু ওরফে ডিউক নিজেই ওই মহিলার হাতে ল্যাকটোজেন কিনে দেন। তখন ওই মহিলার চোখে জল।
অতনু জানান – ” আপনি কোন অঞ্চলে থাকেন , আপনার ঠিকানা কি এই সব আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয় ,. আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ওই সন্তানের প্রয়োজনীয় খাবারটা। ” ভরত জানা বলেন ” জীবনে সব থেকে পরম তৃপ্তির কাজ করলাম “. আগামী দিনে কোনো অসুবিধা হলে পাশে থাকার আশ্বাসও দেওয়া হয়। ”
দিনের শেষে এক শিশুর খাবারের জোগাড় যেন ভগবানের অন্ন জোগাড় করার মতোই ” প্রতিক্রিয়া অতনু প্রাসাদ মিত্রের।
এই ভাবেই সারাদিনের ক্লান্তির মধ্যেই যেন সুস্থ বাতাস পাওয়া গেলো দিনের শেষে।
সবাইকেই একটা অনুরোধ করোনা মোকাবিলায় এই কঠিন সময়ে আসুন রাজনৈতিক লড়াই ভুলে একে অপরের পশে দাঁড়িয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়ি। ভালো থাকুন – সুস্থ থাকুন। করোনাকে হারিয়ে মানব সভ্যতাকে জিততেই হবে।