‘অপারেশন লোটাস’ এর কেরামতিতে পঞ্চপ্রাপ্তির পথে গণতন্ত্র, এবার দিল্লির ঘাটে ভিড়বে পদ্ম?
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ মোদি জামানার অষ্টম বর্ষ চলছে। এই আট বছরে বিজেপি ‘অপারেশন লোটাস’ নামে এক দুর্ভেদ্য অস্ত্র তৈরি করে ফেলেছে। এ এমনই এক অস্ত্র, কোনও রাজ্যে বিরোধীদের সরকার দেখলেই তা তীব্র গতিতে ছুটে যায়। এর সাফল্যের হার কৃষ্ণের সুদর্শন চক্রের সাফল্যের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে!
এই সময়কালের মধ্যে মনিপুর, গোয়া, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, মহারাষ্ট্র, জম্মু ও কাশ্মীর, পুদুচেরি, কর্ণাটক একের পর এক রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিরোধীদের সরকার ফেলে দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি।
অথবা নির্বাচনের পর তাদের বিরুদ্ধে জনমত যাওয়া সত্ত্বেও বিরোধী শিবিরে ভাঙন ধরিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে তারা। এক্ষেত্রে, ইবি ও সিবিআই তাদের অন্যতম হাতিয়ার বলে বিরোধীরা দীর্ঘদিন অভিযোগ করে আসছে।
এখনও দু’মাস হয়নি মহারাষ্ট্রে পরিষ্কার সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা শিবসেনা, এনসিপি ও কংগ্রেসের মহাজোট সরকার এই পদ্ধতি অনুসরণ করে ফেলে দিয়েছে বিজেপি। কার্যত বালাসাহেব ঠাকরে প্রতিষ্ঠিত শিবসেনা হাইজ্যাক করে নিয়েছে তারা। এবার তাদের লক্ষ্য দিল্লি ও ঝাড়খণ্ড! অন্তত এই দুই রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের দাবি তাই।
বৃহস্পতিবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল আপের পরিষদীয় দলের বৈঠক ডেকেছিলেন সরকারি বাসভবনে। সেখানে ৯ জন বিধায়ক অনুপস্থিত ছিলেন। ৭০ আসনের দিল্লি বিধানসভার ৬২ জন আপ বিধায়ক আছে। তার মধ্যে ৯ জন বিধায়ক অনুপস্থিত থাকার পাশাপাশি দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্রনাথ জৈনকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি।
ময়দানে নেমেই আপকে নিশানা, গুজরাটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা কংগ্রেসের
ফলে এই মুহূর্তে আপের হাতে ৫২ জন বিধায়ক থাকার কথা। তবুও এই পরিস্থিতিতে ঝুঁকি না নিয়ে সোমবারই বিধানসভার বিশেষ অধিবেশন ডেকে আস্থা প্রমাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সংখ্যা তত্ত্ব বলছে আপ সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
তবে দুর্নীতি বিরোধী ভাবমূর্তি নিয়ে যে আপের প্রতিটি বিধায়ক সর্বদা গর্ব করেন, তাঁদের মধ্য থেকেই হঠাৎ করে ৯ জন উধাও হয়ে যাওয়ায় আশঙ্কার চোরা স্রোত বইছে আম আদমি পার্টির পরিষদীয় দলে। কেজরিওয়াল নিজে অভিযোগ করেছেন, বিধায়ক পিছু ২০ কোটি টাকা দর দিয়ে দিল্লির সরকার ফেলতে মোট ৮০০ কোটি টাকা নিয়ে ময়দানে নেমেছে বিজেপি।
এদিকে লাভজনক পদে থাকা ইস্যুতে সদ্য বিধায়ক পদ খারিজ হয়েছে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের। এমনিতেই এই রাজ্যে জেএমএম ও কংগ্রেসের জোট সরকার ভাঙতে বিজেপি আগে থেকেই সক্রিয় বলে অভিযোগ।
এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের জোট ভেঙে বেরিয়ে আসার জন্য ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চাকে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সবমিলিয়ে, বিজেপির ‘অপারেশন লোটাস’ বাণ ফের ছুটতে শুরু করেছে।