“ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে তাণ্ডব চালাবেন না”, হুঁশিয়ারী মমতার
বাম-কংগ্রেসের ডাকা বনধ্ তিনি যে কোনোভাবেই সফল হতে দেবেন না তা আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন সকাল থেকে বাম-কংগ্রেসের বনধ্- এ অশান্তির খবর কানে যেতেই বামেদের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী।
দ্য কোয়ারি ডেস্কঃ ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন বাংলার বুকে আর কোনো বনধ্ তিনি হতে দেবেন না। যেমন কথা তেমনস কাজ। ৯ বছর পরেও নিজের ঘোষণা থেকে একচুলও নড়লেন না তিনি।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি), জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার (এনপিআর) সহ একগুচ্ছ দাবিতে সারা দেশ ব্যাপী ৮ জানুয়ারী ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বাম-কংগ্রেস।
এদিন সকাল থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছাড়া মোটের উপর স্বাভাবিকই ছিল পরিস্থিতি। তথ্য প্রযুক্তি হাব, সল্টলেক সেক্টর ফাইভে কর্মীদের উপস্থিতি ছিল অন্যান্য দিনের মতই।
কলকাতা বিমানবন্দরেও বনধ এর ছায়া পড়েনি। বর্ধমানে অশান্তি হয়েছে বনধ কর্মসূচি ঘিরে। মালদার রথবাড়িতে বাসের কাঁচ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুনঃ ঐশী ঘোষের নামে মামলা দায়ের, নতুন করে শুরু জল্পনা
জায়গায় জায়গায় বনধ ঘিরে অশান্তির ছবি ধরা পড়লেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রমশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।
নবান্ন থেকে শুরু অন্যান্য সরকারী অফিসে কর্মীদের উপস্থিতি ছিল রোজের মতই।কোথাও আবার কর্মীদের যাতে কোনো রকম অসুবিধা না হয়, তাই অফিসেই খিচুড়ি ও ডিমের কারি খাওয়ানো হয়।
বাম-কংগ্রেসের ডাকা বনধ্ তিনি যে কোনোভাবেই সফল হতে দেবেন না তা আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন সকাল থেকে বাম-কংগ্রেসের বনধ্- এ অশান্তির খবর কানে যেতেই বামেদের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী।
স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন বনধ কোনোভাবেই প্রতিবাদের মাধ্যম হতে পারে না। তিনি বাম-কংগ্রেসের বনধের ইস্যুকে সমর্থন করলেও কোনোভাবেই বনধ্ কর্মসূচী সমর্থন করেন না বলে আগেই নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন।
এদিন তিনি তোপ দেগে বলেন,“ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে বনধ-অবরোধের নামে তাণ্ডব চালাবেন না। আজ এমনিই সাধারণ মানুষের রোজগার কমে গিয়েছে। বন্ধ করলে সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। সেটা বোঝা উচিত। প্রতি বছর তিন চারটে বন্ধ ডাকছে, অথচ প্রতিটাই ব্যর্থ হচ্ছে। আমি জানি না, কেন এরা বন্ধ ডাকে। সস্তায় জনপ্রিয়তা পাওয়ার চেষ্টা করছে। এই জনপ্রিয়তা বা প্রচার পাওয়ার চেয়ে রাজনৈতিক মৃত্যু হওয়া ভাল। ৩৪ বছরে একে তো কিছু করেনি, তার উপর যা তৈরি করছি, গুন্ডামি করে ভেঙে দিচ্ছে। উন্নয়নকে চোখে সহ্য করতে পারছে না।”
আরও পড়ুনঃ গোটা দেশের মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এনআরসিঃশ্রীকান্ত মাহাতো
প্রসঙ্গত, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি), জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার (এনপিআর)এর বিরুদ্ধে প্রথম দিন থেকেই প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আন্দোলনের দেখে প্রতিবাদে শামিল হয় অন্যান্য বেশ কয়েকটি রাজ্য।
আগামী দিনেও কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে তাঁর আন্দোলন চলবে বলেই আজও হুঁশিয়ারী দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।