অন্যরা ভরসার মর্যাদা দেননি, পঞ্চায়েত ভোটের আগে হাল ধরলেন মমতা-অভিষেক
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বাম জামানার অবসান ঘটিয়ে সরকার গড়ার পর দলের যাবতীয় বিষয় দেখভালের দায়িত্ব মুকুল রায়ের হাতে তুলে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তিনি সেই বিশ্বাসের মর্যাদা না দিয়ে একসময় বিজেপিতে গিয়ে তৃণমূলকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে পড়েন।
মুকুল আবার তৃণমূলে ফিরে এসেছেন, সে অন্য বিষয়। এর পরবর্তী পর্যায়ে শুভেন্দু অধিকারীর হাতে একঝাঁক গুরুত্বপূর্ণ জেলার দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু তিনিও হাত ছেড়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তারপর দলের বাকি অভিজ্ঞ নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এসএসসি কেলেঙ্কারি অস্বস্তিতে ফেলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে। এই ঘটনার আঁচ তৃণমূলের গায়ে এসেও লেগেছে।
এদিকে আগামী বছর রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হওয়ার কথা। এই ভোটকে ২৪ এর লোকসভার আগে সেমিফাইনাল হিসেবে ব্যাখ্যা করছে রাজনৈতিক মহল। কিন্তু জেলায় জেলায় সরকারের বিভিন্ন দফতরের কাজ নিয়ে অভিযোগ কম নেই। নিচুতলার তৃণমূল নেতাকর্মীদের একাংশের আচার আচরণ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এর প্রভাব পঞ্চায়েত ভোটে পড়ার আশঙ্কা আছে। তাই পরিস্থিতি সামলাতে এক বছর আগেই হাল ধরতে এগিয়ে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভোট আটকাতে গুরুংয়ের অনশন ব্যর্থ, সরকারের কৌশলে মোর্চার পাশে নেই পাহাড়ের কেউ
মমতার সাম্প্রতিক প্রশাসনিক বৈঠকগুলির দিকে তাকালে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে। জেলায় জেলায় প্রশাসনিক গতিমন্থরতার জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ থমকে থাকা, ভূমি-রাজস্ব, শিল্প, খাদ্য সরবরাহ দফতরের জেলাস্তরে দুর্নীতি এগুলি আটকানোর দায়িত্ব পুরোপুরি নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরুলিয়ায় পর বাঁকুড়ার প্রসাশনিক বৈঠকেও মমতার কড়া মেজাজ দেখে সেটা স্পষ্ট।
পুলিশ যাতে নিরপেক্ষ দৃষ্টি রেখে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নয় সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করছেন মমতা। এদিকে দলের ব্লক বা অঞ্চল সভাপতি যদি অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন, মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন তবে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কাজটি করছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হলেও তিনি এই মুহূর্তে বাংলা সংগঠনের একেবারে তৃণমূল স্তর পর্যন্ত নিজের হাতেই সবকিছু সামলাচ্ছেন। কারণ বাকিদের উপর নির্ভর করলেই সেই ‘ঘুঘুর বাসা’ তৈরির ঘটনা ঘটতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীরাও অনেকটা স্বতি বোধ করছেন। কারণ তাঁদের বিশ্বাস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরা যা করবেন সেটা ভালোর জন্যই হবে।