বিজেপিকে শূন্য করা বিজয়ন হচ্ছেন মমতার গলার কাঁটা

দ্য কোয়ারি ডেস্ক: কলকাতা থেকে তিরুঅনন্তপুরমের আকাশ পাতাল দূরত্ব। এই দূরত্ব কি তৃণমূল নেত্রীর পক্ষে পার হএয়া সম্ভব? তৃণমূল ও সিপিআইএম দুই যুযুধান শিবিরের দুই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ও বিজয়নের আগামী পদক্ষেপ আলোচিত বিষয় হতে চলেছে।

কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে বিজেপির যে কোনও নীতি ও পদক্ষেপের সর্বাধিক বিরোধিতাকারী নেতা কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনরাই বিজয়ন। তাঁর নেত্রী কেরলের এলডিএফ সরকার সরাসরি ভোটে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে শূন্য করে দিয়েছে। আর পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি হয়ে গিয়েছে প্রধান বিরোধী দল। যদিও এ রাজ্যে বামেরা শূন্য।

গত নির্বাচনে বিজেপি স্পষ্টই বুঝেছিল কেরল দখল তো দূরের কথা একটি আসন জিতলেও সেটা হবে বিরাট পাওনা। ফলে মোদী কেরলের দিকে ঘুরেও তাকাননি। তাঁর লক্ষ্য ছিল পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতা। প্রবল শক্তি নিয়ে পুরো বিজেপি ঝাঁপ মেরেছিল বাংলায়। সরকার গড়তে না পারার ক্ষেদ বিরোধী দলের তকমা দিয়ে ঢাকতে হয়েছে মোদীকে।

২১ জুলাই যে বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাতে স্পষ্ট তিনি সর্বভারতীয় বিজেপি বিরোধী শিবিরকে নেতৃত্ব দিতে চান। দিল্লির রাজনৈতিক পর্যালোচনায় এখান থেকেই উঠে আসছে মমতার পরবর্তী ভূমিকা।একইভাবে মোদী ও বিজেপিকে শূন্য পাইয়ে দেওয়া সিপিআইএমের নয়নের মণি পিনরাই বিজয়নের সরকারও প্রবল আলোচিত।

রাজনৈতিক মহলের আলোচনা, মমতা যতটা মোদী বিরোধী ততটা বিজেপি বিরোধী নন। এও উঠে আসছে বিজেপির শিরদাঁড়া আরএসএসের কাছেও মমতার জন্য নরম মনোভাবের বিষয়। পশ্চিমবঙ্গে টানা সাড়ে তিন দশকের বামফ্রন্ট শাসনের অবসানকারী নেত্রী হিসেবে মমতা আগে থেকেই সংঘ পরিবারের কাছে ‘দুর্গা’। মমতার সরকারের আমলেই পশ্চিমবঙ্গে আরএসএস সর্বাধিক শাখা বিস্তার ঘটিয়েছে।

ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সামনে সমর্থকদের বিক্ষোভে, গ্রেফতার ৭-৮ জন

ঠিক উল্টো অবস্থা কেরলে। সেখানকার এলডিএফ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন শীর্ষ সিপিআইএম নেতা। আর নীতিগতভাবে সিপিআইএম, সিপিআই সহ বাম দলগুলি সরাসরি বিজেপি ও সংঘ বিরোধী। বামেদের রাজনৈতিক অবস্থানে ব্যক্তি মোদী নন বরং সংঘের নীতি চরম পরিত্যাজ্য।

অভিযোগ, কেরলে আরএসএস খোদ বিজয়নের নিজের জেলা কান্নুরে আগ্রাসী ভূমিকা নিয়েছে শাখা বিস্তারে। আর সিপিআইএম পাল্টা আগ্রাসী অবস্থান নিয়ে রেখেছে। সংঘর্ষে দু তরফের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। সর্বশেষ নির্বাচনে বিজেপিকে শূন্য হাতে ফিরিয়ে দেশে একমাত্র বামপন্থী সরকারের প্রদীপ জ্বালিয়ে রেখেছেন বিজয়ন।

তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, মোদী বিরোধী মুখ হিসেবে মমতা একমাত্র সর্বজনগ্রাহ্য। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতামত, বিজেপি কে শূন্য করে দেওয়া বিজয়নই বা কম কোথায়। বিশেষ করে তাঁর সরকার করোনাভাইরাস প্রতিরোধে যে ভূমিকা পালন করেছে তার জন্য বিশ্ব জুড়ে হয়েছে আলোচনা।

সম্পর্কিত পোস্ট