দিদি কেষ্টর পাশে, বিরোধীরা রাস্তায়, আমজনতা যাবে কোথায় ?
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ অনুব্রত মণ্ডল ও পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে এক নয়, তাঁদের গুরুত্ব যে আলাদা তা পরিষ্কার করে দিয়েছে তৃণমূল। স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে বলেছেন অনুব্রত কি দোষ করেছিল? এসবই যে তৃণমূলকে বাগে আনতে কেন্দ্রীয় এজেন্সি ব্যবহার করে বিজেপির কলকাঠি তাও বুঝিয়ে দিয়েছে বাংলার শাসক দল। বিরোধীরা ইতিমধ্যেই পার্থ চোর, অনুব্রত চোর সহ একাধিক বিতর্কিত স্লোগান নিয়ে ময়দানে নেমে পড়েছে।
বিজেপি ও সিপিএম উভয়েরই অভিযোগ দল বাঁচাতে বাধ্য হয়ে কেষ্ট মণ্ডলের পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। না হলে রাজ্য সরকার পড়ে যেতে পারে এমনটাই দাবি গেরুয়া শিবিরের। বিরোধীদের অভিযোগের মূল নির্যাস হল, তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের অনেক গোপন খবর জানেন অনুব্রত।
যা পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরও অজানা ছিল। তাঁর পাশে না দাঁড়ালে সেই সমস্ত গোপনকথা সিবিআইয়ের কাছে তিনি ফাঁস করে দেবেন এই আশঙ্কাতেই খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুব্রতর গ্রেফতারি নিয়ে সুর চড়াতে বাধ্য হয়েছেন।
অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে গরু পাচার কাণ্ডে জড়িত থাকার যে অভিযোগ উঠেছে, সেই সংক্রান্ত টাকারভাগ কলকাতায় এসে পৌঁছতো বলেও বিরোধীদের অভিযোগ। এই নিয়ে তারা ইতিমধ্যেই কলকাতার পাশাপাশি জেলায় জেলায় মিছিল, আন্দোলন করছে।
বেশ কিছু জায়গায় রাজনৈতিক উত্তাপ চড়ার খবরও পাওয়া গিয়েছে। শাসক-বিরোধী সংঘর্ষও হচ্ছে। শুভেন্দু অধিকারীর মতো আর্থিক দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কেন একই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পাল্টা রাস্তায় নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
রাত পোহালেই স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি, রেড রোডে কড়া নিরাপত্তা
সবমিলিয়ে দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের একের পর এক হেভিওয়েট রাজনীতিবিদের গ্রেফতারের পর লাভ-ক্ষতির হিসেব কষে সব পক্ষই ময়দানে নেমে পড়েছে। কিন্তু এসএসসি কেলেঙ্কারির জন্য বঞ্চিত ছেলেমেয়েরা এখনও চাকরির নিয়োগপত্র পাননি। গরু পাচার হয়েছে এ সত্যি। তাতে অনুব্রত মণ্ডল কতটা জড়িত বা আদৌ জড়িত কিনা সে বিচার সাপেক্ষ বিষয়।
কিন্তু এই গরু পাচারের ফলে রাজ্যের অর্থনীতিতে যে বিপর্যয় নেমেছে তা পূরণ হওয়ার কোন আসু সমাধান দেখা যাচ্ছে না। উল্টে গরুর দুধে লিটার পিছু আরও ২ টাকা করে দাম বেড়ে গিয়েছে। ফলে বাড়ির সন্তানের মুখে দুধটুকু যোগান দিতে হিমশিম অবস্থা মা-বাবাদের।
এই বহু কোটির কেলেঙ্কারিগুলিতে যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাঁরা আদৌ ক্ষতিপূরণ পাবেন তো? সেই সারদা কেলেঙ্কারির কথা মনে পড়ছে। তারপর কত তদন্ত কমিশন বসল, কত কত এজেন্সি তদন্ত শুরু করল। হোমড়া চামড়া অনেকে গ্রেফতারও হলেন। কিন্তু আমজনতার কী হল? যারা সব হারিয়ে পথে বসলেন, তাঁদের দিকে দেখল না কেউ।
শুধু এই ইস্যুকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে কেউ লাভবান হল, কেউ আবার হেরে গেল। চিটফান্ড কেলেঙ্কারির সেই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা রাজ্যবাসী আজও ভোলেনি। এবারেও তার পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।