“বিজেপির চুনোপুটি ক্যাডারদেরও নিরাপত্তারক্ষী দেন, যখন ডিভিসি জল ছেড়ে দেয়, বাংলা ডুবে যায়, একটাও পয়সা পাঠান না কেন?” বিস্ফোরক মমতা
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ডিভিসির ছাড়া জলে রাজ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বানভাসি হওয়ায় এবার ওই সংস্থার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শনিবার আকাশপথে রাজ্যের বন্যা কবলিত আরামবাগ এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শনের পর নবান্নে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরেই এ পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার তথা ডিভিসি কে দায়ী করে ক্ষতিপূরণের দাবি করেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর জানান ডিভিসির ছাড়া জলে রাজ্যের আটটি জেলা প্লাবিত হয়ে ১ লক্ষ বাড়ি নষ্ট হয়েছে। ৪ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।৫ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পুজোর আগে এইভাবে মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বলেন,”৩০ তারিখের পর ডিভিসি সাড়ে ১০ লক্ষ কিউসেকেরও বেশি জল ছেড়েছে।যে ভাবে জল ছাড়া হয়েছে, এটাই বড় অপরাধ।ডিভিসির ছাড়া জলেই এই বন্যা হয়েছে।এটা ম্যান মেড বন্যাই শুধু নয়, এটা ম্যান মেড ক্রাইম।”
এবছর অতিবৃষ্টির কারণে বিভিন্ন জায়গায় জল জমার যে সমস্যা হয়েছিল রাজ্য সরকার তা সফলভাবে মোকাবিলা করেছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। বর্তমান দুরবস্থার কারণ হিসাবে তিনি দায়ী করেছেন রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা না করে ঝাড়খন্ড সরকার এবং ডিভিসি বিভিন্ন জলাধার থেকে জল ছাড়াকে।
অতিমারি আবহে ভার্চুয়াল মাধ্যমেই পুজো উদ্বোধনে জোর মমতার
তিনি বলেন “আমরা সাড়ে তিন লক্ষ্য পুকুর কেটেছে। চেক ড্যাম তৈরি করেছে। তাই বর্ষার জলে আমরা ভাসিনি। কিন্তু ডিভিসি বছরে চারবার করে জল ছারলে কি করা যাবে?”
এই বিষয় নিয়ে এবার প্রধানমন্ত্রীকে কড়া চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি ডিভিসি র কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ চাওয়ার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এর আগে ফনি আম্ফান বুলবুলের সময় বারবার চিঠি লিখো কেন্দ্রের কাছ থেকে কোনো ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়নি বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে আগেও অনেক চিঠি লিখেছি। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে মন্ত্রীরাও গিয়ে বলে এসেছেন। আবার চিঠি লিখব প্রধানমন্ত্রীকে। অনুরোধ করবো অনুগ্রহ করে ব্যবস্থা নিন। মুখ্য সচিবকে বলেছি জলশক্তি মন্ত্রী এবং ক্যাবিনেট সচিব কে এব্যাপারে চিঠি লিখতে। ঝাড়খন্ড সরকারকে বলব দয়া করে বাঁধগুলো সংস্কার করুন। বাংলা নদীমাতৃক দেশ। বারবার এমন ভাবে এখানকার মানুষকে বিপদে ফেলবেন না।”
পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে তীব্র কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,”স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলব, আপনি একটা ভোট হলে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠান, আমাদের নেতাদের ডেকে চমকান, বিজেপির চুনোপুটি ক্যাডারদেরও ৫০ জনকে নিরাপত্তারক্ষী দেন, আর যখন ডিভিসি জল ছেড়ে দেয়, বাংলা ডুবে যায় তখন একটাও পয়সা পাঠান না কেন? ”
মুখ্যমন্ত্রী বলেন সাধারণ মানুষকে কষ্টের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রশাসন ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে।২৪ ঘণ্টা মনিটারিং চলবে। যারা উৎসবের মরসুমে কাজ করবেন, তাদের ছুটি অ্যাডজাস্ট করে দেওয়া হবে।বৈঠকে মুখ্য সচিব স্বরাষ্ট্র সচিব ছাড়াও বিপর্যয় মোকাবিলা সচিব দুষ্মন্ত নারী ওয়াল রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক মনোজ মালব্য , বানভাসি আট জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপাররা উপস্থিত ছিলেন।